Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
SAARC

সার্ক: জোড়া লক্ষ্য সফল, দাবি দিল্লির

সন্ত্রাস এবং আলোচনা এক সঙ্গে চলতে পারে না— সাউথ ব্লক এই অবস্থান থেকে এক চুলও সরেনি।

সার্ক অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর সাথে বৈঠকে মোদী।—ছবি পিটিআই।

সার্ক অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর সাথে বৈঠকে মোদী।—ছবি পিটিআই।

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২০ ০৪:৩২
Share: Save:

বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য-সঙ্কটকে কাজে লাগিয়ে কিছুটা অভিনব ভাবেই দীর্ঘদিন পর সার্কের মঞ্চকে জাগিয়ে তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত কাল ভিডিয়ো সম্মেলনে পাকিস্তানকে ‘দর্শকাসনে’ রেখে সার্ক-এর বাকি প্রত্যেকটি দেশের সমীহ আদায় করে নিতে সক্ষম হয়েছে ভারত— এমনটাই আজ দাবি করছে সাউথ ব্লক। সরকারি সূত্রের বক্তব্য, ইসলামাবাদ যে কিছুটা হলেও বেসুরে বাজবে, সেটা হিসাবের মধ্যেই ছিল। কিন্তু এই সঙ্কটের সময়ে সার্ককে জাগিয়ে তোলার যে দু’টি উদ্দেশ্য ছিল, মোটের উপর তার সফল সূচনা করা গিয়েছে বলেই মনে করছেন সাউথ ব্লকের কর্তারা।

কী সেই দু’টি উদ্দেশ্য ?

সরকারি সূত্রের মতে, প্রথমটি কূটনৈতিক। দ্বিতীয়টি অবশ্যই করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কৌশলকে আরও পোক্ত করা। প্রথমত, সার্ককে দীর্ঘদিন অকেজো করে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তর থেকে বারবার আঙুল উঠেছে নয়াদিল্লির দিকে। বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঠিক মতো সামলাতে না-পেরে গোটা অঞ্চলের আর্থিক এবং সংযোগ ব্যবস্থাকে শিকেয় তুলে দিয়েছে মোদী সরকার। সার্কের বদলে বিমস্টেককে শক্তিশালী করার চেষ্টা হয়েছে। কাল মোদীর উদ্যোগে ভিডিয়ো কনফারেন্সে সার্কের দরজা আবার নতুন করে খোলা গেল বলেই মনে করা হচ্ছে। শুধু এটুকুই নয়, এর ফলে পাকিস্তানকে চাপেও ফেলে দেওয়া গিয়েছে। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান যদি মোদীর এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতেন, তা হলে করোনার ‘অতিমারি’র মধ্যে আন্তর্জাতিক স্তরে তাঁকে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়তে হত। আবার এটাও ঠিক যে, প্রস্তাবে সাড়া দিলেও ইমরান নিজে কনফারেন্সে আসেননি। কূটনীতিকদের বক্তব্য, তিনি গত আট মাস ধরে তীব্র ভারত-বিরোধী অবস্থানে যে রকম অনড় রয়েছেন, তাতে মোদীর ডাকে নিজে ভিডিয়ো কনফারেন্সে হাজির হলে, পাকিস্তানের ঘরোয়া রাজনীতিতে ভুল বার্তা যেত।

ঘরোয়া ভাবে বিদেশ মন্ত্রক জানাচ্ছে, করোনাভাইরাস নিয়ে সার্কের অন্যান্য দেশের পাশাপাশি পাকিস্তানের সঙ্গেও সমন্বয়ের চেষ্টা করার অর্থ এই নয় যে, সন্ত্রাসবাদের প্রশ্নে নেওয়া ভারতের অবস্থানকে লঘু করা হচ্ছে। সন্ত্রাস এবং আলোচনা এক সঙ্গে চলতে পারে না— সাউথ ব্লক এই অবস্থান থেকে এক চুলও সরেনি। তবে কর্তারপুর করিডরের ক্ষেত্রে শুধুই ধর্মীয় কারণে দু’পক্ষের মধ্যে যে রকম ‘আংশিক সমন্বয়’ ঘটানো হয়েছিল, এ-ও ঠিক তেমনই। ‘আংশিক সমন্বয়’-এর আগে বা পরে কিছু থাকে না। ভাইরাস সঙ্কট নিয়েও ‘আংশিক সমন্বয়’ ঘটানো হবে মাত্র। পাকিস্তানের সঙ্গে থমকে থাকা সামগ্রিক আলোচনা শুরু করার সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই।

ভারতের সঙ্গে নেপালের খোলা সীমান্ত রয়েছে। ভুটানের সঙ্গে চলে ভিসাহীন অবাধ যাতায়াত। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং মলদ্বীপের সঙ্গেও ভারতের প্রাত্যহিক আদানপ্রদান বিস্তর। ফলে নিজের ঘর ভাইরাসমুক্ত রাখার পাশাপাশি এই দেশগুলিও যাতে নিরাপদ থাকে সেটা দেখাও জরুরি। বৈঠকে সেই সামগ্রিক সমন্বয় সাধনেরই চেষ্টা করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

SAARC Coronavirus Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE