সমালোচনার মুখে ইমরান খানের সরকার। ছবি রয়টার্স।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকার-বিরোধী কোনও পোস্ট করলেই পাকিস্তানে হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে দেশের সাংবাদিক, সমাজকর্মী বা বিরোধী দলের সদস্যদের। এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন পাক সাংবাদিকদের একাংশ। শুধু দেশেই নয়, বিদেশে থেকে যদি কোনও পাকিস্তানি নাগরিক সরকারের কাজের সমালোচনা করে ফেসবুক বা টুইটারে কিছু পোস্ট করেন, সে ক্ষেত্রেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তাঁদের বিরুদ্ধে। হয় তাঁদের পোস্ট সরিয়ে দিচ্ছে ওই নির্দিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থা। অথবা তাঁকে নোটিস পাঠানো হচ্ছে এই বলে যে ‘দেশের আইন অনুযায়ী এই ধরনের পোস্ট আপনি করতে পারেন না’।
টানা দেড় বছর ধরে এ ভাবেই পাক সরকার সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। পাক সরকার বিশেষ করে সেনা বাহিনীর সমালোচনা করলেই নানাবিধ শাস্তির মুখোমুখি হতে হচ্ছে পাক নেটিজেনদের। বস্তুত ২০১৬ সালে সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি সংক্রান্ত একটি আইন পাশ করে পাক সরকার। যেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, দেশ বা ইসলাম-বিরোধী মন্তব্য বা পোস্টের জন্য সর্বোচ্চ ১৪ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে অভিযুক্তের। গত বছর জুনে পাক সেনা বাহিনীর তরফে মেজর জেনারেল আসিফ গফুর টিভিতে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়েও স্পষ্ট জানান, সেনা বা সরকার-বিরোধী কোনও পোস্ট কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।
পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের প্রথম ছ’মাস সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুক পাকিস্তান থেকে করা সবচেয়ে বেশি পোস্ট বা কমেন্ট মুছে দিয়েছে। প্রায় একই কথা প্রযোজ্য টুইটারের জন্যও। ২০১৭ সালের শেষের দিকে ওই সংস্থা ৩০০৪টি অ্যাকাউন্ট থেকে নানাবিধ পোস্ট সরিয়ে দিয়েছে।
তবে শুধু অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট মুছে দেওয়াই নয়, সরকার বিরোধী মন্তব্যের জন্য অপহরণ বা ভয় দেখানোর মতো ঘটনাও ঘটছে পাকিস্তানে। গুল বুখারি নামে এক লেখিকাকে সরকার-বিরোধী কলাম লেখার জন্য অপহরণ পর্যন্ত করা হয়েছিল গত বছর। কে বা কারা তঁকে অপহরণ করেছিল তা স্পষ্ট নয় এখনও। তবে পরে ছাড়া পান তিনি। গুলের বক্তব্য, ‘‘আর কিছু করতে না পেরে এ ভাবেই প্রতিশোধ নেওয়ার কথা ভাবছে সরকার।’’ গত ফেব্রুয়ারিতে রিজ়ওয়ান-উর-রহমান রাজ়ি নামে এক লাহৌরের এক সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ ছিল, সোশ্যাল মিডিয়ায় দেশের প্রতি সম্মানহানিকর মন্তব্য করেছিলেন তিনি। গত বছর থেকে তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে নজরদারি চালানো হচ্ছিল বলে অভিযোগ করেছেন রিজ়ওয়ান। গ্রেফতারের দু’দিন পরে অবশ্য ছাড়া পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার পর থেকে আর কখনও টুইট করতে দেখা যায়নি তাঁকে। তাঁর সেই বিতর্কিত মন্তব্যগুলিও এখন ‘ডিলিটেড’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy