Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

মার্কিন আবিষ্কর্তাদের ‘হল অব ফেমে’ প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী-সহ দুই ভারতীয়

মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে মেয়ের বাড়ি থেকে ফোনে এই সম্মান পাওয়ার বিষয়ে যখন বলছেন, তখন গলায় তাঁর খুশির ছোঁয়া।

সুমিতা মিত্র ও আরোগ্যস্বামী পলরাজ

সুমিতা মিত্র ও আরোগ্যস্বামী পলরাজ

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:০২
Share: Save:

নিউ আলিপুরের মেয়ে। তৎকালীন প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়াশোনা। এ বছর আমেরিকার ‘ন্যাশনাল ইনভেন্টার্স হল অব ফেম’-এ সম্মানিত হলেন সেই বঙ্গতনয়া সুমিতা মিত্র।

মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে মেয়ের বাড়ি থেকে ফোনে এই সম্মান পাওয়ার বিষয়ে যখন বলছেন, তখন গলায় তাঁর খুশির ছোঁয়া। জানালেন, খিদিরপুরের সেন্ট টেরিজা স্কুলের ছাত্রী ছিলেন। ১৯৬৬ থেকে ’৬৯ রসায়ন নিয়ে পড়েছেন প্রেসিডেন্সিতে। স্নাতকোত্তর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পিএইচডি করেন আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানে।

এর পর কর্পোরেট সায়েন্টিস্ট হিসেবে যোগ দেন ‘থ্রিএম কোম্পানি’তে। ৬৮ বছর বয়সি সুমিতাদেবী এ দিন জানালেন, দাঁতের চিকিৎসা ও অন্যান্য বিষয়ের গবেষণায় তাঁর মোট ৯৮টি পেটেন্ট রয়েছে। ‘ন্যাশনাল ইনভেন্টার্স হল অব ফেম’-এর ওয়েবসাইটে লেখা আছে, তারা এমন ব্যক্তিকেই সম্মান জানায়, যাঁর গবেষণা জীবনধারনের মানকে উন্নত করে। দাঁতের ‘ফিলিং’-এর জন্য ‘ফিল্টেক সুপ্রিম রিস্টোরেটিভ’ নামে একটি ‘ন্যানোকম্পোজিট’ পদার্থ আবিষ্কারের জন্য এ বছর তাঁকে সম্মান দেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ফ্রান্সের এই সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান পেলেন সত্যজিতের অপু

আমেরিকার মিনেসোটার সেন্ট পল শহরের বাসিন্দা সুমিতাদেবী অবসরের পরেও বসে নেই। স্বামী স্মরজিৎ মিত্র প্রেসিডেন্সি এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর সহপাঠী ছিলেন। দু’জনে মিলে মিনেসোটার বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের মধ্যে বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার জন্য বক্তৃতা দেন। পাশাপাশি ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটার দন্ত চিকিৎসার ছাত্র ছাত্রীদেরও পড়ান।

আশির দশকে আমেরিকার নাগরিকত্ব পেয়ে গেলেও বারবারই কলকাতায় আসেন। কলকাতায় এখনও সুমিতাদেবীর শাশুড়ি রয়েছেন। তাঁকে দেখতে এই জানুয়ারিতেও এসেছিলেন। ফিরে গিয়ে আপাতত রয়েছেন মেয়ে মনীষার নিউ ইয়র্কের বাড়িতে।

সুমিতাদেবীর সঙ্গে এ বছরের ‘হল অব ফেম’-এ রয়েছেন আর এক ভারতীয়ও— ‘মাল্টি ইনপুট মাল্টি আউটপুট’ (এমআইএমও) ওয়্যারলেস প্রযুক্তির আবিষ্কর্তা আরোগ্যস্বামী পলরাজ। মোবাইলে ওয়াইফাই ও ফোর জি নেটওয়ার্কের জন্য এই প্রযুক্তিই ব্যবহার করা হয়। গত মাসেই ভারতের টেলিকম বিভাগের পরিচালন সমিতির চেয়ারম্যান নিযুক্ত হয়েছেন আরোগ্যস্বামী। তিনি বললেন, ‘‘টেলিকম পরিষেবায় একদম প্রথম সারিতে রয়েছে আমেরিকা, চিন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ইউরোপের বেশ কিছু দেশ। আমরা চাই ভারত শীঘ্রই সেই তালিকায় উঠে আসুক।’’ টেলিকম সচিব অরুণা সুন্দররাজনের কথায়, ‘‘আরোগ্যস্বামীকে পেয়ে আমরা অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছি। তাঁর হাত ধরেই বিশ্ব টেলিকমের ফাইভ-জি মানচিত্রে জায়গা করে নেবে ভারত।’’

১৯৪৪ সালে তামিলনাড়ুতে জন্ম পলরাজের। ১৫ বছর বয়সে ভারতীয় নৌবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। নোবাহিনী থেকেই তাঁকে উচ্চশিক্ষার জন্য দিল্লি আইআইটিতে পাঠানো হয়। ২৫ বছর নৌবাহিনীতে থাকার পরে ১৯৯২ সালে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন পলরাজ। সেখানেই এমআইএমও নিয়ে গবেষণা তাঁর। ৭৯টি পেটেন্টের অধিকারী পলরাজ এখন স্ট্যানফোর্ডেরই ‘প্রফেসর এমেরিটাস’ পদে রয়েছেন।

২-৩ মে ওয়াশিংটনে একটি অনুষ্ঠানে ২০১৮ সালের ‘আবিষ্কারক’দের সম্মান দেবে মার্কিন পেটেন্ট ও ট্রেডমার্ক দফতর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE