ফাইল চিত্র
এ বার মোদীর পথে হাঁটলেন মাদুরো। ১০০ বলিভারের নোট ও কয়েন বাতিল বলে ঘোষণা করল ভেনেজুয়েলার সরকার। দেশবাসীকে নোট পরিবর্তনের জন্য ১০ দিন সময় দিয়েছে ভেনেজুয়েলা প্রশাসন। মোদীর মতোই সোমবার জাতীয় টেলিভিশনে প্রায় এক ঘণ্টার ভাষণের পরে এই ঘোষণা করেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। ভেনেজুয়েলার মোট নোটের ৪৮ শতাংশ ১০০ বলিভারের নোট ও কয়েন রয়েছে। এর সংখ্যা প্রায় ৬০০ কোটি। মাদুরো জানান, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই নোট ও কয়েন তুলে নেওয়া হবে। কালোবাজারে এই নোটের মূল্য অবশ্য মাত্র দুই মার্কিন সেন্ট।
কালো টাকা ধরা, সন্ত্রাসবাদীদের অর্থের জোগান বন্ধ করা এবং নকল নোট ধ্বংস করার জন্য গত ৮ নভেম্বর ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিলের ঘোষণা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার পরে এক মাস পেরিয়ে গিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশে ঝড় উঠেছে। এই সিদ্ধান্ত কালো টাকা ধরতে আদৌ কতটা কার্যকরী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনীতিবিদেরা। বিরোধীরা লোকসভা ও রাজ্যসভায় ঝড় তুলছেন। সাধারণ মানুষের দুর্গতি এখনও চলছে। প্রশ্নের মুখে পড়ে নোট বাতিলের উদ্দেশ্যও পাল্টে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। উঠেছে ক্যাশলেস অর্থনীতির কথা। এই পরিস্থিতির মধ্যেই নোট বাতিলের ঘোষণা করল ভেনেজুয়েলা।
আরও পড়ুন- এ বার নজর রাখতে হবে ব্যাঙ্ক-ডাকঘরের বাইরেও
তেল সম্বৃদ্ধ দেশ ভেনেজুয়েলা। হুগো চাভেজের দেশ ভেনেজুয়েলা। চাভেজের পরে ভেনেজুয়েলার দায়িত্ব এখন তার মন্ত্রশিষ্য মাদুরো-র হাতে। কিন্তু বেশ কিছু দিন ধরেই ভেনেজুয়েলার অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থা। আইএমএফ-সহ বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের হিসেব বলছে, ভেনেজুয়েলার বার্ষিক দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধির হার প্রায় ৫০০ শতাংশ। যা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি, এই নোটের কালোবাজারিও হয়। কালোবাজারেই গত বছর ভেনেজুয়েলার মুদ্রার বিনিময়মূল্য ডলারের তুলনায় প্রায় ৫৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। কলম্বিয়ার দুষ্কৃতীরা এ ভাবে ভেনেজুয়েলার নোট সংগ্রহ করে কম দামে ভেনেজুয়েলার জিনিসপত্র কেনে বলেও মাদুরো বেশ কয়েক দিন ধরে অভিযোগ করছিলেন। এই দু’দিকে নজর রেখে আজ মাদুরোর এই ঘোষণা। জানা গিয়েছে, কয়েক দিনের মধ্যে ছ’টি নতুন নোট বাজারে আনবে ভেনেজুয়েলা সরকার। যার মধ্যে বড় নোটটির মূল্য ২০ হাজার বলিভার। আন্তর্জাতিক বাজারে যার মূল্য পাঁচ ডলারের মতো।
মোদী ও মাদুরো রাজনৈতিক মতে একে বারে উল্টো মেরুর বাসিন্দা। চাভেজের সমাজতান্ত্রিক মডেলই অনুসরণ করছেন মাদুরো। তাঁর বিরোধীদের অভিযোগ, এতে দেশ জুড়ে নানা টালমাটাল চলছে। মাদুরো জানিয়েছেন, নকল নোট বন্ধ করতে, কলম্বিয়া-বলিভিয়ার সীমান্তে নোটের কালোবাজারি বন্ধ করতে এই উদ্যোগ নিতে হয়েছে। মাদুরোর এই ঘোষণার পরেই ভারতের সঙ্গে তুলনা টানা শুরু হয়েছে। ভারতের মতোই ভেনেজুয়েলার প্রধানত নগদ-নির্ভর অর্থনীতি। অনেকের মতো দেশবাসীর পক্ষে ১০ দিনের মধ্যে নতুন নোট পাওয়া সম্ভব নয়। ভারতের অবস্থাকে এ ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে দেখাচ্ছেন অনেকে। অনেকে আশঙ্কা, এর ফলে ভেনেজুয়েলায় সামাজিক অস্থিরতা আরও বাড়বে।
আরও পড়ুন- গোলমেলে গপ্পো, এমনকী প্রধানমন্ত্রীও যেন কিছুটা বেসুরো গাইছেন!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy