উদ্ধারকাজ: বিপর্যয় মোকাবিলায় দমকল। ছবি: রয়টার্স
কাঠমান্ডু থেকে তখনও মিনিট পনেরো দূরে ছিলেন পাইলট। কলকাতা বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) তত ক্ষণ পর্যন্ত নজরে রাখছিল তাঁর বিমানের গতিবিধি। এ বার ছাড়ার পালা।
সোমবার দুপুর তখন প্রায় পৌনে তিনটে। কলকাতায় বসে কন্ট্রোলার রুটিন মাফিকই বলেন, ‘‘কনট্যাক্ট কাঠমান্ডু কন্ট্রোল।’’ ২৪ হাজার ফুট ওপর থেকে ভেসে আসে অভিশপ্ত বিমানের ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতানের কণ্ঠ, ‘‘ওকে। গুড বাই।’’
ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বম্বার্ডিয়ার ড্যাশ-৮ কিউ-৪০০ বিমান থেকে কলকাতায় আসা শেষ বার্তা সেটাই। তবে আবিদ বেঁচে গিয়েছেন বলেই বিমান সংস্থা জানাচ্ছে।
সাধারণত বাংলাদেশের দিক থেকে যে সব বিমান ভারতের আকাশে ঢোকে, তাদের ‘হাতবদল’ হয় রাজশাহির সীমান্ত পেরিয়ে। হাতবদল অর্থে, তার আগে বিমানগুলি থাকে ঢাকা এটিসি-র আওতায়। রাজশাহি পেরোলেই ঢাকা এটিসি বিমানের দায়িত্ব তুলে দেয় কলকাতা এটিসি-র হাতে। যেমন সোমবার দুপুরে এই বিমানের দায়িত্ব কলকাতা এটিসি তুলে দেয় কাঠমান্ডু এটিসি-র হাতে।
আরও পড়ুন: মাটি ছুঁয়েই আগুনের গ্রাসে ঢাকার বিমান, মৃত অন্তত ৫০
কলকাতার এটিসি-র জেনারেল ম্যানেজার বরুণকুমার সরকার জানিয়েছেন, সোমবার দুপুর ২টো ২০ মিনিট নাগাদ ইউএস বাংলার বিমানটি রাজশাহি ছাড়িয়ে ভারতের আকাশে ঢোকে। পাইলটের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয় কলকাতার কন্ট্রোলারের। কাঠমান্ডু যাওয়ার জন্য ছাড়া হয় নেপাল সীমান্তে জনকপুরের একটু আগে। সেখান থেকে কাঠমান্ডুর আকাশ-দূরত্ব প্রায় ১৪০ কিলোমিটার। এর মাঝে পাইলটের সঙ্গে কলকাতা এটিসি-র কন্ট্রোলারের কথা হয়েছে বার তিনেক। বরুণবাবুর কথায়, ‘‘সাধারণ আর দশটা বিমানের ক্ষেত্রে যেমন কথা হয়, এর ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। কিছু দূর গিয়ে গিয়ে বিমান নিজের অবস্থান জানায়। এই বিমানও তা জানিয়ে গিয়েছে।’’
প্রায় ২৫ মিনিট ভারতের আকাশে ওড়ার পরে ‘গুড বাই’ বলে পৌনে তিনটে নাগাদ ২৪ হাজার ফুট উপর দিয়ে পাইলট ঢুকে যান কাঠমান্ডু এটিসি-র আওতায়। তার একটু পরেই বিপর্যয়। ঘটনার পরেই বন্ধ করে দেওয়া হয় কাঠমান্ডু বিমানবন্দর। ‘নোটাম’ (নেটিস টু এয়ারমেন) জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়, আপাতত বন্ধ থাকবে বিমান ওঠা-নামা।
তত ক্ষণে কলকাতা থেকে যাত্রী নিয়ে কাঠমান্ডু রওনা হয়ে গিয়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। দুপুর সওয়া দু’টোয় উড়ে সেটি মাঝ আকাশে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কলকাতায় ফিরে আসে সাড়ে তিনটে নাগাদ। দোহা থেকে কাঠমান্ডুগামী কাতার এয়ারওয়েজের বিমানও মাঝ আকাশে নোটাম পেয়ে পৌনে চারটে নাগাদ কলকাতায় এসে নামে। কাঠমান্ডুতে আবার বিমান ওঠা-নামা চালু না হওয়া পর্যন্ত কলকাতাতেই আটকে থাকে তারা। সন্ধে ৬টার পরে বিমান দু’টি কলকাতা ছাড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy