Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

সঙ্কটের শ্রীলঙ্কায় রণতুঙ্গার রক্ষীর গুলিতে মৃত এক

গুলি চালিয়েছেন শ্রীলঙ্কার বিশ্বজয়ী ক্রিকেট অধিনায়ক তথা সদ্য-প্রাক্তন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী অর্জুন রণতুঙ্গার দেহরক্ষীরা।

গুলিচালনার পর সেনার কড়া নজর। ছবি: এএফপি।

গুলিচালনার পর সেনার কড়া নজর। ছবি: এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
কলম্বো শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:২২
Share: Save:

প্রেসিডেন্ট এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর স্নায়ুযুদ্ধ চলছিল গত দু’দিন ধরে। সেই সাংবিধানিক সঙ্কটে আজ গুলিও চলল শ্রীলঙ্কায়। মৃত্যু হল এক জনের।

গুলি চালিয়েছেন শ্রীলঙ্কার বিশ্বজয়ী ক্রিকেট অধিনায়ক তথা সদ্য-প্রাক্তন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী অর্জুন রণতুঙ্গার দেহরক্ষীরা। নিজেকে প্রধানমন্ত্রী বলে দাবি করে এখনও সরকারি বাসভবনেই রয়েছেন রনিল বিক্রমসিংঘে। তাঁর মন্ত্রিসভায় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ছিলেন রণতুঙ্গা। সিলন পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনে নিজের পুরনো মন্ত্রকেই আজ ঢুকতে গিয়ে বাধা পান তিনি। সূত্রের দাবি, প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনার নিয়োগ করা নয়া প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের সমর্থকেরা হাজির হয়ে যান মন্ত্রকে। রণতুঙ্গার বিরুদ্ধে স্লোগান তোলেন তাঁরা। রনিলের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত রণতুঙ্গা। তাঁর শিবিরের দাবি, রণতুঙ্গাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়। তখনই গুলি চালান দেহরক্ষীরা। তিন জন বিক্ষোভকারী আহত হন। পরে মৃত্যু হয় এক জনের।

সিরিসেনার অস্বস্তি বাড়িয়ে রনিলকে এখনও প্রধানমন্ত্রীই মানছেন পার্লামেন্টের স্পিকার কারু জয়সূর্য। রনিলের নিরাপত্তা ও সরকারি গাড়ি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তাঁকে সরকারি বাসভবন থেকে হটাতে আদালতে যাওয়ার কথাও ভাবছে সরকার। কিন্তু স্পিকারের বক্তব্য, ‘‘জনমতের জোরে শাসনের অধিকার পাওয়া বিক্রমসিংঘেকে প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা ফিরিয়ে দেওয়া হোক। অন্য কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ না-করা পর্যন্ত তা কেড়ে নেওয়া যায় না।।’’ সিরিসেনা এবং রাজাপক্ষের জোটের থেকে আসন সংখ্যায় এগিয়ে থাকা রনিলও চাইছেন সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে। কিন্তু সিরিসেনা আগামী ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত পার্লামেন্টের অধিবেশন স্থগিত করে রেখেছেন।

শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সংবিধান মেনে শান্তিপূর্ণ পথে চলতে অনুরোধ করেছে ভারত, আমেরিকা, কানাডা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেন, ‘‘বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হিসেবে আমরা আশা করি, শ্রীলঙ্কায় সাংবিধানিক প্রক্রিয়া মেনে চলা হবে। গুরুত্ব দেওয়া হবে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে।’’ দিল্লি জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কার উন্নয়ন প্রকল্পেগুলিতে সহযোগিতা জারি থাকবে। তবে রাজাপক্ষেকে অভিনন্দন জানিয়েছেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। যা দিল্লির পক্ষে অস্বস্তির।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের ব্যাখ্যা, জোট বেঁধে লড়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষেকে সরানোর সময়ে রনিল এবং সিরিসেনার মধ্যে চুক্তি হয়েছিল, ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দু’জনেই প্রেসিডেন্ট হবেন। কিন্তু সিরিসেনা পুনর্নির্বাচিত হতে ইচ্ছুক। এ নিয়েই তিক্ততা। সিরিসেনার বক্তব্য, ‘‘ঔদ্ধত্যের মাসুল দিয়েছেন রনিল বিক্রমসিংঘে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE