Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
International

কিমকে চরম হুঁশিয়ারি, দঃ কোরিয়ার আকাশে পরমাণু অস্ত্রবাহী মার্কিন যুদ্ধবিমান

আর বাগযুদ্ধ নয়। এ বার সামরিক পদক্ষেপের পথেই আমেরিকা। বার বার পরমাণু অস্ত্রের গর্জন শোনাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। আমেরিকাও এ বার পরমাণু হুঙ্কার শুনিয়ে দিল কিম জং উনকে। পরমাণু হামলায় সক্ষম সুপারসনিক মার্কিন যুদ্ধ বিমান উড়ল কোরীয় উপদ্বীপের আকাশে।

বি-ওয়ান বি ল্যান্সার বম্বার— পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম এই মার্কিন বিমানই মঙ্গলবার উড়ল কোরিয়ার আকাশে। —ফাইল চিত্র।

বি-ওয়ান বি ল্যান্সার বম্বার— পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম এই মার্কিন বিমানই মঙ্গলবার উড়ল কোরিয়ার আকাশে। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৭:৩২
Share: Save:

আর বাগযুদ্ধ নয়। এ বার সামরিক পদক্ষেপের পথেই আমেরিকা। বার বার পরমাণু অস্ত্রের গর্জন শোনাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। আমেরিকাও এ বার পরমাণু হুঙ্কার শুনিয়ে দিল কিম জং উনকে। পরমাণু হামলায় সক্ষম সুপারসনিক মার্কিন যুদ্ধ বিমান উড়ল কোরীয় উপদ্বীপের আকাশে। দক্ষিণ কোরিয়াকে আশ্বাস আর উত্তর কোরিয়াকে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দিয়ে এল মার্কিন বিমান বাহিনীর বি-ওয়ান বি ল্যান্সার।

গুয়াম বিমানঘাঁটি।

মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ার আকাশসীমার গা ঘেঁষে উড়তে দেখা গিয়েছে মার্কিন যুদ্ধবিমানগুলিকে। দক্ষিণ কোরিয়ার উত্তরাংশে ওসান বিমানঘাঁটির উপর দিয়ে উড়ে গিয়েছে পরমাণু হামলায় সক্ষম বি-ওয়ান বি ল্যান্সার যুদ্ধবিমানগুলি। দক্ষিণ কোরিয়া এবং মার্কিন বিমান বাহিনীর অন্য কয়েকটি ফাইটার জেটকেও বি-ওয়ানগুলির সঙ্গে আকাশে উড়তে দেখা গিয়েছে। বি-ওয়ান বম্বারগুলির এসকর্টের ভূমিকায় ছিল দক্ষিণ কোরিয়া ও আমেরিকার ওই ফাইটার জেটগুলি। যে বিমানঘাঁটির উপর দিয়ে পরমাণু হামলায় সক্ষম মার্কিন যুদ্ধবিমানগুলিকে উড়তে দেখা গিয়েছে, সেটি উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত থেকে মাত্র ১২০ কিলোমিটার দূরে। সুপারসনিক বি-ওয়ান বম্বারের গতিবেগ যা, তাতে ওই অঞ্চল থেকে উত্তর কোরিয়ার আকাশে ঢুকে পড়তে কয়েক মিনিট সময় লাগে। আসলে সেই বার্তাই উত্তর কোরিয়াকে দিতে চেয়েছে আমেরিকা। পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটি গুয়াম থেকে মঙ্গলবার উড়ে এসেছিল বি-ওয়ান বি ল্যান্সার যুদ্ধবিমানগুলি। দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশসীমায় ঢুকে সে দেশের বিমানবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে উড়েছে বি-ওয়ান বম্বার। উত্তর কোরিয়ার আকাশসীমার খুব কাছে হানা দিয়েছে। তার পর আবার ফিরে গিয়েছে গুয়াম বিমানঘাঁটিতে। চাইলে উত্তর কোরিয়ায় পরমাণু বোমা ফেলতে যে আর কয়েক মিনিট লাগত, পিয়ংইয়ংকে সে কথাই বুঝিয়ে দিয়েছে ওয়াশিংটন।

দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশে উড়ছে বি-ওয়ান বি ল্যান্সার।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান কিম জং উন বেশ কয়েক মাস ধরেই হুমকির মাত্রা বাড়িয়েছেন। দক্ষিণ কোরিয়ায় হামলা চালানোর হুমকি তো ক্রমাগতই চলছে। আমেরিকাকেও ছেড়ে কথা বলছেন না কিম। গত কয়েক মাসে দু’বার পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন কিম জং উন। গত সপ্তাহে যে বিস্ফোরণটি উত্তর কোরিয়া ঘটিয়েছে, সেটি তাদের পঞ্চম পরমাণু বিস্ফোরণ। কঠোর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করেই কিম জং উন পর পর পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটিয়ে চলেছেন। গত সপ্তাহের বিস্ফোরণের পরই কিম দাবি করেছিলেন, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে আঘাত হানার মতো পরমাণু অস্ত্র অর্থাৎ নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড তাঁরা তৈরি করে ফেলেছেন। অতএব, এ বার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েই আমেরিকার মূল ভূখণ্ডে পরমাণু হামলা চালানো যাবে।

আরও পড়ুন: এটা সামরিক মহড়া না পুতিনের ‘বাহুবলী’!

কিমের এই আস্ফালনে আতঙ্ক ছড়ায় দক্ষিণ কোরিয়ায়। উত্তর কোরিয়া ষষ্ঠ পরমাণু বিস্ফোরণটিও খুব শীঘ্র ঘটাতে চলেছে বলে দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দারা জানান। প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানে যথেষ্ট উন্নত হলেও, দক্ষিণ কোরিয়ার কিন্তু পরমাণু অস্ত্র নেই। বরং মার্কিন ‘নিউক্লিয়ার আমব্রেলা’র আশ্রয়েই রয়েছে তারা। অর্থাৎ পরমাণু হামলার শিকার হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে দক্ষিণ কোরিয়ার হয়ে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে আমেরিকাই। কিম জং উনের ক্রমবর্ধমান হুঙ্কারের সামনে তাই আর নিশ্চুপ থাকেনি আমেরিকা। কিমের পরমাণু কর্মসূচি দক্ষিণ কোরিয়ায় যে ভাবে আতঙ্ক ছড়িয়েছে, তা কাটাতেই মঙ্গল বার সে দেশের আকাশসীমায় দীর্ঘক্ষণ উড়েছে পরমাণু অস্ত্রবাহী মার্কিন যুদ্ধবিমান। এর মাধ্যমে প্রথমত দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের আশ্বস্ত করেছে আমেরিকা। উত্তর কোরিয়া কোনও অযাচিত পদক্ষেপ করলে দক্ষিণের হয়ে পাল্টা পদক্ষেপ নিতে মার্কিন বাহিনীর যে বেশি সময় লাগবে না, তো বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে কিম জং উনকেও। পরমাণু অস্ত্রের হুঙ্কারকে পরমাণু অস্ত্র দিয়েই যে মোকাবিলা করবে আমেরিকা, তা খুব স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে উত্তর কোরিয়াকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE