সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গে ইমরান খান।—ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ অন্যদের পিছনে ফেলে তাঁকে সেনাপ্রধানের পদে বেছে নেওয়ার প্রধান কারণ ছিল কামার জাভেদ বাজওয়ার সহজাত প্রবৃত্তি— পিছনে থেকে কাজ করা। তা ছাড়া গণতন্ত্রের প্রতি দায়বদ্ধতা অপেক্ষাকৃত নরমপন্থার জন্য তিনি পরিচিত।
বাজওয়া সেনাপ্রধান হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই আইএসআই প্রধান হিসাবে বেছে নেন নিজের ঘনিষ্ঠ জেনারেল আসিম মুনিরকে। মিলিটারি ইনটেলিজেন্স-এ মুনির কাজ করতেন বাজওয়ার অধীনে। আস্থাভাজন তখন থেকেই।
প্রশ্ন উঠেছে, অভিনন্দন বর্তমানকে মুক্তি দেওয়ার বিশাল ছক্কাটি কি সত্যিই ইমরান মেরেছেন, নাকি অশরীরীর মতো ব্যাটের হাতল পাকড়ে ছিল অন্য কোনও শক্তি? পাক সংবাদ মাধ্যমও এই প্রশ্ন তুলেছে। কারণ, ইমরান যে আসলে সেনা ও আইএসআইয়ের বসানো পুতুল, সে বিষয়ে কারও কোনও সংশয় নেই। তাই এই মাস্টারস্ট্রোকে ইমরানের ব্যাটের হাতলে বাজওয়া ও মুনিরের দস্তানা মোড়া হাতও দেখছে তারা।
আন্তর্জাতিক মানচিত্রে আজ পাকিস্তানের ছবি অনুজ্জ্বল তো বটেই, ভিতরের ক্ষয়ের দাগও বাইরে এসে পড়েছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। উস্কে তোলা সন্ত্রাসবাদ দেশের ভেতরেই বিস্ফোরক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। আবার আন্তর্জাতিক নজরদারি সংস্থা (এফএটিএফ)-র খাঁড়ার তলায় মাথা পেতে রয়েছে ইসলামাবাদ। সেপ্টেম্বরে ওই সংস্থা নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে। তার অর্থ এমনিতেই অথর্নৈতিক দূরবস্থায় থাকা পাকিস্তান আরও বিপাকে পড়বে। বেসুরে বাজছে বন্ধু চিন। এত দিনের মিত্র দেশ আমেরিকাও রুষ্ট। জঙ্গিদের স্বর্গোদ্যানের বিষয়টি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদও কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
এমনিতেই অর্থনৈতিক অথবা কূটনৈতিক ভাবে দেশে প্রবল চাপ তৈরি হলে পাক সেনা তথা আইএসআই কিছুটা পিছনের পায়ে চলে যায়। নিজেদের ঘাড়ে দায় নিতে চায় না সামরিক তন্ত্র। পিছনে বসে কলকাঠি নাড়তে চায়। আন্তর্জাতিক তালিকায় থাকা জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির সঙ্গে তাদের সংযোগের বিষয়টি নিয়ে বিশ্বের সামনে ভারসাম্যের নানা খেলা খেলতে হয় পাক সেনাকে। ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে এই খেলা কঠিন হয়ে উঠেছে। ইমরানকে দিয়ে ছক্কা মারানোর সেটাও একটা কারণ। তা ছাড়া বাজওয়া বা মুনিরেরা এমনিতেই উচ্চকিত নন।
বাজওয়ার সঙ্গে ইমরানের রয়েছে ক্রিকেট সখ্যও। এক সময়ে উইকেট কিপিং করেছেন পাক সেনাপ্রধান। ক্ষমতায় আসার ১০০ দিন পূর্তিতে ইমরান নিজেই জানিয়েছিলেন, ‘‘সব সিদ্ধান্ত আমি নিজে নিয়েছি। তবে এমন কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি, যাতে সেনাবাহিনীর সমর্থন নেই। জেনারেল বাজওয়া সব সময়ে আমার পাশে রয়েছেন। পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফ-এর ইস্তাহারে পুরো সমর্থন রয়েছে তাঁর। আগের জমানার সামরিক ব্যবস্থা এবং সরকারের মধ্যে কোনও সংঘাত নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy