Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দক্ষিণ কোরিয়ায় ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট

তাঁর বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছিল বেশ কয়েক মাস ধরে। তাই চাপ বাড়ছিল পার্লামেন্টের উপর। এ বার পার্লামেন্টের সদস্যরাও তাঁকে ইমপিচ করার জন্য ভোট দিলেন।

জরুরি বৈঠকে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট পাক কিউয়েন-এ। রয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রীও। সোলে। — রয়টার্স

জরুরি বৈঠকে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট পাক কিউয়েন-এ। রয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রীও। সোলে। — রয়টার্স

সংবাদ সংস্থা
সোল শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৫
Share: Save:

তাঁর বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছিল বেশ কয়েক মাস ধরে। তাই চাপ বাড়ছিল পার্লামেন্টের উপর। এ বার পার্লামেন্টের সদস্যরাও তাঁকে ইমপিচ করার জন্য ভোট দিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় ক্ষমতাচ্যুত করা হলো দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পাক কিউয়েন এ-কে। সাসপেন্ড হওয়া প্রেসিডেন্টের হয়ে অস্থায়ী ভাবে কাজ চালাবেন প্রধানমন্ত্রী হোয়াং কিও-আন। ক্যাবিনেট বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে দেশকে সুষ্ঠু ভাবে চালিত করার চেষ্টা করবেন তিনি। দেশের সেনা প্রধানের দায়িত্বও এখন সাময়িক ভাবে প্রধানমন্ত্রীর হাতেই।

তবে পাককে আপাতত ক্ষমতা থেকে সরানো হলেও তাঁর সরকারকে ফেলে দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে একমাত্র দেশের সাংবিধানিক আদালত। আগামী ছ’মাসের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আদালতকে। পাকের সরকার পড়ে গেলে ষাট দিনের মধ্যে দেশে আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে হবে। তবে পাকই প্রথম নন, এর আগেও এক প্রেসিডেন্টকে ইমপিচমেন্টের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। তবে প্রবল জনরোষের পর তাঁকে ফের ক্ষমতায় ফেরানো হয়।
মূলত দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের অভিযোগ রয়েছে দেশের প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট পাকের বিরুদ্ধে। নিজের বান্ধবী ও দীর্ঘদিনের সঙ্গী চই সুন-সিলকে সরকারের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে সামিল করতেন পাক। এই বান্ধবীর বাবার হাত ধরেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি পাকের। তবে তাঁর বাবাও আঠারো বছর ধরে দেশের শাসনভার সামলেছেন। ১৯৭৯ সালে খুন তিনি। তারও আগে খুন হন পাকের মা। অনাথ পাকের তাই অভিভাবকের মতো ছিলেন চইয়ের বাবা চই তাই-মেন। চইয়ের পরিবারের প্রতি তিনি নানা ভাবে কৃতজ্ঞ, তা একাধিক বার স্বীকারও করেছেন পাক।
ইমপিচমেন্ট হতে চলেছে বুঝে আগেই বেশ কয়েক বার দেশবাসীর কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন পাক। তাঁর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা চই লিখে দিয়েছিলেন বলেও মেনে নিয়েছেন তিনি। কিন্তু চইয়ের বিরুদ্ধে ওঠা একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ কোনও ভাবেই মানতে চাননি পাক। তার ফলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ আরও বাড়তে থাকে।
আজ ইমপিচমেন্ট নিয়ে ভোটের সময় বহু প্রতিবাদী মানুষ পার্লামেন্টের সামনে জড়ো হন। সংখ্যাটা হাজার দশেক তো হবেই। কেউ কেউ তো কাল রাতেই চলে এসেছিলেন। প্রবল শীতের মধ্যেও তাঁরা রাতটা কাটিয়েছেন রাস্তায়।
বিরোধী নেতা কিম কোয়ান ইয়ং আজ বলেছেন, ‘‘ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সামনে জড়ো হওয়া ভিড়টার গর্জন শুনতে পাচ্ছেন? পুরনোকে সরিয়ে নতুন এক দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য দরজা খুলে দিতে হবে। দেশের মানুষ সেই রাস্তাটা দেখিয়ে দিয়েছেন। এ বার বাকি (ইমপিচমেন্ট) কাজটাও দ্রুত সেরে ফেলতে হবে।’’
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে আজ ক্যাবিনেট বৈঠকে মুখ খুলেছিলেন পাক। বলেছেন, ‘‘দেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছি। আমার অজ্ঞতার জন্যই এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাঁদের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

South Korea
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE