জোকহা আলহার্থি
আরবি সাহিত্যের অধ্যাপিকা তিনি। ওমানের লেখিকা জোকহা আলহার্থি তাঁর বই ‘সেলেস্টিয়াল বডিজ়’-এর জন্য এ বারের বুকার পুরস্কার পেলেন। এর আগে আরবি সাহিত্যের কোনও লেখক এই সম্মানে ভূষিত হননি। জোকহার মূল বইটিও আরবিতেই লেখা। ইংরেজিতে তার অনুবাদ করেছেন এক মার্কিন লেখিকা। নাম ম্যারিলিন বুথ। পুরস্কারের পঞ্চাশ হাজার পাউন্ড সমান ভাগাভাগি হবে লেখক এবং অনুবাদকের মধ্যে।
‘‘আমি অভিভূত এটা ভেবে যে সমৃদ্ধ আরবি সাহিত্য ও সংস্কৃতির জন্য একটা জানলা খুলে গেল,’’ পুরস্কার ঘোষণার পরে লন্ডনে বললেন খোদ লেখিকা। জোকহার জন্ম ওমানে। আরবি পদ্য নিয়ে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেন।
এখন মাসকটের সুলতান কাবুস বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি সাহিত্য পড়ান। গল্পটির অনুবাদক ম্যারিলিনও আমেরিকার শিক্ষাবিদ। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি পড়ান তিনি। বছর চল্লিশের জোকহা এর আগে শিশুদের একটি কাহিনি লিখেছেন। লিখেছেন তিনটি উপন্যাসও।
‘সেলেস্টিয়াল বডিজ়’ ওমানের আল-আওয়াফি নামে এক গ্রামের তিন বোনের গল্প। তাঁদের সম্পর্কের গল্প, প্রেম-বিচ্ছেদের গল্প। মায়া, আসমা আর খাওলা নামে এই তিন বোন ওমানের ক্রীতদাস সমাজের বিবর্তন দেখেছেন। প্রেমিকের সঙ্গে বিচ্ছেদের পরে আবদাল্লাহ নামে এক যুবককে বিয়ে করেন মায়া। আসমা শুধুমাত্র দায়িত্ববোধ থেকে বিয়ে করেন এক জনকে। আর খাওলা অপেক্ষা করছেন তাঁর প্রেমিকের জন্য। যিনি ঘটনাচক্রে এখন কানাডা চলে গিয়েছেন। লেখিকার কথায়, ‘‘আমার দেশ ওমান আমায় লেখায় অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। আমার বিশ্বাস আন্তর্জাতিক পাঠক এই গল্পের মানবিকতাবোধ, স্বাধীনতার গল্প আর ভালবাসার অনুভূতির সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করতে পারবেন।’’
জোকহার লেখার প্রশংসায় ব্রিটেনের পত্র-পত্রিকাগুলি উচ্ছ্বসিত। এক প্রথম সারির ব্রিটিশ দৈনিক লিখেছে, ‘‘এই গল্প আসলে এমন একটা সাংস্কৃতিক পরিবেশের ছবি তুলে ধরেছে যা পশ্চিমী দুনিয়ার কাছে একদমই অপরিচিত।’’ আর একটি পত্রিকা জোকহা প্রসঙ্গে লিখেছে, ‘‘এক বলিষ্ঠ সাহিত্যিক প্রতিভার আগমন।’’ বইটি প্রসঙ্গে ওই পত্রিকার মন্তব্য, ‘‘সুপরিকল্পিত ভাবে ঠাস বুনোটে ভরা গল্প।’’ লেখিকা নিজে বলেছেন, ‘‘আমার গল্পে ক্রীতদাস প্রথা ছুঁয়ে গিয়েছি। সাহিত্যের মাধ্যমেই এ সব নিয়ে সবচেয়ে ভাল কথা বলা যায় বলে আমার মনে হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy