Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Uyghurs

‘চিনকে তোষণ করার নীতি থেকে সরে আসুক ভারত’

‘ওয়র্ল্ড উইঘুর কংগ্রেস’-এর প্রেসিডেন্ট দোলকুন ইসা মিউনিখে নির্বাসিত।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২০ ০২:৫৪
Share: Save:

চিনের বিরুদ্ধে কঠোর নীতি নেওয়ার জন্য মোদী সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছে চিনের উইঘুর মুসলমান সম্প্রদায়।

চিনের উপর চাপ বাড়াতে কখনও কখনও তিব্বতকে কাজে লাগিয়েছে ভারত। কিন্তু উইঘুরদের নিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে সরব হতে দেখা যায়নি ভারতীয় নেতৃত্বকে। কিন্তু উইঘুর মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রবল দমননীতির অভিযোগে কমিউনিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা বাড়ছে গত কয়েক বছর ধরেই।

‘ওয়র্ল্ড উইঘুর কংগ্রেস’-এর প্রেসিডেন্ট দোলকুন ইসা মিউনিখে নির্বাসিত। ই-মেল সাক্ষাৎকারে তিনি বললেন, ‘‘চিনের সঙ্গে তোষণের নীতি চলে না। মানবতার বিরোধী চিনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত ভারতের।” চিনের শিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুরদের উপর যখন দমননীতি শুরু হয়, সেই আশির দশকের শেষে দোলকুন ইসা ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তখন থেকেই রাষ্ট্রশক্তির বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই শুরু। শাসকের রোষানলে পড়ে ১৯৯৪ সালে জার্মানিতে পালিয়ে যেতে হয় তাঁকে। সেখান থেকেই উইঘুরদের উপর নির্যাতন নিয়ে প্রচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন আজও।

আরও পড়ুন: ‘নিজে সতর্ক করেনি চিন’​

আরও পড়ুন: চিনা সেনার মহড়ার মাঝেই দক্ষিণ চিন সাগরে রওনা মার্কিন রণতরীর​

গালওয়ান উপত্যকার হিংসা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ইসা বলেন, ‘‘চিনের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ এবং আগ্রাসী পদক্ষেপের এটা সাম্প্রতিকতম উদাহরণমাত্র। তারা ক্রমশ বর্হিবিশ্বে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে। হংকংকে তার প্রাপ্য স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করছে। তাইওয়ানকে হুমকি দিচ্ছে। সব প্রতিবেশীদের পিছনে লাগছে। দক্ষিণ চিন সাগরে মিথ্যা অধিকার দাবি করছে। মেকং নদীতে বাঁধ দিচ্ছে নদীর নিম্নভাগের প্রতিবেশীদের কথা চিন্তা না করেই। কোভিড নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করায় অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার ও অন্যান্য সাধারণ নীতির ধারই ধারছে না।’’

২০১৬ সালে ভারত ভিসা দিয়েছিল দোলকুনকে। চিন প্রতিবাদ করায় সেই ভিসা বাতিল করা হয়। দোলকুন বলছেন, ‘‘এ বার অন্তত চিনকে তোষণ করার নীতি থেকে সরে আসুক ভারত। উইঘুরদের অধিকারকে মান্য করার জন্য চিনের উপর চাপ তৈরি করুক। শিনজিয়াংয়ে যে ভাবে হাজার হাজার উইঘুরকে বন্দি করে রাখা হচ্ছে, তা নিয়ে মুখ খোলার জন্য ভারতকে অনুরোধ করছি। এখনও পর্যন্ত তারা এ নিয়ে নীরব।’’

শিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর স্বশাসিত অঞ্চলকে কার্যত পদানত করে রেখে দিয়েছে বেজিং— এই দাবিতে সম্প্রতি সরব আমেরিকা এবং ইউরোপের কিছু দেশ। কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, গালওয়ান হিংসার সঙ্গেও এর পরোক্ষ যোগ রয়েছে। লে থেকে কারাকোরাম পর্যন্ত যে রাস্তার নির্মাণ নিয়ে ভারতের প্রতি এত উষ্মা চিনের, তার একটি বড় কারণ হল, বেজিংয়ের আশঙ্কা, এর ফলে আকসাই চিন এবং শিনজিয়াংয়ে নজরদারি বাড়াতে পারবে ভারত।

কিন্তু কোভিড সঙ্কটের মধ্যেই কেন চিন তাদের আগ্রাসন নীতি বাড়াল? উইঘুর নেতার মতে, ‘‘এ সবই উগ্র জাতীয়তাবাদের প্রতিফলন। দেশবাসীকে দেখানো, যে রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শক্তিশালী হচ্ছে। আসলে ওরা যখন দুর্বল, তখনই বেশি হুমকি দেয়। অতিমারির সঙ্গে সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে। হংকং, উইঘুর, তিব্বতের উপর কমিউনিস্ট পার্টির অত্যাচার বিশ্বের আতসকাচের নীচে। ফলে ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক— উভয় ক্ষেত্রেই ওরা প্রবল চাপের মুখে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Uyghurs China Narendra Modi India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE