Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
International News

আর রেহাই নয়, ইরানি তেল কিনলে মে থেকেই পড়তে হবে ট্রাম্পের কোপে, উদ্বেগে ভারত

সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের তরফে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা স্পষ্টই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ইরানি তেল কেনা দেশগুলিকে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কিছুটা সময় দিতে ট্রাম্প প্রশাসন ৬ মাসের জন্য যে 'সিগনিফিক্যান্ট রিডাকশান এক্সেপশন্স (এসআরই)' চালু করেছিল, তার মেয়াদ আর বাড়ানো হচ্ছে না।

 ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি- এএফপি।

ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি- এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৯ ১২:৫২
Share: Save:

লোকসভা ভোট চলাকালীনই মার্কিন মুলুক থেকে উদ্বেগজনক খবরটি পেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওয়াশিটংন জানিয়ে দিল, ইরান থেকে অপরিশোধিত তেল কিনলে আর রেহাই মিলবে না। এ বার ইরানি তেল আমদানির পরিমাণ শুধু কমালেই হবে না, তেহরানকে সরাসরি বলে দিতে হবে, তোমার তেল আর চাই না। না হলে পয়লা মে থেকেই ইরানি তেলের ক্রেতা দেশগুলির বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করতে শুরু করবে আমেরিকা। তা সে ভারতই হোক বা অন্য কোনও দেশ, ৩০ এপ্রিলের পর ইরান থেকে অপরিশোধিত তেল কিনলে আর কাউকেই ছেড়ে কথা বলবে না ওয়াশিংটন।

সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের তরফে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা স্পষ্টই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ইরানি তেল কেনা দেশগুলিকে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কিছুটা সময় দিতে ট্রাম্প প্রশাসন ৬ মাসের জন্য যে 'সিগনিফিক্যান্ট রিডাকশান এক্সেপশন্স (এসআরই)' চালু করেছিল, তার মেয়াদ আর বাড়ানো হচ্ছে না।

খবরটা ভারতের পক্ষে যথেষ্টই উদ্বেগের, কারণ, গত বছরের মার্চের তুলনায় ইরানি তেল আমদানির পরিমাণ কমলেও, গত ফেব্রুয়ারির তুলনায় তা বেড়ে মার্চে হয়েছে দিন-পিছু ৪ লক্ষ ৫ হাজার ব্যারেল। ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে এই বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শুধু ইরান থেকেই মোট ১ হাজার ১৪২ কোটিডলার মূল্যের অরিশোধিত তেল কিনেছে ভারত। যা তার আগের অর্থবর্ষের (২০১৭-'১৮) তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি।

যে ৮টি দেশ ইরান থেকে অপরিশোধিত তেল কেনে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে, তাদের মধ্যে ভারত রয়েছে দু'নম্বরে। প্রথমে রয়েছে চিন। আর এই দু'টি দেশের পরেই রয়েছে যথাক্রমে ইতালি, গ্রিস, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান ও তুরস্ক।

আরও পড়ুন- ইরানের তেল: দিল্লি কোপে পড়তে পারে নিষেধাজ্ঞার, ইঙ্গিত ওয়াশিংটনের​

আরও পড়ুন- শ্রীলঙ্কা বিস্ফোরণ কাণ্ড: গোয়েন্দা-ব্যর্থতাতেই কি নিহত ২৯০​

ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে ভারতকে ভাবতেই হচ্ছে, কারণ, এই বিপুল পরিমাণ তেল কোন কোন দেশ থেকে আমদানি করে ঘরোয়া চাহিদা মেটানো যেতে পারে, কেন্দ্রীয় তেল মন্ত্রক সে ব্যাপারে এখনও সুনিশ্চিত হতে পারেনি। তেল মন্ত্রকের একটি সূত্র বলছে, এই সব ক্ষেত্রে কোনও একটি দেশের নয়, ভারত সরকার একমাত্র রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞাই মেনে চলতে বাধ্য থাকতে পারে। রাষ্ট্রপুঞ্জ এখনও তেমন কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি।

তবে তার 'খেসারতে'র বহরটা কেমন হবে, সেটাও বুঝে উঠতে পারেনি দিল্লি। মার্কিন বিদেশ দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিভাগের প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যালিস ওয়েলস আর কয়েক দিনের মধ্যেই আসছেন ভারতে। ওই সময় বিদেশ মন্ত্রক ও তেল মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হওয়ার কথা।

ভারত-সহ যে সব দেশ ইরান থেকে নিয়মিত অপরিশোধিত তেল কেনে, গত নভেম্বরে তাদের ৬ মাসের জন্য কিছুটা রেহাই দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। বলা হয়েছিল, এই ৬ মাসের মধ্যে খুব দ্রুত ইরান থেকে তেল আমদানি কমিয়ে ফেলতে হবে সংশ্লিষ্ট দেশগুলিকে। যাতে সেই তেল বেচা অর্থে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির বাড়বাড়ন্ত ও নাশকতামূলক কাজকর্মকে সাহায্য না করতে পারে তেহরান। গোপনে পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়ে না যেতে পারে।

এসআরই-র মেয়াদ ওয়াশিংটন আর বাড়াচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলি ইরানি তেল আমদানি চালিয়ে যেতে থাকলে আগামী পয়লা মে থেকেই তাদের মার্কিন প্রশাসনের কোপের মুখে পড়তে হবে। যার প্রভাব পড়তে পারে প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য-সহ প্রায় সবক'টি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

US Iran Donald Trump Oil ইরান
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE