Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
International News

COVFEFE শব্দের মানে কী? তোলপাড় বিশ্ব

‘সিওভিএফইএফই’। বুধ-সকালে তাঁর টুইটে ওই অত্যাশ্চর্য শব্দটি লিখে তাঁর টুইটারের ওপর বহু ক্ষণ ধরে ঝুঁকিয়ে রাখতে পেরেছেন গোটা আমেরিকাকে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।- ফাইল চিত্র।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।- ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৭ ১৭:০৪
Share: Save:

১৩২ দিনের মাথায় পৌঁছে গোটা আমেরিকাকে সত্যি-সত্যিই একজোট করে দিতে পেরেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! বিস্ময়ে! রিটুইটে। মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়া আলোচনায়।

বুঝিয়ে দিতে পেরেছেন টুইটারের ভাষা সম্পর্কে গোটা আমেরিকারই এখনও অনেক কিছু জানা নেই!

আবারও জানিয়ে দিতে পেরেছেন, টুইটারে চমক দিতে তিনি ভালবাসেন। তা সে অজান্তে ভুল করেই হোক বা জেনেশুনে তাঁর টুইটারের ওপর মানুষের চোখ টানতে। কেউ কেউ বলছেন, ভুলই তাঁর টিআরপি। ভুলভ্রান্তিই তাঁর ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’! কালে কালে তা হয়ে উঠতে পারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ইউএসপি-ও!

‘সিওভিএফইএফই’। বুধ-সকালে তাঁর টুইটে ওই অত্যাশ্চর্য শব্দটি লিখে তাঁর টুইটারের ওপর বহু ক্ষণ ধরে ঝুঁকিয়ে রাখতে পেরেছেন গোটা আমেরিকাকে। গোটা বিশ্বকে। টুইটে ট্রাম্প লিখেছিলেন, ‘‘ডেসপাইট দ্য কনস্ট্যান্ট নেগেটিভ প্রেস সিওভিএফইএফই... (সাংবাদিকদের লাগাতার সমালোচনা সত্ত্বেও...)’’

‘প্রেসিডেন্ট কী লিখেছেন?’, ‘কথাটার মানে কী’, এই বলতে বলতে আলাস্কা থেকে আরিজোনা, কলোরাডো থেকে ক্যালিফোর্নিয়া, ভার্জিনিয়া থেকে ভারমন্ট, গো'টা আমেরিকা ঝুঁকে থেকেছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের টুইটের ওপর, সাতসকালে লেখা তাঁর ‘সিওভিএফইএফই’ শব্দটির ওপর। ডাক পড়েছে ভাষাতত্ত্ববিদদের। কেউ খুলে বসেছেন অক্সফোর্ড ডিকশনারি। কেউ কেউ চলে গিয়েছেন গুগল সার্চ ইঞ্জিনে। এমনও বলাবলি হয়েছে, ‘‘কভারেজ লিখতে গিয়ে ভুল করেননি তো প্রেসিডেন্ট? বোধহয় টাইপোই।’’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সেই টুইট। সেই শব্দ ‘সিওভিএফইএফই’

প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ও পরে ট্রাম্প আমেরিকাকে অনেক কিছুই নতুন করে দেখতে শিখিয়েছেন। ভাবতে শিখিয়েছেন। শুনতে শিখিয়েছেন। মুসলিমদের সম্পর্কে তাঁর মনোভাব থেকে শুরু করে অন্য রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে তাঁর আচার-আচরণ গত ১৩৭ দিনে সংবাদপত্র, টেলিভিশনের হেডলাইন যে কত বার হয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই! কেউ তাঁর পক্ষ নিয়েছেন, কেউ বা তাঁর সমালোচনায় সরব হয়েছেন আমেরিকায়। অনেকেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কথাবার্তাকে গুরুত্ব দিয়ে তার পর্যালোচনায় উৎসাহ দেখিয়েছেন, আগ্রহী হয়েছেন। আবার কেউ কেউ তা ধর্তব্যের মধ্যে ধরতে চাননি বলে তেমন উৎসাহ দেখাননি, ততটা চর্চাও করেননি ট্রাম্পকে নিয়ে।

আরও পড়ুন- নোট বাতিলের ধাক্কা! দ্রুততম বৃদ্ধির দেশের আসন হারাল ভারত

কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বুধ-সকালের টুইটে লেখা ‘সিওভিএফইএফই’ শব্দটি মার্কিনদের মধ্যে আর কোনও ভেদাভেদ রাখেনি। প্রায় সকলের চোখ টেনেছে তাঁর টুইটে, তাঁর দিকে। সবাই ‘সিওভিএফইএফই’ শব্দটার মানে খুঁজতে, বুঝতে চেষ্টা করেছেন। একে অপরকে প্রশ্ন করেছেন, ‘‘তা হলে কি আমরা জানি না? এই যে শব্দটা লিখেছেন প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প), তা কি ডিকশনারিতে নতুন ঢুকেছে?’’

গোটা আমেরিকাকে এই ভাবে বুধবার দীর্ঘ ক্ষণ ধরে ওই সব সাত-পাঁচ ভেবেছে। আতিপাতি করে খুঁজেছে ভাষাতত্ত্ববিদদের। এর আগে তাঁর টুইটে ভুল করে ভুল বানানে ‘আনপ্রেসিডেন্টেড’ শব্দটি লিখেছিলেন আমেরিকার ‘মিস্টার প্রেসিডেন্ট’ (ট্রাম্প)। ভুল বানানে ভুলবশত লিখেছিলেন ‘অনার্ড’ শব্দটাও। কিন্তু পরে সেই ভুল শুধরে নিয়েছিলেন। তাঁর টুইট ডিলিট (বাদ দিয়েছিলেন) করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

এ বার তা করেননি বলেই জল্পনার জল অনেক দূর গড়িয়েছে। চর্চা হয়েছে অনেক অনেক বেশি। তা দেখে বেশ কিছু ক্ষণ পর আবার একটা টুইটে ট্রাম্প লেখেন, ‘‘দেখি কে সঠিক ভাবে বলতে পারেন, ‘সিওভিএফইএফই’ শব্দটার অর্থ? কে পারেন তার মর্মোদ্ধার করতে? চেষ্টা করুন!’’ ওই টুইট আরও বেশি করে উস্কে দেয় জল্পনাকে। তাঁর টুইট নিয়ে আলোচনাকে।

টেলিফোন পৌঁছতে শুরু করে হোয়াইট হাউসে। অনেকেই জানতে চান, প্রেসিডেন্টের টুইটে লেখা ‘সিওভিএফইএফই’ শব্দটার অর্থ। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি সিন স্পাইসার বলেছেন, ‘‘আমি আসলে ওই শব্দটার মানে ঠিক জানি না। প্রেসিডেন্ট আর অল্প কিছু মানুষ ওই শব্দটার ঠিকঠাক মানেটা জানেন।’’

গত নভেম্বরে কী ভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বৈতরণী পার হয়েছিলেন রিপাবলিকান ট্রাম্প, তা যেমন অনেক পরে জানতে পেরেছিলেন ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিন্টন, এ বারও তেমনই ট্রাম্পের টুইটের ‘সিওভিএফইএফই’ শব্দ-রহস্যের জট খুলতে সময় নিয়েছেন আমেরিকার এক সময়ের ‘ফার্স্ট লেডি’ও। হয়তো প্রথমে তাঁর মাথায় এসে গিয়েছিল ট্রাম্পের রাশিয়া-যোগাযোগের কথা! ক্যালিফোর্নিয়ায় এক জমায়েতে রসিকতা করে হিলারি বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, কোনও গোপন বার্তা পাঠানো হয়েছে রাশিয়াকে!’’

অনেক ক্ষণ পরে কেউই তাঁর ‘সিওভিএফইএফই’ শব্দটার অর্থোদ্ধার করতে পারলেন না দেখে টুইটটিকে ডিলিট করে দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

তখনই ভুল ভাঙে আমেরিকার!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE