মেয়ে কেইলিনের এই ছবিটিই ফেসবুকে পোস্ট করেন মা জেসিকা।
বাড়ির সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিল বছর পাঁচেকের কেইলিন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় তার বাড়ি। দিব্যি লাফাচ্ছে ঝাঁপাচ্ছে। বল গড়িয়ে দিচ্ছে বন্ধুর দিকে। আচমকাই মেঝেতে পড়ে গেল ধুপ করে। টুকটুকে লাল গালগুলো কেমন যেন আরও বেশি লাল হয়ে গেল। নিস্তেজ হয়ে পড়ল কেইলিন। একটু আগেও প্রাণবন্ত যে বাচ্চাটা ঘুরে বেরাচ্ছিল। এখন সে সংজ্ঞা হারিয়েছে। মেয়ের এলোমেলো চুলগুলো বেঁধে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন মা। এমন সময় দেখলেন মেয়েটির চুলের গোড়া ফুলে লাল হয়ে রয়েছে। জায়গাটা চাপ দিতেই বেরিয়ে পড়ল একটা ছোট্ট কালো পোকা। যাকে বলে ‘টিক’।
পোকাটাকে একটা প্যাকেটে ভরে সোজা মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালের পথে রওনা দিলেন মা জেসিকা। পাঁচ বছরের ছোট্ট মেয়েকে দেখেই চিকিৎসকেরা বললেন, চলাফেরার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে কেইলিন।প্যারালাইসিস হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। দেওয়া হল বোতল বোতল রক্ত। দেওয়া হল অক্সিজেন। করা হল স্ক্যান। আর তাতেই জানা গেল আচমকাই পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়েছে কেইলিন। ডাক্তারি পরিভাষায় যাকে বলে ‘টিক প্যারালাইসিস’। তবে শুধু আমেরিকাতেও নয়, ভারতেও এর আগে এমন ঘটনার কথা জানা গিয়েছে। পোষ্য কুকুরের থেকে ছড়িয়েছিল সেই রোগ।
ছোট্ট ফুটফুটে মেয়ে আচমকাই এ রকম নিস্তেজ হয়ে পড়ল কেন, তা জানতে কেইলিনের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন জেসিকা। ভিডিওটি ২ কোটি ২০ লক্ষ বার দেখা হয়েছে এখনও পর্যন্ত। শেয়ার করা হয়েছে ৬০ লক্ষ বার। ভাইরাল হয়ে পড়েছে নিস্তেজ হয়ে পড়া কেইলিনের ছবি।
এই সেই মারাত্মক ‘টিক’
চিকিৎসকরা বলেন, সাধারণত নরম দেহের কালো পোকা এই ‘টিক’। আর এই পোকাগুলো বেছে বেছে বাচ্চাদেরই আক্রমণ করে। রক্ত শুষে নেয় তাদের দেহ থেকে। তার পর পোকাগুলির দেহ থেকে এক ধরনের ‘নিউরোটক্সিন’ অর্থাৎ বিষ ছড়িয়ে পড়ে আক্রান্তের দেহে। প্রথমে জ্বর আসে। তার পরেই মাথা ব্যথা। পা থেকে ধীরে ধীরে দেহের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়ে এই বিষাক্ত পদার্থ। নিস্তেজ হয়ে পড়ে পেশী। চলচ্ছক্তিহীন পড়ে আক্রান্ত। শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। তার পর ঘাড় শক্ত হয়ে যায়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে বমিও হতে পারে। এই কারণেই কীটের দংশনে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল কেইলিন।
আরও খবর: ৬০০ আলোকবর্ষ দূরের গ্রহ আবিষ্কার বাঙালির হাত ধরে
অসুস্থ দলাই লামা, দিল্লি অস্বস্তিতে
এর পরেই ওই ‘টিক’-এর দেহের বাকি অংশ কেইলিনের ত্বক থেকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বের করে আনেন চিকিৎসকরা। দেওয়া হয় অ্যান্টিবায়োটিক। চোখ মেলে তাকায় ফুটফুটে কেইলিন।অস্ত্রোপচারের পর ধীরে ধীরে চলাফেরার শক্তিও ফিরে পাচ্ছে কেইলিন। সেরে উঠছে সে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy