তদন্তে ফরেসনিক বিশেষজ্ঞ দল। ছবি: রয়টার্স।
সন্ত্রাসের আতঙ্ক ফের ছুঁয়ে গেল ওয়েস্টমিনস্টারকে। মঙ্গলবার সকাল পৌনে আটটা নাগাদ পার্লামেন্টের কাছের রাস্তায় সাইকেল আরোহী আর পথচারীদের ভিড়ে হঠাৎই ঢুকে পড়ে একটি গাড়ি। পরে সেটি গিয়ে ধাক্কা মারে খাস পার্লামেন্টের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় সন্দেহভাজন ওই চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে সন্ত্রাসের যোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গাড়ির ধাক্কায় জখম হয়েছেন তিন জন। তবে কারও আঘাত গুরুতর নয়।
সকাল সকাল লন্ডনের পথে এই হামলায় ফিরে এসেছে গত বছরের স্মৃতি। সে বার মার্চ মাসে ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজে ভিড়ের মধ্যে গাড়ি হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ৪ জন। তার পর থেকে ব্রিটেনের পার্লামেন্টের চারপাশ স্টিল ও কংক্রিটের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ঘিরে দেওয়া হয়। এ বার সেই বেষ্টনীতেই ধাক্কা মারল গাড়ি। পার্লামেন্টে এখন অবশ্য অধিবেশন চলছে না। তাই ঘটনার সময়ে কোনও মন্ত্রী-এমপি সেখানে ছিলেন না। প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-ও এখন ছুটি কাটাতে বাইরে গিয়েছেন।
এ দিন পার্লামেন্টের কাছাকাছি রুপোলি রঙের গাড়িটিকে ধাক্কা মারতে দেখেই ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছে যায় সশস্ত্র পুলিশ। ঘিরে ধরে গাড়িটিকে। কয়েক সেকেন্ডে চালককে গ্রেফতার করে। দক্ষিণ লন্ডনের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বছর কুড়ির ওই যুবককে। পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তবে জেরায় সে সহযোগিতা করছে না বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশের খাতায় আগে তার নাম-পরিচয়ও ছিল না। ভিড়ের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ার সময়ে গাড়িতে ওই যুবক ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। গাড়িটি এখনও ঘটনাস্থলেই রয়েছে। তল্লাশি চলছে। এখনও পর্যন্ত কোনও অস্ত্র খুঁজে পায়নি পুলিশ।
স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সন্ত্রাস-দমন বিভাগের প্রধান নীল বসু বলেছেন, ‘‘এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই ঘটানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় যে ভাবে গাড়িটি ভিড়ের মধ্যে হানা দিয়েছে, তাতে এখনও পর্যন্ত এ ঘটনায় সন্ত্রাসের যোগ আছে বলেই মনে হচ্ছে।’’ প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, গাড়িটা ইচ্ছে করেই পথচারীদের ভিড়ে ঢুকে পড়েছিল। ওই অংশে গাড়ি ঢোকার কথাই নয়। ছোটখাটো গাড়িটি এত জোরে এসে ধাক্কা মারে যে, মাটি থেকে উঠে আবার লাফিয়ে পড়ে মাটিতে। সেখানে তখন ২০ জন সাইকেল আরোহী দাঁড়িয়েছিলেন। এর পরেই হুড়োহুড়ি আর চিৎকার। অনেকেই ভয়ে মাটিতে শুয়ে পড়েন।
ঘটনার পরে ওয়েস্টমিনস্টার টিউব স্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়। পার্লামেন্ট স্কোয়ার, মিলব্যাঙ্ক ও ভিক্টোরিয়া টাওয়ার গার্ডেন্স-এর আশপাশের রাস্তা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। ব্রিটিশ পরিবহণ পুলিশ জানিয়েছে, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলস-এ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ঘটনায় জখমদের প্রতি সহানুভূতি জানিয়েছেন। বিরোধী নেতা জেরেমি করবিন প্রশংসা করেছেন পুলিশের জরুরি বিভাগের। লন্ডনের মেয়র সাদিক খান বলেছেন, যে কোনও সন্ত্রাসের ঘটনা নিন্দনীয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইটে বলেছেন, ‘‘আর একটা সন্ত্রাসবাদী হামলা লন্ডনে। যে ব্যক্তি এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা ‘উন্মাদ পশু।’ এই ধরনের ষড়যন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy