Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
International News

ভারত-পাক পরমাণু যুদ্ধ হলে মৃত্যু হবে ১০ কোটিরও বেশি মানুষের, বলছে গবেষণা

আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণা এই পূর্বাভাস দিয়েছে।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৯ ১৪:০৯
Share: Save:

আর ৫/৬ বছর পর ভারতপাকিস্তানের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ হলে ১০ কোটিরও বেশি মানুষের মৃত্যু হবে। পরমাণু বোমা বিস্ফোরণের ফলে তৈরি হওয়া ঘন মেঘ ফুঁড়ে সূর্যের আলো পৌঁছতে পারবে না বলে শস্য ফলবে না। তার ফলে, বিশ্বজুড়ে গণ অনাহারে মৃত্যু হবে কোটি কোটি মানুষের।

আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণা এই পূর্বাভাস দিয়েছে। অন্যতম গবেষক, নিউ ব্রান্সউইকের অ্যালান রোবক বলেছেন, ‘‘২০২৫ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ হলে তার জেরে ক্ষয়ক্ষতিটা শুধুই যে এলাকায় বোমা পড়ল, সেখানেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, তার খেসারত দিতে হবে গোটা বিশ্বকেই।’’

ওই গবেষণা এও জানিয়েছে, দশকের পর দশক ধরে কাশ্মীর ইস্যুতে যতই যুদ্ধ করুক ভারত ও পাকিস্তান, দু’পক্ষের যতই গোলাবারুদ বিনিময় হোক না কেন, আজ থেকে বছর ছ’য়েক পর (২০২৫ সাল) দু’দেশের হাতে ৪০০/৫০০-র বেশি পরমাণু বোমা থাকবে না।

গবেষকরা হিসেব কষে এও দেখাতে পেরেছেন, দু’পক্ষের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ হলে, বোমা বিস্ফোরণের ফলে কী পরিমাণ ঝুল আর কালিতে ঢেকে যাবে আকাশ। তাঁরা বলছেন, পরমাণু বোমা বিস্ফোরণের ফলে ১ কোটি ৬০ লক্ষ থেকে ৩ কোটি ৬০ লক্ষ টন ওজনের ঝুল, কালিতে ঢেকে যাবে আকাশ। যা বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরে পৌঁছতে সময় নেবে বড়জোর কয়েক সপ্তাহ। তার ফলে, গোটা বিশ্বের বিশাল একটি অংশে সূর্যের আলো পৌঁছবে না বিন্দুমাত্র। কারণ, ওই ঝুল, কালির পুরু স্তর সূর্যের আলোর পুরোটাই শুষে নেবে। তার ফলে, জমাট কালো মেঘের পরিমাণ বাড়বে দ্রুত।

আরও পড়ুন- সারা বিশ্ব ধ্বংস করার পরিবেশ তৈরি করবে পাকিস্তান, সন্ত্রাস প্রশ্নে তোপ জয়শঙ্করের​

আরও পড়ুন- জঙ্গি হানা হতে পারে ভারতে, আশঙ্কা আমেরিকার​

গবেষণা জানিয়েছে, এই সবের ফলে সূর্যালোকের ২০ থেকে ৩৫ শতাংশ আলো কম পৌঁছবে পৃথিবীতে। যার জেরে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা কমে যাবে ২ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টিপাতের পরিমাণও কমে যাবে অন্তত ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ।

তার প্রভাব পড়বে ফসল উৎপাদনের উপর। মহাসাগরে যে গাছপালা জন্মায়, তাদের উপরেও। গবেষণা জানিয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ হলে জমির উপর যে ফসল ফলে, তার পরিমাণ কমে যাবে ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ। আর মহাসাগরগুলিতে জন্মানো উদ্ভিদের উৎপাদন কমবে ৫ থেকে ১৫ শতাংশ।

সেই যুদ্ধে পরমাণু বোমা বিস্ফোরণের ফলে বায়ুমণ্ডলে যে ঝুল ও কালির মেঘ জমবে, তা কেটে যেতে সময় লাগবে অন্তত ১০ বছর। সময়টা আরও বেশি লাগতে পারে, সেই মেঘ বায়ুমণ্ডলের আরও উপরের স্তরে উঠে যাবে বলে।

কতটা শক্তির পরমাণু বোমা সেই যুদ্ধে ব্যবহৃত হতে পারে, তারও একটা হিসাব দিয়েছেন গবেষকরা। তাঁরা বলছেন, ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিরোশিমায় আমেরিকার ফেলা পরমাণু বোমার শক্তি যতটা ছিল, সেই ১৫ কিলোটন ওজনের বোমা ফেলতে পারে দু’পক্ষই। আবার সেই পরমাণু বোমাগুলির ওজন হতে পারে কয়েকশো কিলোটনও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE