Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

প্রতিবাদেই ভাল আছে গ্রেটা

তিন থেকে চার বছর কেটেছে অবসাদে। সেই দিনগুলোয় সুইডিশ কিশোরীকে লড়তে সাহায্য করেছে তার আন্দোলনই।

গ্রেটা থুনবার্গ

গ্রেটা থুনবার্গ

সংবাদ সংস্থা 
স্টকহলম শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫:১৮
Share: Save:

তিন থেকে চার বছর কেটেছে অবসাদে। সেই দিনগুলোয় সুইডিশ কিশোরীকে লড়তে সাহায্য করেছে তার আন্দোলনই। এখন কাজেই সে খুশি। ব্রিটিশ চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে এ কথা জানিয়েছেন গ্রেটা থুনবার্গের বাবা স্বান্তে থুনবার্গ। তবে তাঁর দাবি, অবসাদ থেকে বেরিয়ে এলেও মেয়ের এখন উদ্বেগ, আন্তর্জাতিক খ্যাতির সঙ্গে সে পাল্লা দেবে কী ভাবে!

ব্রিটিশ চ্যানেলের ওই অনুষ্ঠানে ষোড়শী গ্রেটা নিজেও উপস্থিত ছিল। তার সঙ্গে ছিলেন প্রবীণ পরিবেশবিদ স্যর ডেভিড অ্যাটেনবরো। গ্রেটার প্রশংসা করেন তিনিও। গ্রেটা নিজে বলেছে, ২০১৯ একটা অদ্ভুত বছর। লক্ষ লক্ষ কিশোর-কিশোরী স্কুল বন্ধ করে জলবায়ু-পরিবর্তন নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছে।

সাক্ষাৎকারে গ্রেটার বাবা জানিয়েছেন, তিনি প্রথম ভেবেছিলেন, স্কুল বন্ধ করে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আন্দোলন করতে যাওয়া নিতান্তই ‘বাজে ভাবনা’। গ্রেটা যে সময়ে অবসাদের মধ্যে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছে, সে সময়কার কথাও বলেছেন তার বাবা। ‘‘ও কথা বলত না। খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। প্রায় তিন মাস ঠিক করে খায়নি। মোটের উপরে এক বছর ধরে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছিল। বাবা হিসেবে এর চেয়ে বড় দুঃস্বপ্ন আর কী হতে পারে!’’— বলেছেন স্বান্তে।

তাঁর স্ত্রী, অপেরা গায়িকা মালেনা এর্নমান সেই সময়ে কাজ বন্ধ করে বাড়িতে মেয়েকে সঙ্গ দিয়েছিলেন। সঙ্গ দিতেন গ্রেটার বাবাও। চিকিৎসকের সাহায্য তো ছিলই। স্বান্তে জানিয়েছেন, তিন জনে মিলে বেশি বেশি সময় এক সঙ্গে কাটানোর চেষ্টা করেছিলেন। এই সময়েই জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা শুরু। স্বান্তে আর মালেনা মানবাধিকার নিয়ে কাজ করলেও জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে ততটা ওয়াকিবহাল ছিলেন না বলে জানিয়েছেন। স্বান্তের কথায়, ‘‘গ্রেটা ভাবত, আমরা সব বড়সড় ভণ্ড!’’ মেয়ের কাছে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেছেন তাঁরা। মেয়ে বুঝিয়েছে, মানবাধিকার নিয়ে কাজ পরিবেশ বাদ দিয়ে হয় না। তার পর থেকে গ্রেটার বাবা-মা পরিবেশ সচেতন হয়ে অনেক কিছু করতে শুরু করেছেন।

স্বান্তে ‘ভেগান’ হয়ে গিয়েছেন। মালেনা বিমানে ওড়া বন্ধ করে দিয়েছেন। স্বান্তে বলেছেন, ‘‘আমি যা করেছি, তা করা উচিত বলেই করেছি। তবে যত না পরিবেশের জন্য করেছি, তার চেয়েও বেশি করেছি মেয়েটার কথা ভেবে।’’ এই সূত্রেই তিনি বলেছেন, গ্রেটা স্কুল বন্ধ করে এই সব আন্দোলনে নামছে দেখে প্রথমে ভেবেছিলেন, ঠিক হচ্ছে না। স্বান্তের মন্তব্য, ‘‘সামনে এগিয়ে এসে আপনার সন্তান যখন জলবায়ু পরিবর্তনের মতো একটা বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, তখন প্রথমে একটু উদ্বেগ তো হয়। এক জন অভিভাবক হিসেবে আপনি প্রথমে সেটা চাইবেন কেন?’’

এখন সেই দিনগুলো ফিরে দেখতে গিয়ে স্বান্তে বলছেন, মেয়ের পরিবর্তন দেখে তাঁর ভাল লাগে। সব চেয়ে বড় কথা, মেয়ে এই কাজের মধ্যে দিয়ে খুশি রয়েছে। বছর গড়ালেই ১৭-য় পা দেবে গ্রেটা। বাবার কথায়, ‘‘ও নেচে বেড়ায়। হা হা করে হাসে। আমরা খুব মজা করি। এখন সব ঠিকঠাক।’’

সমালোচকদের তির ধেয়ে এলে? সেটা অসম্ভব দক্ষতার সঙ্গে সামলে নেয় বিশ্বনেতাদের ‘হাউ ডেয়ার ইউ’ বলা গ্রেটা, জানাচ্ছেন গর্বিত বাবা। তাঁর কথায়, ‘‘জানি না কী ভাবে ও পারে সেটা। কিন্তু ও এ সব হেলায় উড়িয়ে দেয়। গোটা বিষয়টাই ওর কাছে এত হাস্যকর!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Greta Thunberg Interview Svante Thunberg
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE