Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মেয়ের দেহ বইছেন মা, আঁধারে ভেনেজ়ুয়েলা

গোটা বিপর্যয়ের জন্য বিরোধী দলনেতা হুয়ান গুয়াইদোকে দায়ী করেছেন প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। তাঁর আরও বক্তব্য, হুয়ানের পিছনে মদত রয়েছে আমেরিকার।  তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। এই অবস্থায় চিন আর রাশিয়ার কাছে সাহায্য চান মাদুরো। আজই চিনের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, বিপর্যয়ের মোকাবিলা করতে ভেনেজ়ুয়েলাকে যথাসম্ভব সাহায্য করবে বেজিং।

প্রতিবাদ: ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শামিল বিরোধী দলনেতা হুয়ান গুয়াইদো। (ইনসেটে) মেয়ের মৃতদেহ কোলে মায়ের এই ছবিটিই ভাইরাল হয়েছে। রয়টার্স

প্রতিবাদ: ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শামিল বিরোধী দলনেতা হুয়ান গুয়াইদো। (ইনসেটে) মেয়ের মৃতদেহ কোলে মায়ের এই ছবিটিই ভাইরাল হয়েছে। রয়টার্স

সংবাদ সংস্থা
কারাকাস শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৯ ০১:৩৫
Share: Save:

তীব্র অপুষ্টিতে ভোগা কঙ্কালসার মেয়ের মৃতদেহ নিয়ে রাস্তায় হাঁটছেন মা। গন্তব্য, কাছাকাছির কোনও হাসপাতালের মর্গ। উত্তর ভেনেজ়ুয়েলার ভ্যালেনসিয়া শহরের এই ছবিই এখন ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বে। সেই সঙ্গেই প্রকাশ্যে চলে এসেছে গত ছ’দিন ধরে চলা ভেনেজ়ুয়েলার বিদ্যুৎ সঙ্কটের ছবিটা।

গোটা বিপর্যয়ের জন্য বিরোধী দলনেতা হুয়ান গুয়াইদোকে দায়ী করেছেন প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। তাঁর আরও বক্তব্য, হুয়ানের পিছনে মদত রয়েছে আমেরিকার। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। এই অবস্থায় চিন আর রাশিয়ার কাছে সাহায্য চান মাদুরো। আজই চিনের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, বিপর্যয়ের মোকাবিলা করতে ভেনেজ়ুয়েলাকে যথাসম্ভব সাহায্য করবে বেজিং।

সম্প্রতি সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত উনিশ বছরের মেয়েকে নিয়ে দু’টি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়েছিলেন এলিজাবেথ ডায়াজ। কিন্তু কোথাও বিদ্যুৎ না থাকায় জরুরি পরিষেবার চিকিৎসা বন্ধ ছিল। চিকিৎসকেরা ফিরিয়ে দেন এলিজাবেথকে। অন্য কোনও হাসাপাতালে যাওয়ার আগে তাঁর কোলেই মৃত্যু হয় মেয়েটির। চরম দারিদ্রের জন্য মেয়ের সৎকারটুকুও করার অবস্থা নেই এলিজাবেথের। আপাতত কোনও মর্গে তাই মেয়ের দেহ রাখার ব্যবস্থা করছিলেন তিনি। পায়ে হেঁটে। আর তাঁর সেই ছবিই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

গোটা ভেনেজ়ুয়েলাই ছ’দিন ধরে আঁধারে ডুবে। কাল কয়েকটি প্রদেশে বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করা গিয়েছে। কিন্তু সেখানেও মাঝেমধ্যেই চলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ। হাসপাতাল অকেজো। বাড়িতে চলছে না ফ্রিজ। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে খাবার। চলছে না জলের পাম্প। বাসিন্দাদের তীব্র জলকষ্ট থেকে বাঁচাতে রাস্তায় নেমেছে সেনা। হুয়ানের অভিযোগ, এই ক’দিনে হাসাপাতালে বিদ্যুৎ না থাকার জন্য ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার থেকে সঙ্কটের শুরু। বলিভার প্রদেশের গুরি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে দেশের মোট চাহিদার ৬০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। সেখানেই বড়সড় যান্ত্রিক বিপর্যয় দেখা দেয় প্রথমে। যার ফলে গোটা ভেনেজ়ুয়েলা আঁধারে ডুবে গিয়েছে। এর মধ্যে গত রবিবার কারাকাসের একটি বিদ্যুৎ সাবস্টেশনে বিস্ফোরণের ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। প্রেসিডেন্ট মাদুরোর দাবি, সাইবার হামলার মাধ্যমে হুয়ানকে দিয়ে আমেরিকাই এই বিপর্যয় ঘটিয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। গত কয়েক মাস ধরেই আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক অবনতি হয়েছে মাদুরোর। তাঁকে গদিচ্যুত করতে হুয়ানকে সমর্থন দেখিয়ে আসছে আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। কাল রাজধানীতে হুয়ানের নেতৃত্বে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ করেন বিরোধীরা। হুয়ানের সমর্থনে বড় বড় ব্যানার নিয়ে পথে নেমেছেন দেশের সাধারণ মানুষ। ব্যানারে লেখা, ‘তুমিই পারবে’।

ভেনেজ়ুয়েলা সরকারকে কোণঠাসা করতে ভারত-সহ বিভিন্ন দেশকে তেল কেনা বন্ধ করতে অনুরোধ করেছে আমেরিকা। যাতে রাজিও হয়েছে দিল্লি। এর পাল্টা গত কালই ভেনেজ়ুয়েলার মার্কিন দূতাবাস ৭২ ঘণ্টার মধ্যে খালি করার নির্দেশ দিয়েছেন মাদুরো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE