Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

মে-র বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব

ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে দলের ভিতরে-বাইরে প্রবল চাপে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যে খসড়া চুক্তিতে তিনি ইউরোপীয় ইউনয়ন (ইইউ)-এর নেতাদের অনুমোদন জোগাড় করেছেন, সেই চুক্তি তাঁর দেশের এমপিদেরই পছন্দ নয়।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র ইস্তফা চেয়ে দরখাস্ত জমা দিলেন নিজের দলের ৪৮ জন বিক্ষুব্ধ সাংসদ।—ছবি এএফপি।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র ইস্তফা চেয়ে দরখাস্ত জমা দিলেন নিজের দলের ৪৮ জন বিক্ষুব্ধ সাংসদ।—ছবি এএফপি।

শ্রাবণী বসু
লন্ডন শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:০২
Share: Save:

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র ইস্তফা চেয়ে দরখাস্ত জমা দিলেন নিজের দলের ৪৮ জন বিক্ষুব্ধ সাংসদ। আজ, বুধবার সন্ধে ছ’টা থেকে আটটার মধ্যে পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হয়। কনজ়ারভেটিভ পার্টির রাশ নিজের হাতে রাখতে হলে টেরেসাকে পেতে হবে ১৫৮টি ভোট। তা হলে আরও এক বছরের জন্য তাঁর মসনদ পাকা। আর প্রয়োজনীয় ভোট না পেলে কনজ়ারভেটিভ দলের প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা অনিবার্য। হারাতে হবে প্রধানমন্ত্রীর মসনদও।

ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে দলের ভিতরে-বাইরে প্রবল চাপে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যে খসড়া চুক্তিতে তিনি ইউরোপীয় ইউনয়ন (ইইউ)-এর নেতাদের অনুমোদন জোগাড় করেছেন, সেই চুক্তি তাঁর দেশের এমপিদেরই পছন্দ নয়। একটা বড় সংখ্যক এমপি বলে দিয়েছিলেন, মঙ্গলবার (গতকাল) পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সে এই চুক্তি পেশ হলে তাঁরা আদপেই সেটি পাশ হতে দেবেন না। চাপের মুখে পড়ে সোমবার রাতে তড়িঘড়ি ভোটাভুটি স্থগিত করে দেন মে। সোজা চলে যান ইউরোপে। উদ্দেশ্য, জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের মতো বড় মাপের ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে দেখা, কী ভাবে ফের চুক্তিতে পরিবর্তন করা যায়, বা আদৌ করা যায় কি না।

এ দিকে বসে নেই বিক্ষুব্ধ এমপিরাও। আজ সকালেই ৪৮ জন এমপি টেরেসার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসেন। ফলে তিনি এখনও দলের নেতা রয়েছেন কি না, তা দেখতে ভোটাভুটি অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। হাউস অব কমন্সে কনজ়ারভেটিভ দলের ৩১৫টি আসন রয়েছে। তাই নিজের ঝুলিতে অন্তত ১৫৮টি (অর্ধেকের থেকে একটি বেশি) ভোট চাই তাঁর।

চাপে পড়লেও চুপ করে নেই প্রধানমন্ত্রী মে। আজ সকালে ১০, ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে এক সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন তিনি। সেই বৈঠকে যথেষ্ট কড়া ভাবেই প্রশ্ন সামলান তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মোড়কে নিজের দলের বিক্ষুব্ধ এমপিদের বার্তা দেন— ‘‘আমাকে সরালে নিজেরাই প্যাঁচে পড়বেন!’’ কেমন প্যাঁচ, তার ব্যাখ্যাও করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, ‘‘আমি যদি আর দলের নেতা না থাকি, প্রধানমন্ত্রী না থাকি, দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো বড়সড় ধাক্কা খাবে।’’

যিনি নতুন প্রধানমন্ত্রী হবেন, তাঁকে নতুন করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংবিধানের ৫০ নম্বর অনুচ্ছেদটি কার্যকর করার জন্য ব্রাসেলসে (ইইউ-এর সদর দফতর) আবেদন করতে হবে। ফলে পিছিয়ে যেতে পারে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া। আগামী ২৯ মার্চ এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা। টেরেসার কথায়, ‘‘নতুন প্রধানমন্ত্রী এলেও অনির্দ্দিষ্ট কালের জন্য পিছিয়ে যাবে ব্রেক্সিট। সম্পূর্ণ খারিজও হয়ে যেতে পারে। যাঁরা আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনছেন, তাঁরা আশা করি এই সব দিকগুলো ভাল করে ভেবে দেখেছেন!’’ ক্ষুব্ধ মে এ-ও বলেছেন যে, ২০২২-এর নির্বাচনে আর দলের নেতৃত্ব দেবেন না তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE