আন্টার্কটিকায় জলে ভেসে রয়েছে হিমশৈল।
আন্টার্কটিকার সমুদ্রে ভাসমান হিমশৈল টেনে এনে পানীয় জলের সংকট মেটাতে চলেছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। আবুধাবির একটি বেসরকারি সংস্থা পানীয় জলের সঙ্কট মেটানোর জন্য এই প্রকল্প নিয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২০ সালের মধ্যেই এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে বলে রবিবার ঘোষণা করেছে ওই সংস্থা।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে জলের সমস্যা প্রবল। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সেই সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্তি মিলবে বলে মনে করেন ওই সংস্থার কর্তা আল শাহি। শুধু ওই দেশই নয়, রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যেই পৃথিবীর ৫০ শতাংশ মানুষ জলকষ্টে ভুগবেন। অথচ আন্টার্কটিকায় সঞ্চিত বিপুল বরফ প্রকৃতপক্ষে সারা বিশ্বের মোট ৬০ শতাংশ স্বাদু জল ধরে রেখেছে। বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য যা ইতিমধ্যেই গলতে শুরু করেছে এবং বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা, এইভাবে বরফ গলতে শুরু করলে বন্যা পরিস্থিতির সম্ভাবনা রয়েছে।
২০১৭ সালে এই প্রকল্পের প্রস্তাব দিয়েছিল সংস্থাটি, কিন্তু তখন রাজি হয়নি সংযুক্ত আরব আমিরশাহি প্রশাসন। এতদিনে প্রশাসন রাজি হওয়ায় প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে তারা। আল শাহি জানান, ২০১৯ সালের শেষের দিকে প্রকল্পের পরীক্ষামূলক কাজ শুরু হওয়ার কথা। তখন আন্টার্কটিকার একটা বড় মাপের হিমশৈল টেনে নিয়ে আসা হবে অস্ট্রেলিয়ার পার্থ উপকূলে বা দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে। এই পরীক্ষামূলক পর্বে আবহাওয়া, সমুদ্রের ঢেউ এবং তাপমাত্রার প্রভাব বিবেচনা করা হবে। ঠিক কোন পথে আন্টার্কটিকা থেকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির উপকূলে টেনে নিয়ে যেতে হবে হিমশৈল তা বুঝে নেওয়া হবে এই পর্বেই। প্রকল্পে খরচ হবে ৫ কোটি ডলার থেকে ১২ কোটি ডলার।
আরও পড়ুন: কিছু ঠিক হওয়ার নয়, জানে খুদে অ্যালেক্সও
কী ভাবে হিমশৈল থেকে পানীয় জল পাওয়া যাবে?
প্রথমে হিমশৈলকে আরব আমিরশাহির উপকূলে নিয়ে যাওয়া হবে। তারপর তার থেকে বরফ ভেঙে গলিয়ে জল করা হবে। সেই জল বিশালাকার ট্যাঙ্কে সংরক্ষণ করা হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী, পরিশোধন করে পানীয় জল হিসাবে ব্যবহার করা হবে। পানীয় জল ছাড়া আরও একটি সুফল রয়েছে এই প্রকল্পের। দেশের উপকূলে এমন ভাসমান হিমশৈল থাকলে তা পর্যটনের প্রসারও ঘটাতে পারে।
এই প্রকল্পে আইনি বাধা কতখানি?
সংস্থার ওই কর্তা জানান, আন্তর্জাতিক আইনের ‘দ্য হাই সি কোড’ অনুযায়ী, হিমশৈল জলের সম্পদ এবং তা প্রয়োজনে যে কোনও বেসরকারি সংস্থা ব্যবহার করতে পারে। পৃথিবীর যে কোনও জায়গায় নিয়ে যাওয়াও যায়। এবং এর জন্য সরকারের কোনও অনুমোদনেরও প্রয়োজন নেই। এ ক্ষেত্রে শুধু এটাই মাথায় রাখতে হয়, আন্টার্কটিকায় কোনও হিমশৈল ভাঙা যাবে না। ‘‘আমরা আইন মেনেই কাজ করছি। হিমশৈলকে আন্টার্কটিকা থেকে ৩,০০০ মাইল দূরে টেনে নিয়ে এসে তারপর সেটা ভাঙছি,’’ বলেন আল শেহি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy