নরওয়ের প্রমোদ তরী ভাইকিং স্কাই। ছবি রয়টার্সের সৌজন্যে।
ঢেউয়ের তোড়ে ভয়ঙ্কর দুলছে জাহাজটি। ডেকে দাঁড়ানো লাইফ জ্যাকেট পরা সার সার মানুষগুলোর মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। নরওয়ের সমুদ্রে ‘দ্য ভাইকিং স্কাই’ প্রমোদ-জাহাজটি থেকে পাওয়া এই সিসিটিভি ফুটেজ উস্কে দিল ‘টাইটানিক’-এর মহাবিপর্যয়ের স্মৃতি!
১,৩৭৩ জন যাত্রী নিয়ে নরওয়ের ট্রমসো থেকে স্ট্যাভেঞ্জারের পথে রওনা দিয়েছিল জাহাজটি। শনিবার হঠাৎ মাঝ সমুদ্রে একটি ইঞ্জিন খারাপ হয়ে যাওয়ায় ঘটে বিপত্তি। আস্তে আস্তে জাহাজটি রুট থেকে সরে ডাঙার দিকে চলে আসছে দেখে তড়িঘড়ি বিপদসঙ্কেত পাঠান কর্তৃপক্ষ। এ দিকে খারাপ আবহাওয়ার জেরে বিশাল বিশাল ঢেউ তুলছে সমুদ্র। তার মধ্যে আরও একটি ইঞ্জিন চালিয়ে নোঙর ফেলা সহজ না হলেও প্রাণপণ চেষ্টা চালান কর্মীরা। সক্ষমও হন। কারণ তা না করলে যে সমুদ্রের মধ্যে পাথরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে যে কোনও মুহূর্তে ঘটে যেতে পারে মহাবিপদ! এতে শুধু সেই সময়টুকুর মতোই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেলেও যাত্রীদের জাহাজে রাখা যে বিপজ্জনক তা বেশ বুঝতে পারেন কর্তৃপক্ষ। ততক্ষণে অবশ্য বিপদসঙ্কেতে সাড়া দিয়ে বেশ কয়েকটি উদ্ধারকারী জাহাজ এবং লাইফবোট চলে এসেছে। এগিয়ে আসেন কয়েকজন স্থানীয় মৎস্যজীবীও। আসে পাঁচটি হেলিকপ্টারও।
তবে খারাপ আবহাওয়ার জন্য ফিরে যেতে হয় জাহাজ ও লাইফবোটগুলিকে। শুরু হয় হেলিকপ্টারের সাহায্যে যাত্রীদের উদ্ধার অভিযান। কর্তৃপক্ষ জানান, শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত ১,৩৭৩ জনের মধ্যে ৫০০ জন যাত্রী ও কর্মীকে হেলিকপ্টারের সাহায্যে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। রবিবার সকালে উদ্ধার অভিযান বন্ধ রেখে যাত্রী এবং কর্মীদের নিয়েই বেশ কয়েকটি ছোট নৌকার সাহায্যে মলডে বন্দরের দিকে টেনে আনা হয় জাহাজটিকে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যাত্রীদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন ব্রিটিশ এবং মার্কিন নাগরিক। আরও ১৪টি দেশের নাগরিকেরাও ছিলেন জাহাজটিতে। সারা রাত ধরে উদ্ধার অভিযান চললেও জাহাজের মধ্যেই থেকে যেতে হয় বেশ অনেক জন যাত্রী এবং কর্মীকে। সকালে জাহাজটি বন্দরের দিকে আনা হলে জাহাজের বাইরে পা রাখেন তাঁরা। এয়ারলিফ্টের মাধ্যমে উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন ক্রিকেটার গ্র্যাহাম স্মিথের মা-বাবাও। টুইট করে উদ্ধারকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন স্মিথ।
‘ভাইকিং ওশান ক্রুজ়েস শিপ’ সংস্থার তৈরি জাহাজটির যাত্রা শুরু ২০১৭ সাল থেকে। প্রস্তুতকারক সংস্থার বক্তব্য, জাহাজটিতে মোট চারটে ইঞ্জিন রয়েছে। একটি খারাপ হলে দ্রুত অন্য একটি ইঞ্জিন চালু করার ব্যবস্থাও রয়েছে এই জাহাজে। কিন্তু এ দিন পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল খারাপ আবহাওয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy