Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Bangladesh

মোদীকে ডাকায় ক্ষোভ ঢাকায়

বিষয়টি নিয়ে বিদেশ মন্ত্রক শঙ্কিত, কারণ মোদী বিরোধিতার নামে আসলে ভারত-বিরোধিতাই তীব্র হচ্ছে বাংলাদেশে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঢাকা শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৩০
Share: Save:

সিএএ-এনআরসি নিয়ে ক্ষোভ ছিলই। এর পরে দিল্লির সাম্প্রতিক হিংসার জেরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ক্ষোভের মেঘ গভীর হচ্ছে বাংলাদেশে। ১৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিনে বর্ষব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা হচ্ছে বাংলাদেশে। সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মোদীকে। কিন্তু সেই আমন্ত্রণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। এত দিন সোশ্যাল সাইটে এই প্রতিবাদ সীমাবদ্ধ ছিল। দিল্লির ঘটনার পরে মোদীর সফরের বিরোধিতায় সরব হয়েছেন চরমোনাই পির এবং হেফাজতে ইসলামির নেতা আল্লামা শফির মতো ধর্মীয় নেতারাও।

বিষয়টি নিয়ে বিদেশ মন্ত্রক শঙ্কিত, কারণ মোদী বিরোধিতার নামে আসলে ভারত-বিরোধিতাই তীব্র হচ্ছে বাংলাদেশে। এনআরসি-র পরে লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশিকে ধাক্কা দিয়ে নিজের দেশে পাঠানো হবে, এমন প্রচার কৌশলে ছড়িয়েছিল একটি প্রভাবশালী মহল। তার
পরে বিএসএফের গুলিতে চোরাকারবারি-পাচারকারীদের মৃত্যু কেন বেড়েছে, তা নিয়েও বিস্তর প্রচার চালানো হয়। দিল্লিতে সংঘর্ষের ঘটনার পরে এ বার ধর্মীয় বিভাজনের খেলাটিও শুরু হয়েছে। কট্টরপন্থী ইসলামি সংগঠন হেফাজতে ইসলামির আমির আল্লামা শফি বৃহস্পতিবার বিবৃতিতে সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘যাঁর হাতে গণহত্যার দাগ লেগে আছে, তার উপস্থিতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না। অবিলম্বে মোদীর রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণ বাতিল করা হোক।’’ ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমির ও চরমোনাই পির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম বলেন, ‘‘মোদীর সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ধর্মনিরপেক্ষ দেশটিকে উগ্র-সাম্প্রদায়িক দেশে রূপান্তর করেছে। এ ধরনের সাম্প্রদায়িক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে অতিথির বেশে প্রবেশ করানোর পরিকল্পনা ছাত্র-জনতা রুখে দেবে।’’ বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ নামে একটি সংগঠনও রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

যদিও শাসক দল আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিরোধিতা নস্যাৎ করে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা অস্বীকার করলে তা হবে কৃতঘ্নতা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই মোদীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সূত্রের বক্তব্য, শুধুমাত্র বিরোধী সমর্থকরাই নন, আওয়ামি লিগের তরুণ প্রজন্মও মোদীকে আমন্ত্রন জানানোয় ক্ষুব্ধ। তবে দলীয় নেতা-কর্মীদের বিষয়টি নিয়ে সংযত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাসিনার বক্তব্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী সম্মানিত অতিথি। এমন কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যেন তৈরি না-হয়, যাতে তিনি সফরই বাতিল করে দেন।

মোদী ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন নেতাকে আমন্ত্রণের প্রক্রিয়া চলছে ওই অনুষ্ঠানে। আওয়ামি লিগের নেতা এবং সাংসদ শেখ হেলালউদ্দিন ভারতীয় নেতাদের নিমন্ত্রণের দায়িত্বে রয়েছেন। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা, কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে সিপিএম এবং সিপিআই-এর কিছু নেতাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bangladesh Narendra Modi Seikh Hasina
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE