Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

অনলাইনে খড়্গ নিলাম, বিতর্ক

বিশ্ব জুড়েই গত ৪০ বছর ধরে গন্ডার নিয়ে ব্যবসায় নিষেধ রয়েছে। সেই নিষেধ প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়ে কী ভাবে এই নিলামের আয়োজন হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বন্যপ্রাণী বিশারদরা। তাঁদের মতে, এ ধরনের নিলাম ফের চোরাশিকারে উৎসাহ জোগাবে।

সংবাদ সংস্থা
কেপ টাউন শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১০:৩০
Share: Save:

গন্ডারের খড়্গ নিয়ে বেচাকেনার কারবার! তা-ও আবার অনলাইনে! আয়োজন দিব্যি হয়ে গিয়েছিল। তবে শেষমেশ ক্রেতার সংখ্যা আশানুরূপ তো হলোই না। উল্টে নিলাম করতে গিয়ে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের তীব্র সমালোচনার মুখে গোটা ব্যাপারটাই নমো নমো করে শেষ করতে হলো। আয়োজক-গোষ্ঠীর আইনজীবীরাই সখেদে সেই খবর দিয়েছেন।

বিশ্বের সব চেয়ে বড় গন্ডারের খামারের মালিক বলে নিজেকে দাবি করেন জন হিউম। দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের এই ব্যক্তিই তিন দিনের জন্য গন্ডারের খড়্গ অনলাইনে নিলামের আয়োজন করেছিলেন। গত শুক্রবার শেষ হওয়ার কথা ছিল নিলামের। কিন্তু তার মধ্যেই পশুপ্রেমীদের হইচইয়ে পন্ড হয়েছে খড়্গ বেচাকেনা। হিউমের আইনজীবীদের একটি দল অবশ্য এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘গন্ডারের খড়্গের প্রথম বৈধ অনলাইন নিলাম সাফল্যের সঙ্গে শেষ হয়েছে।’ এর বেশি তথ্য তিনি দেননি।

হিউমের আইনজীবী দলের মতে, ‘‘নিলামে কম ক্রেতা পাওয়া গিয়েছে। যতটা আশা করা হয়েছিল, ততটা বিক্রিবাটা হয়নি। কিন্তু আইনি পথে এই ব্যবসা করা যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও হবে।’’ ঠিক কত অর্থে খড়্গ বিক্রি হয়েছে, তার কোনও হদিস মেলেনি। তবে নিলামে নাম নথিভুক্ত করতেই নাকি এক এক জনকে ৭ হাজার ৬২৬ ডলার করে দিতে হয়েছে।

বিশ্ব জুড়েই গত ৪০ বছর ধরে গন্ডার নিয়ে ব্যবসায় নিষেধ রয়েছে। সেই নিষেধ প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়ে কী ভাবে এই নিলামের আয়োজন হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বন্যপ্রাণী বিশারদরা। তাঁদের মতে, এ ধরনের নিলাম ফের চোরাশিকারে উৎসাহ জোগাবে।

জোহানেসবার্গের উত্তরে হিউমের খামারে দেড় হাজারেরও বেশি গন্ডার রয়েছে বলে দাবি। কালে কালে তিনি ছ’টন খড়্গ জমিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এর পরেই নিলামের অনুমতি খুঁজতে মাঠে নামেন হিউম। ২৬৪টি খড়্গ বিক্রির তোড়জোড় করছিলেন তিনি। যার ওজন প্রায় ছ’শো কিলোগ্রামের মতো। কিন্তু বিষয়টি বেআইনি জেনেও চুপ বসে নেই তিনি। আগামী মাসে ফের নিলাম করবেন বলে জানিয়েছেন হিউম। তবে সেটা হবে ‘অফলাইনে!’

জোহানেসবার্গ প্রশাসনের তরফে এ ব্যাপারে এখনও কোনও মন্তব্য শোনা যায়নি। গত এপ্রিলে অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকায় গন্ডার-ব্যবসায় আট বছর আগেকার অন্তর্দেশীয় স্থগিতাদেশ তুলে দেয় সেখানকার শীর্ষ আদালত। গোটা বিশ্বের ৮০ শতাংশ গন্ডারের বাস দক্ষিণ আফ্রিকায়। সংখ্যায় যা কুড়ি হাজারের মতো। কিন্তু গত এক দশকে চোরাশিকারীদের হাতে প্রাণ গিয়েছে সাত হাজারেরও বেশি গন্ডারের। এশিয়ায় এই প্রাণীর খড়্গের মূল্য যথেষ্ট। কালোবাজারে আগে খড়্গের কিলোপ্রতি ষাট হাজার ডলার দর উঠত। তবে এখন বিশেষজ্ঞদের দাবি, ভিয়েতনামে কালোবাজারে ২৪ হাজার ডলারে বিকোচ্ছে এক কিলোগ্রাম খড়্গ!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE