ছবি: সংগৃহীত
সন্ত্রাস দমনে ‘ঢিলেঢালা মনোভাব’-এর জন্য পাকিস্তানকে ফের হুঁশিয়ারি দিল পেন্টাগন। মার্কিন কংগ্রেসে জমা দেওয়া এক রিপোর্টে আমেরিকার প্রতিরক্ষা দফতর বলেছে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তানের তরফে খামতি থাকলে, তারাই একতরফা ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।
এ বছরের মাঝামাঝি নয়া আফগান নীতি ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা ফেরাতে সবার আগে আফগানিস্তানে শান্তি ফেরানোটা সবচেয়ে জরুরি বলে জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেই সময়ও সন্ত্রাসবাদ দমনের প্রশ্নে সরাসরি পাকিস্তানকে একহাত নিয়েছিলেন তিনি। জঙ্গিদের প্রশ্রয় দেওয়া বন্ধ না করলে ইসলামাবাদকে মোটা পরিমাণের মার্কিন আর্থিক অনুদান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি পর্যন্ত দিয়েছিল তাঁর প্রশাসন। তার পরেও একাধিক বার মার্কিন বিদেশ সচিব থেকে শুরু করে পেন্টাগনের কর্তারা, সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার প্রশ্নে পাকিস্তানকে কটাক্ষ করেছেন।
ট্রাম্পের আফগান তথা দক্ষিণ এশিয়া নীতি নিয়ে অতি সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসে একটি রিপোর্ট পেশ করেছে দেশের প্রতিরক্ষা দফতর। সেখানেই বলা হয়েছে, সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে পাক সরকারের ভূমিকা কোনও কোনও ক্ষেত্রে সদর্থক বটে। বিশেষত উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটি নির্মূল অভিযানে পাক সেনা বাহিনীর ভূমিকা প্রশংসনীয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও পাকিস্তানের মাটিতেই এখনও প্রশ্রয় পাচ্ছে তালিবান আর হক্কানির মতো জঙ্গি গোষ্ঠী। আফগানিস্তান তো বটেই, দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলিরও শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে এর জন্য। আর তার পরেই পেন্টাগনের হুঁশিয়ারি, প্রয়োজনে পাকিস্তানের মাটিতে গিয়ে সেখানকার জঙ্গি ঘাঁটি উড়িয়ে দিতে পিছপা হবে না আমেরিকা। পেন্টাগন অবশ্য একই সঙ্গে জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আফগান সরকারের লড়াইয়ের পাশে রয়েছে তারা। নয়া আফগানিস্তান গঠনে প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির ভূমিকার প্রশংসাও করেছে তারা।
সন্ত্রাসবাদ দমনে পাকিস্তান আর আফগানিস্তানের দড়ি টানাটানির বিষয়টিও উল্লেখ করেছে পেন্টাগন। ওই রিপোর্টে স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে পাকিস্তান আর আফগানিস্তান একে অপরকে বরাবর দোষারোপ করে থাকে। এক দেশের মাটি ব্যবহার করে অন্য দেশে আক্রমণের অভিযোগও নতুন নয়। পাক-আফগান সীমান্ত এলাকায় যে সব জঙ্গি গোষ্ঠীর বাড়বাড়ন্ত রয়েছে, তার একটি তালিকা তৈরি করেছে পেন্টাগন। ‘আল কায়দা ইন দ্য ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট’ থেকে শুরু করে হক্কানি নেটওয়ার্ক, লস্কর-ই-তইবা, তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান, আইএস এমনকী ‘ইসলামিক মুভমেন্ট অব উজবেকিস্তান’-এর মতো গোষ্ঠীরও নাম রয়েছে সেই তালিকায়। দু’দেশের শান্তি আর স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করতে এই সব ক’টি গোষ্ঠীর ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করে পেন্টাগন।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, একে অপরের দিকে আঙুল না তুলে আফগান ও পাক সরকারের উচিত একত্রে গোটা দক্ষিণ এশিয়া থেকে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করার দিকে নজর দেওয়া। এই প্রচেষ্টায় মার্কিন প্রশাসন সব সময় দু’দেশের পাশে থাকবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy