Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভুল করে চিনের দিকে ভয়ঙ্কর ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে দিল তাইওয়ান!

মারাত্মক ভুল! নাকি বিপজ্জনক অসতর্কতা! একে কী বলা হবে, বুঝতে পারছেন না তাইওয়ান নৌসেনার আধিকারিকরা। শুক্রবার সকালে যে ঘটনা ঘটেছে চিন সাগরে, তাতে ভয়ঙ্কর একটা যুদ্ধ বাঁধতেই পারত। কারণ তাইওয়ানের একটি মিসাইল শিপ এ দিন সকালে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে চিনের দিকে।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৬ ১৩:৫৮
Share: Save:

মারাত্মক ভুল! নাকি বিপজ্জনক অসতর্কতা!

একে কী বলা হবে, বুঝতে পারছেন না তাইওয়ান নৌসেনার আধিকারিকরা।

শুক্রবার সকালে যে ঘটনা ঘটেছে চিন সাগরে, তাতে ভয়ঙ্কর একটা যুদ্ধ বাঁধতেই পারত। বলছে আন্তর্জাতিক মহল। কারণ তাইওয়ানের একটি মিসাইল শিপ এ দিন সকালে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে চিনের দিকে। তাইপেই জানিয়েছে, স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষিপ্ত হয়নি। ভুলবশত মিসাইলটি ছুটে গিয়েছে চিনের দিকে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

তাইওয়ানের নৌসেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে দক্ষিণ তাইওয়ানের একটি নৌ-ঘাঁটিতে রুটিন ড্রিল চলছিল। সে সময়েই একটি মিসাইল শিপ থেকে তাইওয়ানের নিজেদের তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র হিউং-ফেং-৩ চিনের দিকে নিক্ষিপ্ত হয়। ৩০০ কিলোমিটার পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র অবশ্য পুরোটা পথ অতিক্রম করেনি। ৭৫ কিলোমিটার উড়ে গিয়ে তা সমুদ্রেই আঘাত হানে। কিন্তু ক্ষেপণাস্ত্রটি পুরো পাল্লা অতিক্রম করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারত।

যে ক্ষেপণাস্ত্রটি ছুটতে শুরু করেছিল চিনের দিকে, সেটি এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার বিধ্বংসী মিসাইল। এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার হল যে কোনও নৌসেনার হাতে থাকা সবচেয়ে বড় যুদ্ধজাহাজ। তাইওয়ানের এই মিসাইলটি সেই ধরনের যুদ্ধজাহাজ ধ্বংসের জন্যই তৈরি হয়েছে। ভুলক্রমে ছুটে গেলেও, চিনের কোনও এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার বা অন্য কোনও যুদ্ধজাহাজ যদি সত্যিই ধ্বংস হত, তা হলে তাইওয়ান আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করত না চিন।

তাইওয়ানের সঙ্গে চিনের সম্পর্ক এমনিতেই মধুর নয়। ১৯৪৯ সাল থেকেই চলে আসছে বৈরিতা। গৃহযুদ্ধের পরে চিনের মূল ভূখণ্ডে কমিউনিস্ট সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। আগের সরকার মূল ভূখণ্ড থেকে উৎখাত হলেও তাইওয়ান দ্বীপপুঞ্জে ক্ষমতা ধরে রাখে। চিন যদিও তাইওয়ানকে স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে, স্বীকৃতি দেয়নি কোনও দিনই। কিন্তু আমেরিকা সহ বেশ কয়েকটি দেশ তাইওয়ানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখেই চলে। ২০১৬-র জানুয়ারিতে কট্টর চিন বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টি তাইওয়ানের ক্ষমতা দখল করার পর থেকে বেজিং-তাইপেই সম্পর্কে আরও অবনতি হয়েছে। চিনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে আমেরিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়িয়েছে তাইওয়ান। আমেরিকার কাছ থেকে মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম কিনে তার ব্যবহারের মহড়া দেওয়ার প্রস্তুতিও শুরু করেছে তারা।

আরও পড়ুন: নাম না করে ফের কড়া বার্তা, চিনকে ‘উন্মাদ’ বলল আমেরিকা

চিনা মিসাইলের হামলা রোখার তোড়জোড় যখন চালাচ্ছে তাইওয়ান, তখন সেই তাইওয়ানের ক্ষেপণাস্ত্রই যে চিনের দিকে ছুটে যাবে, তেমনটা দু’পক্ষের কেউই ভাবেনি। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মিসাইল চিনকে কোনও ভাবে আঘাত করলে, যুদ্ধ অবধারিত ছিল। তবে সে ক্ষেত্রে লড়াই শুধু চিন-তাইওয়ানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত না। তাইওয়ানের সঙ্গে আমেরিকার গাঁটছড়া যতটা মজবুত, তাতে যুদ্ধে ন্যাটো বাহিনীর জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও ছিল প্রবল। দক্ষিণ চিন সাগর ইস্যুকে কেন্দ্র করে চিনের সঙ্গে যে সব দেশের উত্তেজনা এখন তুঙ্গে, তারাও যুদ্ধের বাইরে থাকত কি না, সংশয় রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Taiwan Missile Fired Mistakenly Towards China
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE