Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বাবা নেহরুর ডাক্তার, ছেলে পাক প্রেসিডেন্ট

আরিফের বাবা হাবিবুর, জওহরলাল নেহরুর পরিবারের সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠ ছিলেন। নেহরুর লেখা বেশ কয়েকটি চিঠি এখনও আরিফের পরিবারের কাছে রয়েছে বলে দাবি করেছে পিটিআই। তবে সেই চিঠিপত্রে রাজনীতির অনুষঙ্গ না-থাকার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করছে নয়াদিল্লি।

আরিফ আলভি

আরিফ আলভি

সংবাদ সংস্থা
ইসলামাবাদ শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:২৩
Share: Save:

ডাক্তারের ছেলে ডাক্তার। দেশভাগের আগে নেহরু পরিবারের দাঁতের চিকিৎসা করতেন হাবিবুর রহমান ইলাহি আলভি। তার পর ১৯৪৭-এ তিনি চলে আসেন পাকিস্তানে। করাচিতে একটা চেম্বার খুলে আজীবন ডাক্তারিই করে গিয়েছেন ভদ্রলোক। একেবারেই সাদামাঠা জীবনযাপন। বিয়ে, সন্তানলাভ— সব পাকিস্তানেই। তাঁর ছেলে আরিফ আলভিও একটা সময়ে নিয়মিত চেম্বারে বসতেন। সঙ্গে চুটিয়ে রাজনীতি। এ বার তিনিই দেশের ১৩তম প্রেসিডেন্ট হয়ে যাচ্ছেন আইওয়ান-এ-সদরের ঠিকানায়। মাসখানেক আগে এই প্রেসিডেন্ট প্যালেসেই প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন ইমরান খান।

বরাবরই ইমরান ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আরিফ, পাকিস্তান তেহরিক-এ-ইনসাফ (পিটিআই) দলের সহ-প্রতিষ্ঠাতাও। গত কালের ভোটে তিনি সরাসরি হারিয়ে দিয়েছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টি ও পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ়)-এর দুই প্রেসি়ডেন্ট পদপ্রার্থীকে। এমনটা যে হতে পারে, তা নিয়ে তেমন ধন্দ ছিল না। তবে আরিফের এই ভারতীয়-যোগসূত্রটা এত দিন সামনে আসেনি বলেই তাঁকে নিয়ে এখন বাড়তি উৎসাহী পড়শি ভারতও।

আজ পিটিআই তাদের ওয়েবসাইটে আরিফের সংক্ষিপ্ত জীবনী প্রকাশ করেছে। তা থেকে জানা গিয়েছে— আরিফের বাবা হাবিবুর, জওহরলাল নেহরুর পরিবারের সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠ ছিলেন। নেহরুর লেখা বেশ কয়েকটি চিঠি এখনও আরিফের পরিবারের কাছে রয়েছে বলে দাবি করেছে পিটিআই। তবে সেই চিঠিপত্রে রাজনীতির অনুষঙ্গ না-থাকার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করছে নয়াদিল্লি। আরিফের পূর্বসূরি পারভেজ় মুশারফ এবং বিদায়ী প্রেসিডেন্ট মামনুন হুসেনেরও ভারতীয় যোগসূত্র খুব স্পষ্ট। যথাক্রমে দিল্লি এবং আগরা থেকে এ দেশে আসা পারভেজ়, মামনুন ভারতীয় বংশোদ্ভূতই।

আরিফের জন্ম অবশ্য পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশেই। ১৯৪৯ সালে। কলেজে পড়ার সময় থেকেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি তাঁর। সে সময় আরিফ ছিলেন জামাত-এ-ইসলামির ছাত্রশাখার সদস্য। আর দেশে তখন জেনারেল আয়ুব খানের সেনাশাসন। প্রতিষ্ঠান-বিরোধী মিছিলের একেবারে সামনেই দাঁড়াতেন আরিফ। তার পরে ১৯৭৯ সালে জামাত-এ-ইসলামির হয়েই ভোটে দাঁড়ান। হেরে যান এবং দলীয় দ্বন্দ্বে একটা সময়ে কিছুটা গুটিয়েও নেন নিজেকে। ১৯৯৬ সালে ইমরান খানের সঙ্গে শুরু করেন রাজনীতির নয়া ইনিংস। পরের বছরেই ফের ভোটে দাঁড়ান। এবং হেরে যান। কিন্তু আর দল ছাড়েননি। বরং ক্রমশ এগিয়ে গিয়েছেন। ২০০৬ থেকে টানা সাত বছর আরিফই ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক। ২০১৩য় পার্লামেন্ট নির্বাচনে করাচি থেকে জয়ের মুখ দেখেন। এ বছর আবার।

আর ডাক্তারি? সে ভাবে নিয়মিত চেম্বার করা না-হলেও, একটা সময়ে পাকিস্তান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত হন আরিফ। তখন তিনি ইমরানের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে নয়া পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখছেন। প্রসিডেন্ট পদে শপথ নেবেন রবিবার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE