জেলের মধ্যেও এসি, টিভি পাবেন নওয়াজ় শরিফ। —ফাইল চিত্র
জেলে ওঁরা এসি পাবেন, টিভি, খবরের কাগজও। পাকিস্তানে ‘এ’ এবং ‘বি’ ক্যাটেগরির বন্দিরা নিজেদের খরচে পেতে পারেন এমনই কিছু সুযোগ-সুবিধে। গত কাল লন্ডন থেকে ফিরেই গ্রেফতার হওয়া নওয়াজ় শরিফ এবং মরিয়ম নওয়াজ়কে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে রাখা হয়েছে ‘বি’ ক্যাটেগরির বন্দি হিসেবে। যথাযথ সুবিধে তাঁরা পাচ্ছেন বলে পাক মিডিয়া জানিয়েছে।
টাকা দিয়ে পাওয়া পরিষেবা ছাড়াও শরিফদের সেলে থাকবে খাট, চেয়ার, চায়ের পট, প্রসাধন সামগ্রী, লোডশেডিংয়ে লণ্ঠনও। তবে আদিয়ালা জেলেই তাঁদের পাকাপাকি রাখা হবে কি না, স্পষ্ট নয়। একটি সরকারি রেস্ট হাউসকে ‘সাব-জেল’ ঘোষণা করে সেখানেও সরানো হতে পারে তাঁদের। কাল প্রথমে ঠিক ছিল, লাহৌর থেকে বিশেষ বিমানে ইসলামাবাদ, সেখান থেকে হেলিকপ্টারে জেলে নিয়ে যাওয়া হবে তাঁদের। শেষ পর্যন্ত সাঁজোয়া গাড়িতে জেলে পৌঁছন তাঁরা।
পানামা নথির সূত্রে শরিফদের বিরুদ্ধে লন্ডনের পার্ক লেনে বেআইনি ভাবে চারটি ফ্ল্যাট কেনার অভিযোগ ওঠে। সেই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে নওয়াজ়কে দশ এবং মরিয়মকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে বিশেষ আদালত। মামলায় জড়িয়েছেন পিএমএল(এন) প্রধান শাহবাজ় শরিফ, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খকন আব্বাসি-সহ দলের অন্তত ১৫০০ নেতা-কর্মীও। গত কাল পঞ্জাব প্রদেশের বিভিন্ন প্রান্তে পুলিশ ও রেঞ্জার্স বাহিনীর সঙ্গে পিএমএল(এন) সমর্থকদের খণ্ডযুদ্ধ বাধে। ২০ জন পুলিশ-সহ অন্তত ৫০ জন আহত হন। তার পরেই সন্ত্রাসদমন আইন, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট-সহ বিভিন্ন ধারায় অভিযুক্ত করা হয় ওই ১৫০০ জনকে। শাহবাজ়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ ১৪৪ ধারা লঙ্ঘনের। গত কাল নওয়াজ়-মরিয়মকে স্বাগত জানাতে লাহৌর বিমানবন্দরের দিকে এগোচ্ছিল শাহবাজ়ের মিছিল। বিমানবন্দরের কিলোমিটার পাঁচেক আগেই বাধে সংঘর্ষ। পিএমএল(এন)-এর অভিযোগ, তাদের নেতাদের ভোটে লড়া বন্ধ করতে চাইছে প্রশাসন।
পাকিস্তানের যে ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (ন্যাব)-এর তদন্তে জেলে যেতে হল শরিফকে, তারাই এ বার নোটিস পাঠিয়েছে তেহরিক-ই-ইনসাফ প্রধান ইমরান খানকে। অভিযোগ, খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে নিজের দলের সরকার থাকার সুযোগ নিয়ে বহু বার সরকারি হেলিকপ্টার ব্যবহার করেছেন তিনি। গত সাড়ে চার বছরে তাতে শুধু জ্বালানি খরচই লেগেছে ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। সরকারের যুক্তি, প্রত্যেক উড়ানেই ইমরানের সঙ্গে ছিলেন একাধিক মন্ত্রী।
অসামরিক সরকারকে নড়বড়ে করে রাখতে ন্যাব-এর আড়ালে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই কলকাঠি নাড়ে বলে অভিযোগ বহু দিনের। বিশেষজ্ঞদের মতে, শাস্তির ভয়ে রাজনৈতিক নেতারা বিদেশে থাকলে যে তাঁদের দলগুলি ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে, তা ভালই জানে পাক সেনা। এবং সেনাকে সেই ফায়দাটা তুলতে দিতে চান না বলেই রাজনৈতিক জীবন বাজি রেখে দেশে ফিরেছেন শরিফ। তাঁর শহিদ হওয়ার চাল যে কাজে দিয়েছে, পঞ্জাব জুড়ে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষই তার প্রমাণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy