সেই পোস্টার
‘তাঁর’ জন্য অপেক্ষা করছে দেড়শো কোটি ডলার! কিন্তু তিনি কে? প্রশ্নটি এখন সাউথ ক্যারোলাইনার বাসিন্দাদের মুখে মুখে। উত্তর অধরা।
গত বছর অক্টোবর মাসে ঘোষিত হয় মেগা মিলিয়ন্স জ্যাকপটের একটি লটারির পুরস্কার। আর্থিক মূল্য ছিল দেড়শো কোটি ডলার। আমেরিকার ইতিহাসে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চতম পুরস্কার মূল্য বলে দাবি উঠেছে। কিন্তু এপ্রিল মাসের ১৯ তারিখ বিকেল ৫টার মধ্যে সই করা টিকিটটি নিয়ে কলোম্বিয়ায় ‘সাউথ ক্যারোলাইনা লটারি’র দফতরে কেউ পুরস্কারটি দাবি করতে না এলে পুরোটাই ফস্কে যাবে!
জানা গিয়েছে, সিম্পসনভিলের কে সি মার্ট থেকে ২০ অক্টোবর টিকিটটি বিক্রি হয়েছিল। ২৩ অক্টোবর রাত এগারোটা নাগাদ লাকি ড্র হয়। দোকানের কর্ণধার সি জে পটেল নিজেও জানতেন না যে জয়ীর টিকিটটি তাদের দোকান থেকেই বিক্রি হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘পরের দিন সকাল ছ’টা নাগাদ দোকান খুলতে এসে কর্মীরা দেখেন, পার্কিং লটে অপেক্ষা করছে পুলিশ।’’ পুলিশিই সিসিটিভি ফুটেজের টেপটি নিয়ে গিয়েছে বলে জানান তিনি। ফলে পটেলের আক্ষেপ, ‘‘কখন যে আমরা টিকিটটি বিক্রি করলাম এবং কাকেই বা করা হল, সে বিষয়ে আমরাও সম্পূর্ণ অন্ধকারে।’’
স্থানীয় যে সব মানুষ এই ধরনের লটারির টিকিট কাটেন, তাঁরা বারবার নিজেদের টিকিটের নম্বর মিলিয়ে নিচ্ছেন। যেমন স্থানীয় বাসিন্দা ক্রিশ্চিয়ান পরচাক। এই লটারির বেশ অনেকগুলো টিকিট কেটেছিলেন। বললেন, ‘‘আগেও মিলিয়েছি, তা সত্ত্বেও বারবার টিকিটের নম্বরটি মেলাচ্ছি। যদি মিস করে গিয়ে থাকি কোনও ভাবে!’’
তবে এতে অন্য ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন দোকানেরই এক কর্মী ক্রিস ওয়াটসন। তাঁর সন্দেহ, জ্যাকপটের পুরস্কার মূল্যটি হয়তো দিতেই চায় না সংস্থা। বরং এই হিড়িকে আরও বেশি টিকিট বিক্রি করার জন্যেই এই ফাঁদ। তাঁর যুক্তি, যদি পুরস্কারপ্রাপক সামনে না-ই আসেন তা হলে আরও একটি জ্যাকপট করে অর্থমূল্যটি নতুন প্রাপকের হাতে তুলে দিলেই হয়! কিন্তু সংস্থা তা করছে না। পুরস্কারটির কোনও দাবিদার না পাওয়া গেলে তা আমেরিকার বিভিন্ন প্রদেশের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। যাতে আখেরে ক্ষতি সাউথ ক্যারোলাইনারই। কারণ পুরস্কারটি ওই অঞ্চলের কেউ জিতলে তাঁর থেকে প্রায় ৬১০ লক্ষ ডলার কর পেত রাজ্য। এমনকি বিক্রেতা দোকানটির হাত থেকেও ফস্কে যাবে প্রায় ৫০ হাজার ডলার বোনাস। যদিও তাদের দোকানের টিকিটে ‘জ্যাকপট লেগেছে’ রটে যাওয়ার পর থেকে লটারির টিকিট বিক্রি এক লাফে অনেকটাই বেড়েছে।
লটারি সংস্থার ডিরেক্টরের কথায়, ‘‘অনেক সময়েই আইনি, আর্থিক বা আয়কর সংক্রান্ত পরামর্শ নিতে সময় নেন বিজেতারা। বা হয়তো নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক থাকেন। তবে পুরস্কার নিতে কেউ-ই এত দেরি করেননি।’’ বাতাসে ভাসছে নানা মুখরোচক গল্প। কেউ বলছেন, পুরস্কার মূল্য এতই বড় যে তা জিতেছেন শুনেই হয়তো প্রাণ হারিয়েছেন বিজেতা! কারও মত, হয়তো আর্বজনায় উড়ে পড়ে হারিয়েছে টিকিট। কারও কারও বিশ্বাস, বিজেতা আসলে ঘাপটি মেরে রয়েছেন, ঠিক সময় এসে ঠিকই চুপিচুপি পুরস্কারটি তুলে নেবেন!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy