Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

‘স্মৃতি-আলো’ থাকুক, আসুক পাখিরাও, চাইছে নিউ ইয়র্ক

ছ’কিলোমিটার উঁচু দু’টি আলোকস্তম্ভ। দেখা যায় অন্তত একশো কিলোমিটার দূর থেকে। নিউ ইয়র্কের ‘গ্রাউন্ড জ়িরো’য় এই ‘ট্রিবিউট ইন লাইট’ গত ১৭ বছর ধরে মনে করিয়ে দিচ্ছে, এখানেই দাঁড়িয়ে ছিল টুইন টাওয়ার।

স্মরণ: জ্বলছে ‘ট্রিবিউট ইন লাইট’।

স্মরণ: জ্বলছে ‘ট্রিবিউট ইন লাইট’।

সংবাদ সংস্থা
নিউ ইয়র্ক শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৩১
Share: Save:

ছ’কিলোমিটার উঁচু দু’টি আলোকস্তম্ভ। দেখা যায় অন্তত একশো কিলোমিটার দূর থেকে। নিউ ইয়র্কের ‘গ্রাউন্ড জ়িরো’য় এই ‘ট্রিবিউট ইন লাইট’ গত ১৭ বছর ধরে মনে করিয়ে দিচ্ছে, এখানেই দাঁড়িয়ে ছিল টুইন টাওয়ার। ২০০১-এর ১১ সেপ্টেম্বর যে দু’টিকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল আল কায়দা জঙ্গিদের ছিনতাই করা দু’টি বিমান।

সেই ‘স্মৃতি-আলো’র জন্যই সেপ্টেম্বর মাসের এই দিনটিতে মারা যাচ্ছিল লক্ষ লক্ষ পাখি। ১১ সেপ্টেম্বর সূর্যাস্ত থেকে পরের দিন সূর্যোদয় পর্যন্ত জ্বলে এই আলোকস্তম্ভ দু’টি। শরৎকালের এই সময়টাতেই উত্তর কানাডার বোরিয়াল জঙ্গল থেকে আমেরিকার দক্ষিণে, পূর্ব উপকূল দিয়ে, পাড়ি দেয় পরিযায়ী ‘সং বার্ড’-এর দল। রাতের বেলাতেই উড়ে যায় তারা। সেই পাখিদেরই চোখ ধাঁধিয়ে দিচ্ছিল এই ‘ট্রিবিউট ইন লাইট’। ঝাঁক ঝাঁক পাখি গতিপথ ভুলে গিয়ে ধাক্কা খাচ্ছিল চারপাশের বহুতলে। অসংখ্য পাখি এসে পড়ছিল আলোকস্তম্ভের উৎস, ৮৮টি শক্তিশালী স্পটলাইটের উপরেও।

কয়েক বছর আগে সামনে আসে এই তথ্য। একটি বিজ্ঞান পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়, সাত বছরে অন্তত ১১ লক্ষ পাখি এই আলোকস্তম্ভের ‘শিকার’ হয়েছে। সেই তথ্য সামনে আসার পরে ‘ট্রিবিউট’-এর দায়িত্বে থাকা ‘সেপ্টেম্বর ১১ মেমোরিয়াল অ্যান্ড মিউজ়িয়াম’ কর্তৃপক্ষকে পক্ষীবিশারদেরা আর্জি জানান, আলোকস্তম্ভ দু’টি যেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে সেই আর্জি মেনে নেননি মিউজ়িয়াম কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানান, ভয়াবহ জঙ্গিহানায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বছরে একটা দিনই আলোকস্তম্ভ দু’টি জ্বালানো হয়। তাই সে দু’টি একদম নিভিয়ে দেওয়া যাবে না। তবে বিপুল সংখ্যক পাখির যাতে ক্ষতি না হয়, তার জন্য কোনও বিশেষ ব্যবস্থা নিতে পারেন তাঁরা।

এই ধরনের পরিযায়ী পাখিই উড়ে যায় নিউ ইয়র্কের আকাশ দিয়ে। —ফাইল চিত্র।

তখন পক্ষীবিশারদ ও মিউজ়িয়াম কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে বসানো হয় এক বিশেষ ধরনের রাডার। আলোকস্তম্ভের খুব কাছে হাজার খানেক পাখি চলে এলেই তা ধরা পড়বে এই রাডারে। এবং তখনই বন্ধ করে দেওয়া হবে ৮৮টি স্পটলাইট। কয়েক সেকেন্ড পরে, পাখির ঝাঁক সরে গেলেই ফের জ্বালিয়ে দেওয়া হবে আলো।

এ বছর পাঁচ বার নিভিয়ে দিতে হয়েছে ‘ট্রিবিউট’। প্রতিবারই মিনিট কুড়ি করে। কাজও হয়েছে। পক্ষীবিশারদেরা জানিয়েছেন, এ বছর প্রায় কোনও পাখিই মারা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE