সেই আংটিটি।
কটা সোনার আংটি। উল্টো পিঠে খোদাই করা ‘পি.ডি’। পাশে একটি তির-সহ হৃদয় চিহ্ন। তার পর লেখা ‘এল.ই.ডি.৫-৩১-৪৩’।
এই লেখার সূত্রেই হদিস পাওয়া গেল আংটির মালিকের। তিয়াত্তর বছর পরে! দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে এক অভিযানে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন এক মার্কিন যুদ্ধবিমানের পাইলট, ক্যাপ্টেন লরেন্স ই ডিকসন। ‘এল.ই.ডি’ তাঁরই নামের আদ্যক্ষর। আর তার পাশে লেখা তারিখটি তাঁর ২৩ বছরের জন্মদিনের তারিখ। অর্থাৎ ৩১ মে, ১৯৪৩।
ওই জন্মদিনের পরের বছরই, ২৩ ডিসেম্বর ১৯৪৪ সালে দক্ষিণ অস্ট্রিয়ার এক পার্বত্য অঞ্চলে ভেঙে পড়ে লরেন্সের যুদ্ধবিমান। সেই ঘটনার ৭৩ বছর বাদে, হোহেনথার্নের কাছে সেই জায়গাটিতে খনন চালাতে গিয়ে আংটিটি হাতে এসেছিল টিটাস ফারম্যান নামে নিউ অর্লিয়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের। খোঁজাখুঁজির পরে উদ্ধার হয় ক্যাপ্টেন লরেন্সের নাম-পরিচয়।
নিউ ইয়র্কে লরেন্সের মেয়ে মার্লা অ্যান্ড্রিউজ়ের কাছে অবশেষে পৌঁছেছে প্যাকেট বন্দি সেই আংটিটি। বাবার স্মৃতি হাতে নিয়ে প্রথমে কেঁদে ফেলেছিলেন ৭৬ বছরের মার্লা। জানালেন, আংটিতে লেখা পি.ডি তাঁর মায়ের নাম। ফিলিস ডিকসন। গত বছরই ২৮ ডিসেম্বর মারা গিয়েছেন তিনি। আংটিটিতে একটি ফিরোজ়া রংয়ের পাথর বসানো ছিল। পাথরটির ভাঙা টুকরোগুলো হাতে নিয়ে মার্লা বলেন, ‘‘এটা ছিল মায়ের প্রিয় রং। হয়তো মা-ই বাবাকে আংটিটা উপহার দিয়েছিলেন।’’
ঘটনাস্থল থেকে ক্যাপ্টেন লরেন্সের পুড়ে যাওয়া দেহাংশের কিছুটাও উদ্ধার হয়েছে। খননকাজে যুক্ত এক আধিকারিক জানান, লরেন্সের বিমানটিতে আগুন লেগে গিয়েছিল।
পুরোনো নথি থেকে আরও জানা গিয়েছে, ১৯৪৪ সালে বড়দিনের দু’দিন আগে ইটালি থেকে পেগিন নামে পি-৫১ডি বিমান নিয়ে নাৎসি অধ্যুষিত প্রাগের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন লরেন্স। তবে সে দিন আকাশে ওড়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই বিমানের ইঞ্জিনে সমস্যা হচ্ছে বলে রেডিয়ো বার্তা পাঠান তিনি। বিমানের গতি কমে আসায় চেষ্টা করেছিলেন তা ঘুরিয়ে নিয়ে ফিরে আসতে। তবে তা সম্ভব ছিল না। শেষমেশ প্যারাসুটের সাহায্যে বিমান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন লরেন্স। কিন্তু ব্যর্থ হন। সম্ভবত আকাশেই বিস্ফোরণ হয় বিমানটির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy