‘বসরা ব্রিজ’ নামে এই প্রমোদতরীটি সাদ্দাম তৈরি করিয়েছিলেন ১৯৮১ সালে। ছবি: রয়টার্স।
মার্কিন সেনার হাতে ধরা পড়ার সময়েও তাঁর প্রথম কথা ছিল, “আমি সাদ্দাম হুসেন। ইরাকের প্রেসিডেন্ট।” ফাঁসিতে ঝোলার আগে এ হেন ইরাকের গদিচ্যুত সম্রাটের বেশিরভাগ সম্পত্তিই বাজেয়াপ্ত করে নিয়েছিল ইরাক সরকার। রয়ে গিয়েছিল শুধুমাত্র একটি। দীর্ঘদিন ধরেই সেটি ছিল লোকচক্ষুর অন্তরালে। ২০১০ সালে ফের তার মালিকানা ফিরে পেয়েছে ইরাক। সেটি একটি বিশালাকায় প্রমোদতরী।
‘বসরা ব্রিজ’ নামে ওই প্রমোদতরীটির বর্তমান ঠিকানা ইরাকের বসরা শহর। দৈর্ঘ্যে ৮২ মিটার এই প্রমোদতরীটি সাদ্দাম তৈরি করিয়েছিলেন ১৯৮১ সালে। যেমন বিলাসবহুল এর অন্দরসজ্জা তেমনই উন্নত এর পরিকাঠামো। কিন্তু, আশ্চর্যের বিষয় জাহাজটিতে নাকি একটি দিনের জন্যও পা পড়েনি প্রাক্তন ইরাকি প্রেসিডেন্টের।
১৯৯১ সালে ইরাক-ইরান যুদ্ধের সময়েই জাহাজটি বেদখল হয়ে যায়। তারপর মোটামুটি লোকচক্ষুর আড়ালেই চলে গিয়েছিল সেটি। শোনা গিয়েছিল, জর্ডনের সমুদ্রতটে নাকি রাখা আছে জাহাজটি।
প্রমোদতরীটির অন্দরসজ্জা চোখে পড়ার মতো।
২০০৩ সালে মার্কিন সেনার হাতে সাদ্দাম ধরা পড়ার পর তাঁর বেশিরভাগ সম্পত্তিই বাজেয়াপ্ত করে নেয় ইরাক সরকার। কিন্তু, খোঁজ পাওয়া যায়নি এই প্রমোদতরীর। দীর্ঘ আইনী লড়াইয়ের পর ২০১০ সালে প্রমোদতরীর মালিকানা ফের ফিরে পায় ইরাক সরকার।
দেখুন ভিডিয়ো:
‘বসরা ব্রিজ’-এর অন্দরসজ্জা হার মানিয়ে দেবে যে কোনও পাঁচতারা হোটেলকে। ইরাকের প্রেসিডেন্টের জন্য নিপুণ ভাবে সাজানো হয়েছিল জাহাজটি। প্রেসিডেন্টের জন্যই ছিল মূল্যবান আসবাবে ঠাসা আলাদা একটি কোয়ার্টার। তা ছাড়াও ছিল ১৭টি গেস্ট রুম, ১৮টি কেবিন, জাহাজের কর্মীদের জন্য আলাদা থাকার জায়গা, রান্নাঘর, ঝাঁ চকচকে বাথরুম এবং ডাক্তারের ক্লিনিক। উপযুক্ত সংরক্ষণ না হলেও এর বেশিরভাগ অংশ এখনও অবিকৃত আছে বলেই জানিয়েছেন বর্তমানে জাহাজটির দায়িত্বে থাকা পাইলট আবদুল জাহারা আবদুল মাহদি সালেহ। জাহাজটির দু’টি ইঞ্জিন এবং জেনারেটরগুলি এখনও সচল। তবে জাহাজটিকে সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করা দরকার বলে জানিয়েছেন তিনি।
জাহাজটির অধিকাংশ যন্ত্রপাতিই এখনও সচল। খুব দ্রুত শুরু হবে এর সংরক্ষণের কাজ।
জাহাজটির মালিকানা কার হাতে যাবে সেটাই এখন প্রধান চিন্তা ইরাক সরকারের। উপযুক্ত ক্রেতার অভাবে গত দু’বছর ধরে জাহাজটি বসরা ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছিল।
আরও পড়ুন:
কিমের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করলেন ট্রাম্প
টেপ দিয়ে একরত্তির পা বাঁধলেন ডে-কেয়ার কর্মী
সম্প্রতি বেশ কিছুদিন বসরার দক্ষিণ উপকূল বন্দরে নাবিকদের থাকার জায়গা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল ‘বসরা ব্রিজ’কে। তবে, পাকাপাকি ভাবে নাবিকদের জন্য হোটেল হিসেবেই প্রমোদতরীটিকে ব্যবহার করা হবে বলে মনে করছে সরকার। বসরা বন্দরের এক মুখপাত্রের কথায়, “নাবিকদের বিশ্রামের জন্য বসরা বন্দরে একটা থাকার জায়গা প্রয়োজন। এই প্রমোদতরীর চেয়ে ভাল জায়গা আর কিছু হয় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy