সুষমা স্বরাজ। ছবি: পিটিআই।
চার বছর আগে ইরাকে অপহৃত ৩৯ ভারতীয় আর বেঁচে নেই। মঙ্গলবার রাজ্যসভায় এ কথা জানালেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। ইরাকে কর্মরত ওই দিনমজুরদের অপহরণ করেছিল ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিরা। আইএস জঙ্গিরাই তাঁদের খুন করেছে বলে দাবি সুষমার।
মসুলের একটি গণকবর থেকে উদ্ধার হয়েছে ওই ভারতীয়দের দেহাবশেষ। বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছেন, ডিপ পেনিট্রেটিভ স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি থেকেই মসুলের ওই গণকবরে দেহাবশেষের সন্ধান মেলে। সুষমা বলেন, “মৃতদেহের স্তূপের মধ্যে থেকে ভারতীয়দের দেহাবশেষ চিহ্নিত করে বাগদাদে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসাটাই চ্যালেঞ্জের কাজ ছিল।” ওই স্তূপের মধ্যে ৩৯টি দেহাবশেষ এমন ছিল, যার লম্বা চুল, ইরাকিদের মতো জুতো ছিল না। তা দেখেই ওই ৩৯টি দেহাবশেষের ডিএনএ পরীক্ষা করানো হয়। তাতেই জানা যায়, ওই ৩৮ জন আসলে চার বছর আগের অপহৃত ভারতীয়। বাকি একটি দেহাবশেষের ডিএনএ-এর ৭০ শতাংশ মিল পাওয়া গিয়েছে।
সুষমা জানিয়েছেন, সোমবারই ওই পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। এ দিন তিনি বলেন, “নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়ার পরেই জানাচ্ছি, ওই ৩৯ জন মৃত। প্রমাণ হাতে মেলার পরই মৃতদের পরিবারকে এ কথা জানাতে চেয়েছি আমরা।”
আরও পড়ুন
বিরোধীদের হট্টগোলে আটকে গেল অনাস্থাও
ওই ৩৯ জনের বেশির ভাগই পঞ্জাবের বাসিন্দা। এ ছাড়া রয়েছেন হরিয়ানা, বিহার, হিমাচল প্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গের কয়েক জন। ২০১৪-তে মসুলের দখল নেওয়ার পর থেকেই প্রায় ১০ হাজার ভারতীয় ইরাক ছাড়তে শুরু করেন। সে সময়ই অগণিত মানুষদের বন্দি করে আইএস জঙ্গিরা। তার মধ্যে ৩৯ জন ভারতীয়ও ছিল। কাজের খোঁজেই ইরাকে গিয়েছিলেন তাঁরা। মসুলের দখল নেওয়ার পর তাঁদের অপহরণ করে জঙ্গিরা।
I’m shocked to hear that 39 Indians who were in captivity since 2014, in Iraq, are now confirmed dead.
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) March 20, 2018
My deepest condolences to the families of those who have lived in hope, that their loved ones will return unharmed. My thoughts and prayers are with all of you today.
গত বছরের জুলাইয়ে সংসদে সুষমা জানিয়েছিলেন, ওই ভারতীয়দের যে আইএস জঙ্গিরা খুন করেছে, এমন কোনও প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। সুষমার ঘোষণার পরই সরকার পক্ষের বিরুদ্ধে সরব হন বিরোধী নেতারা। মৃতদের পরিবারকে মিথ্যে আশা দেওয়া ছাড়াও দেশকে ভুল পথে চালিত করেছে সরকার, এমন অভিযোগ করে কংগ্রেস। সেই প্রসঙ্গ তুলেই কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদের মন্তব্য, “গত বছরই সংসদে সুষমা জানিয়েছিলেন ওই ভারতীয়রা বেঁচে আছেন।” তবে সুষমার দাবি, “আমরা কাউকেই ভুল পথে চালিত করিনি। আমরা এটাই বলেছিলাম, যথাযথ প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত কাউকেই মৃত বলে ঘোষণা করা যায় না।” ওই দেহাবশেষগুলি ভারতে ফিরিয়ে আসতে একটি বিশেষ বিমানে ইরাক রওনা হবেন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ।
আরও পড়ুন
স্ত্রী ও মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মেয়েকে খুন করে নির্বিকার!
ওই ৩৯ জনের মধ্যে রয়েছে মনজিন্দরের দেহাবশেষও। এ দিনের ঘোষণায় মুখ খুলেছে মনজিন্দরের বোন গুরপিন্দর কউর। সুষমার সঙ্গে এ নিয়ে কথাও বলতে চেয়েছিলেন গুরপিন্দর। তবে এ দিন টেলিভিশনের পর্দায় সুষমার ঘোষণা শুনে তাতে শোকে ভেঙে পড়েছেন তিনি। তিনি বলেন, “চার বছর ধরে আমাকে বলা হয়েছে, তাঁরা বেঁচে রয়েছে। আমি জানি না, আর কী বিশ্বাস করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy