Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

দাবানলের আঁচে পুড়ছে হলিউডও, বাঁচতে ঘর ছাড়লেন লেডি গাগারা

তারকারা নিজেদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে জানিয়েছেন সে কথা। 

জ্বলছে তাল গাছ। নেভাতে ব্যস্ত দমকলকর্মী। ক্যালিফর্নিয়ার ম্যালিবুতে। ছবি: রয়টার্স।

জ্বলছে তাল গাছ। নেভাতে ব্যস্ত দমকলকর্মী। ক্যালিফর্নিয়ার ম্যালিবুতে। ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
লস অ্যাঞ্জেলেস শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৮ ০২:১৬
Share: Save:

দাউদাউ করে জ্বলছে ক্যালিফর্নিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। আর সেই আগুনের আঁচ গিয়ে পড়েছে হলিউড তারকাদের অন্দরমহলেও।

গত কালই পুড়ে প্রায় ছারখার হয়ে গিয়েছে প্যারাডাইস শহর। এ বার খালি করতে হয়েছে ক্যালিফর্নিয়ার আর এক ছবির মতো অভিজাত সৈকত শহর ম্যালিবু। লেডি গাগা, কেটলিন জেনার, অ্যালিসা মিলানো, রেন উইলসন, কিম কার্ডাশিয়ান ওয়েস্ট, কোর্টনি কার্ডাশিয়ানের মতো তারকারা থাকেন এই শহরে। মাত্র ১২ হাজার লোকের বাস। প্রায় সকলকেই নিজেদের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দমকল থেকে। তারকারা নিজেদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে জানিয়েছেন সে কথা।

হলিউড অভিনেতা উইল স্মিথ থাকেন আর এক শহর ক্যালাবাসাসে। লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির সেই শহরও আপাতত ছেড়েছেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘‘এই প্রথম আগুন দেখতে পেলাম। শিখাটা বাড়ির কাছে আসছে। আমাদের বাড়ি ওখানেই। যদিও এখনই ‘ইভ্যাকুয়েশন জ়োন’-এ নেই আমরা। তবে এই দৃশ্যটা দেখতে একটুও ভাল লাগছে না। তাই আপাতত শহর ছাড়ছি।’’ আগুন দেখে তাঁর মেয়ে খুবই আতঙ্কে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ‘মেন ইন ব্ল্যাক’-এর

এই অভিনেতা।

আরও পড়ুন: জ্বলছে ‘স্বর্গ’, ক্যালিফর্নিয়ার দাবানলে মৃত ৫, ঘরছাড়া বহু

শুধু তারকাদের বাড়িই নয়। প্যারামাউন্ট র‌্যাঞ্চ-এর ঐতিহাসিক ‘ওয়েস্টার্ন টাউন’ এলাকাও পুড়ে খাক। বিভিন্ন হলিউড ছবি ও টিভি সিরিজের শুটিংয়ের জন্য পরিচিত এই এলাকা। জনপ্রিয় টিভি সিরিজ ‘ওয়েস্ট ওয়ার্ল্ড’-এর পুরো শুটিংই ওখানে করা। নব্বই বছর ধরে প্রচুর হলিউড ছবিরও শুটিং হয়েছে প্যারামাউন্ট র‌্যাঞ্চ-এ। কত হাজার কোটি ডলারের ক্ষতি, তা হিসেব করা যায়নি এখনও।

দু’দিন হতে চলল। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি ক্যালিফর্নিয়ায়। উল্টে ভয়ানক শুষ্ক আর গরম আবহাওয়া এবং সেই সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ায় সেই আগুন আরও গতি পেয়েছে। গোটা প্রদেশের প্রায় ৭৫ হাজার মানুষকে বাড়ি ছেড়ে আপাতত অন্যত্র সরে যেতে হয়েছে। এঁদের মধ্যে অনেকেই হয়তো ফিরে নিজেদের বাড়ির অংশাবশেষও আর দেখতে পাবেন না।

বাড়ি-ঘর-সম্পত্তি পোড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। পুলিশ জানিয়েছে, শুধুমাত্র প্যারাডাইসেই মৃত্যু হয়েছে ন’জনের। এঁদের মধ্যে চারটি মৃতদেহ মিলেছে গাড়িতে। ধারণা করা হচ্ছে, বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র পালানোর সময় পুড়ে মৃত্যু হয়েছে ওই চার জনের। বাকি পাঁচ জনকে পাওয়া গিয়েছে, তাঁদেরই পুড়ে যাওয়া বাড়ির সামনে। অনেকেই জ্বলন্ত জঙ্গলের ভিতর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার ছবি পোস্ট করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। গোটা প্যারাডাইস শহরে নিখোঁজ প্রায় ৩৫ জন। তাঁরা এখন কোথায়, কী ভাবে আছেন, সে তথ্য নেই পুলিশের কাছেও।

উত্তর আর দক্ষিণ ক্যালিফর্নিয়া জুড়ে এখন শুধু আতঙ্কের কাহিনি। দক্ষিণের থাউজ্যান্ড ওক্‌স শহরও খালি করার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। দিন কয়েক আগে এই শহরেই বন্দুকবাজের হামলায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, মোট তিন ধরনের আগুনের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে দমকলকর্মীদের। ‘ক্যাম্প ফায়ার’, ‘উলজ়ে ফায়ার’ এবং ‘হিল ফায়ার’। ধরন অনুযায়ী আগুনের এলাকাও আলাদা করা হয়েছে। তিন হাজারেরও বেশি দমকলকর্মী আপাতত দিন-রাত এক করে আগুনের সঙ্গে লড়ছেন। আর সেই কাজ করতে গিয়ে জখমও হয়েছেন বেশ কিছু কর্মী।

এর মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি টুইট নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। দাবানল নিয়ে টুইট করতে গিয়ে বন বিভাগকে এক হাত নিয়েছেন তিনি। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবের জন্যই গোটা প্রদেশের এই অবস্থা বলে ক্ষোভ জানিয়েছেন ট্রাম্প। বন বিভাগকে সরকারি অনুদান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দিয়ে রেখেছেন তিনি। এ রকম এক জরুরি অবস্থায় দেশের প্রেসিডেন্টের এ ধরনের টুইটে ক্ষুব্ধ দেশের নাগরিকদের একটা বড় অংশ। গায়িকা কেটি পেরি প্রকাশ্যেই ট্রাম্পের এই মন্তব্যের সমালোচনা করে তাঁকে ‘হৃদয়হীন’ বলেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE