গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
গোটা দেশটা আনন্দে মশগুল। স্কুল-কলেজ-অফিসকাছারি রাস্তাঘাট সর্বত্র একটাই আলোচনা। কোন শহরে কবে কোন ম্যাচ। মস্কোর লুঝনিকি থেকে কালিনিনগ্রাদ, স্পারটাক স্টেডিয়াম থেকে সেন্ট পিটার্সবাগ। কফির কাপ হাতে হোক, কিংবা গিটারে গুনগুন, রাস্তাজুড়ে আলোচনা একটাই ফুটবল। তার মধ্যেই মন ভাল নেই অনেকের। কারণ রাস্তায় বেরিয়ে আর প্রিয় সারমেয়টিকে আশপাশে দেখতে পাচ্ছেন না। রাশিয়ার সোচি শহরেই মিলেছে বেশ কয়েকটি কুকুরের মৃতদেহ। কিন্তু কেন?
প্রদীপের নিচে যেমন অন্ধকার। এও কি তেমনই? বিশ্বকাপ উপলক্ষে রাস্তা সাফ করতে হবে। তাই নাকি সারমেয় নিধন চলছে রাশিয়ায়। সংবাদ সংস্থা বলছে, বিশ্বকাপের আগেই কয়েক হাজার রাস্তার কুকুরকে মেরে ফেলা হয়েছে রাশিয়ার ১১টি শহরে। যাকে বলা হচ্ছে ‘বায়োলজিক্যাল ট্রাশ’ সাফাই অভিযান।
সংবাদ সংস্থার খবর অনুযায়ী, ভিন দেশের অসংখ্য নাগরিক এসেছেন রাশিয়ায়। শহরজুড়ে উৎসবের ঢল। এরই মাঝে এতগুলো কুকুর নাকি বিশ্বকাপ দর্শনার্থী থুড়ি প্রশাসনের বিরক্তির কারণ হয়ে উঠেছিল, আর তাই ফুটবলের আসর জমার আগে থেকেই নাকি বিষাক্ত খাবার খাইয়ে মেরে ফেলা হয়েছে কয়েক হাজার কুকুরকে। খুব ধীরে ধীরে য্ন্ত্রণা না পেয়েই মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েছে নিরীহ প্রাণীগুলি। তারপরই সরিয়ে ফেলা হয়েছে মৃতদেহগুলি। ‘দ্য গার্ডিয়ান’ বলছে, বিষাক্ত খাবার খেয়ে প্রথমে বমি করছে সারমেয়গুলি। আর তারপরই ঘটছে মৃত্যু।এবং তা চুপিসাড়েই।
আরও খবর:মার্কিন অভিবাসন নীতির সমালোচনায় ট্রাম্প-পত্নী মেলানিয়া
ডাইনোসর যুগের ব্যাঙের জীবাশ্ম মিলল মায়ানমারে
প্রশাসনের তরফে যদিও বলা হয়েছে, পথের কুকুরদের অস্থায়ী আশ্রয়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্যই গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাস্তার কুকুরদের কারণে সমস্যা তৈরি হলেও মোটেও মেরে ফেলা হয়নি। তাদের সরানো হয়েছে অস্থায়ী আশ্রয়ে। কারণ শহরে ভিনদেশি অতিথিরা রয়েছেন। অতিথিদের নিরাপত্তার খাতিরেই অস্থায়ী আশ্রয়ে রাখা হয়েছে কুকুরগুলিকে। বিশ্বকাপের শেষেই নাকি মিলবে মুক্তি। যে শহরগুলিতে বিশ্বকাপের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেখানে সারমেয়দের জন্যই আশ্রয়স্থল খুঁজে দিতে চাইছে প্রশাসন। রাস্তাঘাটে কোনও কুকুরকেই দেখা যাচ্ছে না। এটা খুব একটা স্বাভাবিক নয়, মত রাশিয়ার এক পশুপ্রেমীর।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকেও সময় কাটাতে দেখা গিয়েছে প্রিয় সারমেয়দের সঙ্গে। ছবি: এএফপি
‘দ্য গার্ডিয়ান’ সূ্ত্রে খবর, সারমেয় নিধনের জন্য নাকি নিয়োগ করা হয়েছে বেসরকারি একটি সংস্থাকে। রাশিয়ার বিভিন্ন রাস্তায় কয়েক হাজার কুকুরের মৃতদেহের ছবি পোস্ট হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ২০১৪ সালের উইন্টার অলিম্পিক্সের সময় রাশিয়ায় সারমেয় নিধন নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিল প্রশাসন। বিশ্বকাপ ফুটবলের আসরও তার ব্যতিক্রম হল না।
ফিফার একজন মুখপাত্র বলেন, ‘‘ফিফা এবং স্থানীয় সংগঠন কমিটি পশুদের সঙ্গে এমন নিষ্ঠুর আচরণ করতে পারে না।এরকম কিছু যাতে না ঘটে, তা খিতয়ে দেখা হচ্ছে। আমাদের এই দায়িত্ব মনোযোগ গিয়ে পালন করতে হবে।’’
লিওনেল মেসি, মেসাট ওজিলের মতো ফুটবল তারকা কিংবা স্বয়ং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে প্রায়ই প্রিয় সারমেয়র সঙ্গে দেখা গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রিয় পোষ্যটির সঙ্গে প্রায়ই ছবি পোস্ট করেন মেসি। সারমেয় নিধনের খবরে অনেকেই উদ্বিগ্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy