মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে গোটা বিশ্ব।
ট্রাম্পের সিঙ্গাপুর সফর নিয়ে শো চলছিল মার্কিন চ্যানেলে। হোয়াইট হাউসের প্রাক্তন যোগাযোগ অধিকর্তা অ্যান্টনি স্কারামুচির সঙ্গে কথা বলছিলেন উপস্থাপক অ্যাবি হান্টসম্যান। ট্রাম্প আর কিম নিয়ে বলতে বলতে হঠাৎ তাঁর মন্তব্য, ‘‘দুই একনায়কের বৈঠকে
যা-ই ঘটুক না কেন... আমরা যা দেখছি, সেটা ইতিহাস!’’ ব্যস আর যায় কোথায়। সিঙ্গাপুরের বৈঠকের আগে ইন্টারনেট-ঝড়, হান্টসম্যান ট্রাম্পকে ‘একনায়ক’ বললেন!
স্কারামুচি অবশ্য লাইভ শোয়ে কোনও রকম ভাবান্তর না দেখিয়ে বৈঠকের তাৎপর্য বোঝাতে শুরু করেন।
পরে টুইটারে হান্টসম্যান ক্ষমা চেয়ে নেন। বলেন, ‘‘দু’জনকে একনায়ক বলে ফেলেছি। একেবারেই ভুল করে। আমি এটা বোঝাতে চাইনি।’’ যদিও টুইটারে এক জনের সরস সংযোজন, ‘‘এই অনুষ্ঠানের ইতিহাসে এত সৎ মন্তব্য এর আগে শোনা যায়নি!’’
হোয়াইট হাউসের সাউথ গেটের সামনে বিভিন্ন পোস্টার নিয়ে বসেছিলেন বছর পঞ্চাশের এক প্রৌঢ়। সেখানেও পোস্টারে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষোভ। অনেক পর্যটক এসে ওই প্রৌঢ়ের সঙ্গে ছবি তুলছেন। কথাও বলে যাচ্ছেন। হাওয়া গরম একটা বিষয় নিয়েই— সিঙ্গাপুরে কালকের বৈঠক কতটা সফল হবে?
প্রৌঢ় বললেন, ‘‘একদিনের বৈঠকে কিছু হয় না। শান্তি আসে দীর্ঘ প্রচেষ্টায়। তবে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছি এই বৈঠকের দিকে।”
আরও পড়ুন: ‘চৈত্র সেলের’ সিঙ্গাপুরে কি দর কষাকষি!
টিভি চ্যানেলের পাশাপাশি সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় বৈঠক নিয়ে একাধিক খবর। ওয়াশিংটনে সাধারণ মানুষ এমনিতে রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা প্রকাশ্যে বিশেষ করেন না। আগামিকালের বৈঠক নিয়ে অবশ্য কিছুটা ব্যতিক্রম দেখা গেল। রেস্তরাঁ থেকে শুরু করে শপিং মল— ট্রাম্প-কিম মুখোমুখি হলে কী হবে, চলছে চর্চা।
এখানে পর্যটকদের জন্য গাইডের কাজ করেন বছর পঁচিশের কালাস্কি। শহর ঘোরানোর ফাঁকে কথায় কথায় বললেন, ‘‘বৈঠকটা ঐতিহাসিক। তবে ট্রাম্প সরকার সত্যিই কতটা শান্তির জন্য প্রস্তুত, সেই প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।” বৈঠক সফল হোক না হোক, কিমের মতো জাঁদরেল নেতা যে তাঁর ‘কমফোর্ট জ়োন’ উত্তর কোরিয়া থেকে বেরিয়ে সিঙ্গাপুরে এসেছেন, তা দেখে কেউ কেউ মনে করছেন, বৈঠকে অন্তত কিছুটা এগিয়ে থাকবেন ট্রাম্পই। ওয়াশিংটনের ট্যাক্সিচালক, ট্রাম্প-সমর্থক জর্জ বলেন, “কিম পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে তেমন গুরুত্ব দেবেন বলে মনে হয় না। তবে ওঁদের দু’জনকেই বোঝা দায়! শেষ পর্যন্ত এই বৈঠক থেকে হয়তো কিছুই হবে না।”
ট্রাম্পের মধ্যে এমনিতেই ধারাবাহিকতা নেই বলে মনে করেন ওয়াশিংটনের বহু সাধারণ নাগরিক। তাঁদের মতে, সকালে একটা বিষয় নিয়ে হয়তো এক রকম টুইট করলেন প্রেসিডেন্ট। বিকেলে ওই বিষয় নিয়েই ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে ফের টুইট। ওয়াশিংটনে কর্মরত ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুবর্ণ বারাণসীর কথায়, “যে কোনও বিষয় নিয়ে বারবার মত পাল্টান। সাধারণ মানুষ খুবই বিরক্ত। উত্তর কোরিয়া নিয়েও ট্রাম্পের নীতি কবে পাল্টে যাবে, কেউ জানে না।” তবে এ শহরের বাসিন্দা, পেশায় মিউজিয়াম কর্মীর আশা, “বৈঠক সফল হলে আশা করি প্রেসিডেন্ট মত বদলে ফেলবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy