প্রতিশ্রুতি: দলীয় ইস্তাহার হাতে ইমরান খান। ছবি: এপি।
ভোটের হাওয়া দেশে। অথচ সামনের সারির অনেক নেতাই সপরিবারে জড়িয়ে পড়েছেন দুর্নীতির হরেক অভিযোগে। পিএমএল(এন) নেতা নওয়াজ শরিফের দশ বছর কারাদণ্ড ঘোষণা হয়েছে আগেই। মেয়ের সাত বছর। ভুয়ো ব্যাঙ্ক আকাউন্টের মামলায় পাক সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আজ বিদেশে যাওয়ার পথ বন্ধ হল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)-র নেতা আসিফ আলি জ়ারদারি ও তাঁর বোন ফরিয়াল তালপুরের। এরই মধ্যে ভোটের ইস্তাহার প্রকাশ করে প্রচারের প্রথম ধাপটি এগিয়ে রাখছে প্রধান দলগুলি। ইমরান খান তাঁর পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর ইস্তাহার প্রকাশ করেছেন কাল। তাতে জোর পেয়েছে আর্থিক সংস্কার, স্বচ্ছ প্রশাসন ও পাকিস্তানের অগ্রগতি। লক্ষ্যণীয় ভাবে, উল্লেখ থাকলেও কাশ্মীর প্রসঙ্গ তেমন গুরুত্ব পায়নি।
নওয়াজ়ের পিএমএলএন, রোহিঙ্গা, কাশ্মীর ও প্যলেস্তাইনের নিপীড়িতদের পাশে থাকার বার্তা ছুঁয়ে গিয়েছে। বেশি জোর দিয়েছে চিনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও দেশের পরমাণু অস্ত্রের সুরক্ষায়। বিলাবল ভুট্টোর পিপিপি জানিয়েছে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে তোলা তাদের লক্ষ্য। ইস্তাহারে একটি বাক্যে শুধু জম্মু-কাশ্মীর বিতর্কের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদ যারা মানে না, তাদের ওই বিশ্বসংস্থায় বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার তারা বিরোধী।
কাশ্মীর প্রশ্নে অনড় ও স্পর্শকাতর পাক সেনার সঙ্গে ইমরানের ঘনিষ্ঠতা গোপন কিছু নয়। ক’দিন আগেও দুর্নীতিগ্রস্ত নেতার জেলযাত্রা নিয়ে বিদ্রুপ করতে গিয়ে ইমরান বলেছেন, ‘‘আঁজলা জলে যাঁর ডুবে মরা উচিত, তিনিই এমন ভাবে জেলে যাচ্ছেন যেন, কাশ্মীর জয় করে ফিরছেন!’’ কাশ্মীর দখলের ভাবনা কী ভাবে এই প্রাক্তন ক্রিকেটারের মাথায় গেঁথে রয়েছে, সেটা বেশ স্পষ্ট এতেই। কিন্তু দলের ৬১ পাতার ইস্তাহারে একেবারে শেষ দিকে মাত্র দু’বার এসেছে কাশ্মীর প্রসঙ্গ। অগ্রাধিকারের চারটি বিষয়ের মধ্যে তিন নম্বরে বলা হয়েছে, ক্ষমতায় এলে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সনদ থেকে কাশ্মীর সমস্যার সমধান ও গোটা এলাকায় স্থায়ী শান্তির জন্য কাজ করবে তাঁর দল।
ইমরানের দলের ইস্তাহারে বরং জোর পেয়েছে দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্র করে তুলে ‘নয়া পাকিস্তান’ গড়ার স্বপ্ন। রয়েছে দেশের উন্নয়ন আর রোজগারের আশ্বাস। প্রতিবেশী ভারতে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় এসেছিলেন উন্নয়ন আর বছরে দু’কোটি লোককে কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে। ইমরানের প্রতিশ্রুতি, কাজ দেবেন ১ কোটি মানুষকে। দেশের বিপুল দেনা, টাকার দাম পড়ে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তিনি জানিয়েছেন, সামনে কঠিন লড়াই অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে। যার অর্থ কাশ্মীর নিয়ে ভাবনার বদল না ঘটলেও পাকিস্তানের বেহাল দশা সামলানোই লক্ষ্য এখন এ দেশের প্রধান দলগুলির। অন্তত ভোট-বাজারে এমন ভাবনাই সামনে রাখতে চাইছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy