Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

সৌদি যুবরাজই সেই ‘বস’! সিআইএ তদন্তে খাশোগি খুনে নয়া মোড়

২ অক্টোবর ইস্তানবুলের সৌদি কনসুলেট থেকে রিয়াধে ফোন গিয়েছিল— ‘কাজ খতম। বস-কে জানিয়ে দিন!’ ‘কাজ খতম’ মানে, খাশোগি নিথর। কিন্তু ‘বস’ কে?

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৪৫
Share: Save:

দু’টো ফোন কল। একটা খুনের আগে। আর একটা পরে। সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি খুনের রহস্যে বিস্তর জট পাকাচ্ছিল। আবার সব খুলেও দিল!

২ অক্টোবর ইস্তানবুলের সৌদি কনসুলেট থেকে রিয়াধে ফোন গিয়েছিল— ‘কাজ খতম। বস-কে জানিয়ে দিন!’ ‘কাজ খতম’ মানে, খাশোগি নিথর। কিন্তু ‘বস’ কে? প্রশ্নটা ঘোরাফেরা করছিল কয়েক দিন ধরে। সরাসরি উত্তর না মিললেও, আবছা একটা ইঙ্গিত ছিলই। আজ বোমা ফাটাল এক মার্কিন সংবাদমাধ্যম। তাদের দাবি— মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ তদন্তে নিশ্চিত যে, সৌদি যুবরাজই সেই ‘বস’। মহম্মদ বিন সলমনের নির্দেশেই খাশোগিকে খুন করতে সে দিন রিয়াধ থেকে দু’দফায় ১৫ জনের হিট স্কোয়াড গিয়েছিল ইস্তানবুলে।

সিআইএ-র তদন্ত শেষ। কিন্তু এখানেই ইতি নয়। খুনের কয়েক দিন আগে খাশোগির আইফোনে যে কল-টা গিয়েছিল, তাতেও জড়ালেন যুবরাজই। কার ফোন? সিআইএ-র দাবি— আমেরিকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত খালেদ বিন সলমন অর্থাৎ যুবরাজের ভাই খাশোগিকে ইস্তানবুলের সৌদি কনসুলেটে যেতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘কিছু ভাবতে হবে না। নির্বিঘ্নে কাজ সেরে আসুন।’’ এই ফোন কল-টা ফাঁদ ছিল। আড়ালে থেকে পেতেছিলেন খোদ যুবরাজ! সিআইএ তদন্তে এমনটাই উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম।

তুর্কি বাগদত্তাকে সঙ্গে নিয়েই খাশোগি সে দিন কনসুলেটে যান। কিন্তু আর ফেরেননি। অভিযোগ, খুনের পরে রিয়াধের হিট স্কোয়াড তাঁর দেহ টুকরো করে অ্যাসিডে চুবিয়ে নিশ্চিহ্ন করে পরে নালায় ভাসিয়ে দেয়। সৌদি প্রশাসন এবং রাজ পরিবার গোড়ায় খুনের কথা স্বীকারই করেনি। পরে ঘরে-বাইরে চাপের মুখে প্রথমে বিষয়টিকে ‘দুর্ঘটনা’ বলে চালাতে চায়। আরও পরে জানায়, নিজেদের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে কনসুলেটে ওই কাণ্ডটা ঘটিয়েছিল হিট স্কোয়াড। সৌদি রাজা বা যুবরাজ এ সবের কিছুই জানতেন না। তুরস্ক যদিও বার বার আঙুল তুলেছে রাজ পরিবারের দিকেই।

আরও পড়ুন: মলদ্বীপ নিয়ে কিছুটা স্বস্তি

এ দিন সিআইএ-তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে তাই আঙ্কারার জোর আরও বাড়ল বলেই মনে করা হচ্ছে। এ দিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এত দিন সৌদি যুবরাজকে আড়াল করার চেষ্টাই করেছেন। অডিয়ো ক্লিপের ওই ‘বস’ যে সৌদি যুবরাজ, তা মানতে অস্বীকার করেন ট্রাম্পের জাতীয় উপদেষ্টা জন বল্টনও। এখন তাঁরা কী বলছেন? মুখে কুলুপ এঁটেছে হোয়াইট হাউস এবং মার্কিন বিদেশ দফতর। ভাইস প্রেসিডেন্ট শুধু জানান, ‘‘দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি চায় আমেরিকা। কেউ যেন ছাড় না পায়।’’

(ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন।)

সৌদি প্রশাসন এখনও পর্যন্ত খাশোগি-খুনে ১১ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে পাঁচ জনের ফাঁসি চেয়েছে। যুবরাজের নাম জড়ানোয় এ দিনও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে রিয়াধ। আর যুবরাজের ভাই তো স্পষ্ট বলেই দিয়েছেন, খাশোগির সঙ্গে তাঁর শেষ বার ফোনে কথা হয়েছিল এক বছর আগে। ২ অক্টোবরের আগে খাশোগি ছিলেন লন্ডনে। সেখানে তাঁকে ফোন করার কথা অস্বীকার করে টুইট করেছেন খালেদ। তাঁর এই বিবৃতি ফলাও করে ছাপিয়েছে সৌদি সংবাদমাধ্যম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE