Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

চরম বিতর্কে কোর্তেজ়ের কাজ ছাড়লেন সৈকত

সৈকত এ বার যোগ দিচ্ছেন ‘নিউ কনসেনসাস’ নামে একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্কে।

সৈকত চক্রবর্তী।

সৈকত চক্রবর্তী।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৯ ০০:২৪
Share: Save:

গত বছর নিউ ইয়র্কের ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি আলেকজ়ান্দ্রিয়া ওকাসিয়ো কোর্তেজ়ের জয়ের পিছনে কার্যকর ভূমিকা নিয়েছিলেন যে বাঙালি, সেই সৈকত চক্রবর্তী ইস্তফা দিয়েছেন ‘চিফ অব স্টাফ’ পদ থেকে। স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিকে চ্যালেঞ্জ করে গত জুন মাসে একটি টুইটে সৈকত লিখেছিলেন, হাউসের নরমপন্থী ডেমোক্র্যাটরা ‘পৃথকীকরণের’ পক্ষে। টুইট ঘিরে চরম বিতর্ক তৈরি হয় দলের মধ্যে। টুইট মুছে ফেললেও বিতর্ক থামছিল না। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, মূলত সেই কারণেই সরলেন সৈকত।

সৈকত এ বার যোগ দিচ্ছেন ‘নিউ কনসেনসাস’ নামে একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্কে। ‘নয়া সবুজ চুক্তি’ (‘গ্রিন নিউ ডিল’) নিয়ে যে কাজে জড়িয়েছিলেন সৈকত, এই থিঙ্ক ট্যাঙ্কটি তার প্রচারে কাজ করে। শুধু সৈকত নন, তাঁর সঙ্গে কোর্তেজ়ের দলের যোগাযোগ-অধিকর্তা করবিন ট্রেন্টও পদ ছাড়ছেন।

ক্ষমতার অলিন্দে থেকে প্রতিষ্ঠান-বিরোধী পদক্ষেপ করতে করতে ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি ও সহযোগীদের চটিয়ে ফেলেছিলেন সৈকত। দলে উদারপন্থীদের প্রতি তাঁর সমর্থন ছিল। পেলোসির রাজনৈতিক ক্ষমতা সম্পর্কে কিছুটা ‘অবজ্ঞা’ ছিল সৈকতের মনে। তিনি যে ভাবে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের চ্যালেঞ্জ করছিলেন, তা কংগ্রেসে অনেকেই ভাল চোখে দেখছিলেন না। তাঁদের অনেকেরই বক্তব্য ছিল, নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় মধ্যে দিয়ে যিনি আসেননি, তাঁর মুখ থেকে এ ধরনের মন্তব্য নিয়মভঙ্গের পর্যায়ে পড়ে।

কিছু দিন আগে সীমান্তে সাহায্যের জন্য প্রস্তাবিত উদাহরপন্থী একটি ত্রাণ-প্যাকেজ বাস্তবায়িত হয়নি নরমপন্থী ডেমোক্র্যাটদের জন্য। এই ঘটনার পরে সৈকত নরমপন্থী ডেমোক্র্যাটদের ‘নয়া সাদার্ন ডেমোক্র্যাট’ আখ্যা দেন। তিনি গত মাসে টুইটে লিখেছিলেন, ‘‘আর্থিক দিকে থেকে রক্ষণশীল কিন্তু সামাজিক ভাবে উদার এই ডেমোক্র্যাটদের ‘নিউ সাদার্ন ডেমোক্র্যাট’ বলা যায়। অতীতে ৪০-এর দশকে সাদার্ন ডেমোক্র্যাটরা (১৯ শতকে দক্ষিণ আমেরিকার শ্বেতাঙ্গ ডেমোক্র্যাটদের এই ভাবেই ডাকা হত) যা করতেন, এঁরা সেটাই করছেন।’’ বর্ণ অথবা জাতের ভিত্তিতে পৃথকীকরণ করার প্রক্রিয়া যখন নীতিগত ভাবে বন্ধ করার কথা বলা হচ্ছে, তখন সাদার্ন ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে অনেকের তাতে সায় ছিল না।

বিতর্ক শুরু হতেই নিজের টুইট মুছে দেন সৈকত। তিনি জানিয়েছিলেন, কাউকে ব্যক্তিগত ভাবে আঘাত দেওয়ার জন্য ওই পোস্ট তিনি করেননি। তবে নিজের যুক্তি থেকে সরেও যাননি।

স্পিকার পেলোসি জানিয়ে দেন, তিনি কাউকে কিছু শেখাতে চান না। পাশাপাশি এ-ও জানান, ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধিদের অনেকেই তাঁর কাছে এসে সৈকতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। এই মতানৈক্যের আবহে পেলোসি তাঁর দলের সদস্যদের সঙ্গে রুদ্ধ-দ্বার বৈঠকে বসেন। তাঁদের বুঝিয়ে বলেন, ‘‘দল নিয়ে কারও কোনও আপত্তি বা সমস্যার কথা মনে হলে আমাকে এসে জানান। কিন্তু টুইট করে সদস্যের বিরুদ্ধে কিছু বলবেন না। আর কখনওই ভাববেন না, সেটা আমরা চুপচাপ মেনে নেব।’’ ডেমোক্র্যাটদের অন্দরে দাবি, সৈকতকে ছেঁটে ফেলার জন্য অনেকে ব্যক্তিগত ভাবেও আলেকজ়ান্দ্রিয়ার উপরে চাপ তৈরি করেছিলেন।

সৈকত জানিয়েছেন, প্রসঙ্গের বাইরে গিয়ে তাঁর সমালোচনা করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের গণতন্ত্র আক্ষরিক ভাবেই ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE