এত দিন ছিল ত্রাস ছড়ানোর মঞ্চ। কিন্তু এখন সেই সোশ্যাল মিডিয়াই আইএস জঙ্গিদের চক্ষুশূল। তিক্ততা এতটাই যে সম্প্রতি টুইটারের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসি-সহ সে সংস্থার প্রত্যেক কর্মীকে খুনের হুমকি দিতে শুরু করেছে জঙ্গিরা। তাদের দাবি, জঙ্গিদের অ্যাকাউন্ট বন্ধের প্রক্রিয়ায় এ বার ক্ষান্ত দিক টুইটার। না হলে প্রাণঘাতী হামলা চলবে ডরসি ও তাঁর কর্মীদের উপর।
অথচ ইরাক ও সিরিয়ায় কর্তৃত্ব শুরুর প্রথম দিন থেকে এই টুইটারকেই প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে আইএস। কখনও নিজেদের কট্টরপন্থী মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার কাজে, কখনও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ভিডিও দুনিয়ার সামনে তুলে ধরার সময়, কখনও আবার ছিন্নভিন্ন দেহের ছবি প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে বার বার ব্যবহার করেছে টুইটারকেই। যা দেখে অনেকে বলতে শুরু করেছিলেন, অল্প সময়ে আল-কায়দাকে পিছনে ফেলে যে ভাবে বিশ্বের পয়লা নম্বর জঙ্গিগোষ্ঠী হয়ে উঠেছে আইএস, তার পিছনে বড় ভূমিকা এই সোশ্যাল মিডিয়ার। কারণ এতে ত্রাসের বার্তা পলকের মধ্যে গোটা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া যায়।
আর এই বার্তা নিয়েই যত গণ্ডগোল। আসলে হিংসাত্মক কথাবার্তা ও ছবি পোস্ট করায় একের পর এক জঙ্গিদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে শুরু করেছে টুইটার। ওই সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, সেখানে এ ধরনের কথাবার্তা প্রচার করা যাবে না। তা সত্ত্বেও যখনই এমন কথা বা ছবি পোস্ট করা হচ্ছে, তখনই সেগুলোকে টুইটার থেকে সরিয়ে দিচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। সংস্থার প্রধান সচিব ডিক কস্টোলো গত অক্টোবরেই বলেছিলেন, “এমনটা আমাদের নিয়মবিরুদ্ধ। যে দেশ থেকে আমরা এই সোশ্যাল মিডিয়ার কাজ পরিচালনা করি, সে দেশের নিয়মও এ ধরনের জঙ্গি সংস্থার প্রচারকে সমর্থন করে না। তাই যখনই এমন অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাই, তখনই বন্ধ করে দিই।” এতেই বেজায় চটেছে আইএস। সোমবার টুইটারের উদ্দেশে একটি সাইটে তারা লেখে, “প্রথম থেকেই বলে আসছি, এ যুদ্ধ তোমাদের নয়। কিন্তু তোমরা বুঝলে না। আমাদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেই যাচ্ছো। কিন্তু আমরাও ফিরে আসছি।” তার পরই হুমকি, “এর পরও যদি এই প্রক্রিয়া বন্ধ না কর, তা হলে আইএস সেনাদের পরবর্তী লক্ষ্য তোমরাই হবে।”
বিষয়টি নিয়ে অবশ্য স্পষ্ট কিছু বলেনি টুইটার। তাদের এক মুখপাত্র শুধু বলেন, “আমাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দলটি ইতিমধ্যেই ওই হুমকি-পোস্ট খতিয়ে দেখছে।” তা হলে কি এত দিন জঙ্গি মতাদর্শ প্রচারের মঞ্চ হিসেবে ব্যবহৃত টুইটার হুমকির কাছে নতিস্বীকার করার কথা ভাবছে? উত্তর নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy