Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

প্লুটো-র বুকে পাহাড়, উপত্যকা নাকি খাদ?

ন’বছরের প্রতীক্ষা শেষ। মানুষের তৈরি মহাকাশযান (নিউ হরাইজনস) অবশেষে পৌঁছল প্লুটো-র আকাশে। পৃথিবী থেকে পাঠানো যন্ত্র জরিপ করতে শুরু করল সৌরমণ্ডলের শেষ সদস্যকেও। মঙ্গলবার সন্ধ্যাবেলায় ঘণ্টায় ৪৫,০০০ কিলোমিটার বেগে ধাবমান নিউ হরাইজনস উড়ে গেল প্লুটো থেকে ১২,৫০০ কিলোমিটার দূর দিয়ে। যেতে যেতে প্লুটোর ছবিও সমানে পাঠিয়ে গেল ওই যান। স্বভাবতই উল্লসিত মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র বিজ্ঞানীরা।

নিউ হরাইজনস-এর চোখে প্লুটো। ছবি: নাসা।

নিউ হরাইজনস-এর চোখে প্লুটো। ছবি: নাসা।

পথিক গুহ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৫ ০২:৫৬
Share: Save:

ন’বছরের প্রতীক্ষা শেষ। মানুষের তৈরি মহাকাশযান (নিউ হরাইজনস) অবশেষে পৌঁছল প্লুটো-র আকাশে। পৃথিবী থেকে পাঠানো যন্ত্র জরিপ করতে শুরু করল সৌরমণ্ডলের শেষ সদস্যকেও। মঙ্গলবার সন্ধ্যাবেলায় ঘণ্টায় ৪৫,০০০ কিলোমিটার বেগে ধাবমান নিউ হরাইজনস উড়ে গেল প্লুটো থেকে ১২,৫০০ কিলোমিটার দূর দিয়ে। যেতে যেতে প্লুটোর ছবিও সমানে পাঠিয়ে গেল ওই যান। স্বভাবতই উল্লসিত মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র বিজ্ঞানীরা।

‘‘আজ আমাদের দারুন গর্বের দিন,’’ বললেন নাসার মুখ্যপ্রশাসক চার্লি বোল্ডেন। সঙ্গে সঙ্গে স্মরণ করলেন ন’বছর আগে নিউ হরাইজনস-কে মহাকাশে উৎক্ষেপণের দিনগুলি। যখন খর্ব হয়নি প্লুটোর সম্মান। সে তখনও পরিচিত গ্রহ হিসেবেই। এর কিছু দিন পরেই অবশ্য প্লুটোর মর্যাদা খর্ব করে জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্ত নেন প্লুটোকে বামন গ্রহ হিসেবে চিহ্নিত করার।

সে সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গ টেনে টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে উচ্ছ্বসিত বোল্ডেন আশা প্রকাশ করলেন এই মর্মে যে জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা হয়তো তাঁদের মত বদলাবেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি তো প্লুটোকে গ্রহই বলব। অবশ্য আমি নীতি-নির্ধারক নই।’’

নিউ হরাইজনস-এর পাঠানো ছবিতে দেখা যাচ্ছে প্লুটোর গায়ে লাল-লাল দাগ। অনেকটা মঙ্গলগ্রহকে যেমন দেখায়। ওই দাগ ছাড়াও প্লুটোর গায়ে দেখা যাচ্ছে উপত্যকা, পাহাড় কিংবা খাদ। অকল্পনীয় বেগে ছুটতে ছুটতে নিউ হরাইজনস এখন সংগ্রহ করছে আরও যে সব ছবি, সে সব টাটকা হাতে পাচ্ছেন না বিজ্ঞানীরা। যাঁরা বসে আছেন আমেরিকার বাল্টিমোর শহরে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষাগারে। টাটকা ছবি তুলে নিউ হরাইজনস রেখে দিচ্ছে নিজের কাছে, সঙ্গে সঙ্গে পাঠানোর জো নেই। বেতার যোগাযোগেও (যার বেগ সেকেন্ডে ৩০০০০০ কিলোমিটার) প্লুটো থেকে পৃথিবীতে সঙ্কেত পৌঁছতে লাগে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা।

প্লুটোর ১২,৫০০ কিলোমিটার দূর দিয়ে চলে যাওয়ার পর নিউ হরাইজনস আপাতত মৌন। তার সঙ্গে ফের বেতার যোগাযোগ হবে বুধবার ভোরে। তার আগে পর্যন্ত জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে সময় কাটাবেন। আর আশা করবেন কোনও দুর্ঘটনায় ওই মহাকাশযান ধ্বংস না হয়ে যায়। সে আশঙ্কা একে বারে উড়িয়ে দেওয়ার নয়। মহাশূন্যে সংঘর্যের কারণে। নিউ হরাইজনস এত ভীমবেগে (ঘণ্টায় ৪৫,০০০ কিলোমিটার) ধাবমান যে, চালের দানার মতো কোনও বস্তুর সঙ্গে সংঘর্ষ হলেও ভেঙে চুরমার হবে পেল্লায় ওই যান। বিজ্ঞানীরা অবশ্য তেমন দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে নিউ হরাইজনস-এর গতিপথ গণনা করেছেন অতি সন্তর্পণে। এমন ভাবে যাতে ধ্বংসাত্ম সংঘর্ষের আশঙ্কা দাঁড়ায় ১০,০০০-এ ১।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

New Horizons pluto kolkata pathik guha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE