ভ্যাটিকানে প্রার্থনায় পোপ। ছবি: রয়টার্স।
পিৎজা, পাস্তা আর ক্রিমে ঠাসা মিষ্টি কেক খেয়ে ওজন বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। আস্তে আস্তে হারিয়ে ফেলছেন কর্মক্ষমতাও। পোপ ফ্রান্সিসকে তাই নিয়মিত শরীরচর্চার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
আর্জেন্তিনায় থাকার সময় অবশ্য এমনটা ছিল না। বিলাসিতা তো দূর, যথেষ্ট কায়ক্লেশেই জীবন কাটাতেন ফ্রান্সিস। শরীরে চর্বি বাড়ে এমন খাবার পারতপক্ষে এড়িয়ে যেতেন। কাছকাছি কোথাও যাওয়ার হলে পায়ে হেঁটে যেতেন। পোপ হওয়ার পর অবশ্য পাল্টে গিয়েছে সে সব কিছুই। গত ক’বছরে বহু অনুষ্ঠানে ফ্রান্সিসকে বলতে শোনা গিয়েছে, খুব বেশি দিন হয়তো পোপ হিসেবে কাজ করতে পারবেন না তিনি। তা থেকেই আশি ছুঁই ছুঁই পোপের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তাভাবনার শুরু।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার ইস্টার উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে পোপ হওয়ার দায়িত্ব-কর্তব্য নিয়ে রীতিমতো বিরক্তি প্রকাশ করেন ফ্রান্সিস। বলেন, মানসিক ও শারীরিক ভাবে ক্রমে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ছেন তিনি। ইস্টারের সময়টা এমনিতেই ব্যস্ততা থাকে। বৃহস্পতিবারও তার ব্যতিক্রম ছিল না। সকালের প্রার্থনা সেরে রোমের একটি সংশোধনাগারে গিয়েছিলেন পোপ। নিয়মমাফিক পা ধুয়ে দিয়েছেন বন্দিদের। দিনের শেষে ভ্যাটিকানের গির্জায় যখন এলেন, সদাহাস্য পোপের চোখেমুখে তখন ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট।
চেনা চেহারার পোপকে হারিয়ে ফেলার পিছনে তাঁর খাদ্যাভ্যাসকেই দায়ী করছে চিকিৎসক মহল। ইতালির একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে পোপের স্বাস্থ্যের ইতিবৃত্তান্ত। তাতেই জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে পিঠ ও ঘাড়ের যন্ত্রণায় ভুগছেন পোপ। যার জন্য সামান্য বেঁকেও হাঁটেন তিনি। যত দিন যাচ্ছে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তাঁর দায়িত্ব-কর্তব্য। এ সবের মধ্যে অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস মানসিক এবং শারীরিক ভাবে আরও দুর্বল করে দিচ্ছে তাঁকে। খাবারের প্রতি পোপের আসক্তির প্রমাণ মিলেছে তাঁর একটি সাক্ষাৎকারেও। মেক্সিকোর একটি টিভি চ্যানেলে সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ভ্যাটিকানের খাঁচাবন্দি জীবন ছেড়ে পিৎজা খেতে যেতে চান তিনি।
চিকিৎসক মহল তাই বলছে, পোপের উচিত অবিলম্বে আবার হাঁটাচলা শুরু করা। খাবারের তালিকা থেকে পিৎজা, পাস্তা জাতীয় ক্যালোরিবহুল খাবার বাদ দেওয়া।
পোপ ফ্রান্সিসের জীবনী লেখক এলিসাবেটা পিক অবশ্য অন্য কথা বলছেন। তাঁর দাবি, পিৎজা, পাস্তার পাশপাশি ব্যস্ত কর্মসূচি এবং মানসিক চাপও তাঁর ওজন বাড়ার জন্য সমান ভাবে দায়ী। আদতে এতটাও বেশি খান না পোপ। ওজন বাড়ার জন্য আগের মতো হাঁটাচলা করতে পারেন না ঠিকই। তবে কোনও ভাবেই অসুস্থ বলা যায় না তাঁকে। আগের মতোই চনমনে রয়েছেন। আর সেটাই তাঁর শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকার সবচেয়ে বড় প্রমাণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy