Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
সংবাদ সংস্থা

রাশিয়া, ক্লিন্টন ব্যক্তিগত এবং গোপনীয়...

সংবাদমাধ্যমের দাবি, ভোটের আগে ক্রেমলিন-ঘনিষ্ঠ আইনজীবী নাতালিয়া ভেসেলনিৎস্কায়ার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন জুনিয়র ট্রাম্প। বলা হচ্ছিল, ওই বৈঠকের মধ্যস্থতা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট পরিবারের পূর্ব পরিচিত তথা প্রাক্তন ব্রিটিশ সাংবাদিক রব গোল্ডস্টোন। অভিযোগ, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনকে ঘায়েল করার রসদ পাওয়া যাবে ভেবেই আলোচনায় রাজি হয়েছিলেন ট্রাম্প-পুত্র।

নাতালিয়া ভেসেলনিৎস্কায়া।

নাতালিয়া ভেসেলনিৎস্কায়া।

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৭ ০৩:০৫
Share: Save:

টক্কর কাঁটায়-কাঁটায়। আর প্রায় শেষ মুহূর্তে গিয়ে ‘ফিনিশিং লাইন’ ছুঁলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র।

গত কাল থেকে যা নিয়ে তেতে রয়েছে গোটা মার্কিন মুলুক, বিতর্কিত সেই ই-মেল কথোপকথন আজ ফাঁস করে দিল মার্কিন সংবাদমাধ্যম। কিন্তু তা আর ‘এক্সক্লুসিভ’ হলো কই? প্রেসিডেন্ট-পুত্র নিজেই যে তার কয়েক মিনিট আগে সবটাই পোস্ট করে বসে আছেন টুইটারে! যার বেশির ভাগেরই শিরোনাম— ‘রাশিয়া, ক্লিন্টন, প্রাইভেট অ্যান্ড কনফিডেনশিয়াল’!

সংবাদমাধ্যমের দাবি, ভোটের আগে ক্রেমলিন-ঘনিষ্ঠ আইনজীবী নাতালিয়া ভেসেলনিৎস্কায়ার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন জুনিয়র ট্রাম্প। বলা হচ্ছিল, ওই বৈঠকের মধ্যস্থতা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট পরিবারের পূর্ব পরিচিত তথা প্রাক্তন ব্রিটিশ সাংবাদিক রব গোল্ডস্টোন। অভিযোগ, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনকে ঘায়েল করার রসদ পাওয়া যাবে ভেবেই আলোচনায় রাজি হয়েছিলেন ট্রাম্প-পুত্র।

ই-মেল কথোপকথনেও তার প্রমাণ মিলেছে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট-পুত্র নিজেই তা হঠাৎ পোস্ট করতে গেলেন কেন? প্রেসিডেন্টের দাবি, তাঁর ছেলের সাদা মনে কাদা নেই। গোটা পর্বের মধ্যে আজই প্রথম মুখ খুলেছেন ট্রাম্প। ছেলে গোড়া থেকেই বলে আসছেন, ‘‘বাবা বৈঠকের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না।’’ আর ট্রাম্প বললেন, ‘‘ওর এই স্বচ্ছতা প্রশংসনীয়। আমার ছেলে উচ্চশিক্ষিত, তাই ভাল-মন্দের ফারাকটা ও ভালই বোঝে।’’ রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্প পরিবারের অশুভ আঁতাঁতের অভিযোগ উ়ড়িয়ে আসছে হোয়াইট হাউসও।

আরও পড়ুন: জিবুতিতে ঘাঁটি, নৌশক্তি বাড়াতে নজর বেজিংয়ের

কিন্তু বিরোধীরা মানছে কই! তাদের দাবি, সংবাদমাধ্যমে ই-মেল ফাঁস হচ্ছে জেনেই আগাম তা প্রকাশ করে এখন হাত ধুতে চাইছেন ট্রাম্প-পুত্র। গত শনিবার এই বৈঠকের কথা প্রথম সামনে আসায় প্রেসিডেন্ট-পুত্র জানিয়েছিলেন, শুধু শিশু দত্তক প্রকল্প নিয়েই সে দিন আলোচনা হয়েছিল। পরে বলেন, আইনজীবী গোড়ায় হিলারি-বধের অস্ত্র তুলে দেওয়ার কথা বলেও আখেরে কিছুই দেননি।

আর আজ তো সবটাই খুল্লমখুল্লা। ধোঁয়াশা তবু থাকছেই। যেমন, গোল্ডস্টোন প্রথম যে মেল-টা করেছিলেন, তাতে বলা হয়েছিল রাশিয়ার ‘ক্রাউন প্রসিকউটর’ সাক্ষাতে আগ্রহী। কিন্তু আদতে এমন কোনও পদ নেই রাশিয়ায়। সেই কারণেই কি শেষের দিকে এসে ‘রুশ সরকারি আইনজীবী’-র কথা বলেছিলেন গোল্ডস্টোন! ট্রাম্প জুনিয়র এক বারও কেন তা যাচাই না করলেন না, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও।

এ দিকে মেল থেকেই জানা যাচ্ছে, কী ভাবে ব্যক্তিগত ফোন নম্বর দিয়ে, বৈঠকের সময় একাধিক বার বদলের পরেও সমান আগ্রহ দেখিয়ে গিয়েছেন জুনিয়র ট্রাম্প। তাঁর সঙ্গে সে দিন ছিলেন ট্রাম্পের জামাই জ্যারে়ড কুশনার এবং ট্রাম্পের তৎকালীন প্রচার ম্যানেজার পল ম্যানাফোর্ট। অবশ্য তাঁরা এই বৈঠকের কথা আগাম জানতেন কি না, তা স্পষ্ট হয়নি। নাতালিয়ার দাবি, তিনি জানতেনই না যে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী।

ট্রাম্প কি কিছুই জানতেন না? প্রথম মেল-টিতেই গোল্ডস্টোন লিখেছিলেন, ‘‘বিষয়টি গোপনীয় বলেই ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সচিবের বদলে প্রথমে আপনার (জুনিয়র ট্রাম্প) সঙ্গেই যোগাযোগ করলাম।’’ যে ছেলের স্বচ্ছতায় আজ প্রশংসায় পঞ্চমুখ প্রেসিডেন্ট, সেই ছেলে যে এমন একটা বৈঠকের খবর বাবাকে জানাবে না, কিছুতেই মানতে চাইছেন না ডেমোক্র্যাটরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE