Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পড়ুয়ার সঙ্গে প্রেমে বাঁধ হার্ভার্ডে

বাঁধন ছিলই। সেটাকে আরও শক্ত করল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এর পর থেকে কোনও পড়ুয়ার সঙ্গে প্রেম বা যৌন সম্পর্ক তৈরি করতে পারবেন না অধ্যাপকরা। একই নিষেধাজ্ঞা চেপেছে অধ্যাপক নন এমন শিক্ষাকর্মীদের উপরও। বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের যৌন হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছিল ওবামা প্রশাসন। যার জেরে আগেই পরিচালন নীতিতে পরিবর্তন এনেছিল বেশ কিছু মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়। বৃহস্পতিবার সে পথে হাঁটল হার্ভার্ডও।

সংবাদ সংস্থা
নিউ ইয়র্ক শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:১৬
Share: Save:

বাঁধন ছিলই। সেটাকে আরও শক্ত করল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এর পর থেকে কোনও পড়ুয়ার সঙ্গে প্রেম বা যৌন সম্পর্ক তৈরি করতে পারবেন না অধ্যাপকরা। একই নিষেধাজ্ঞা চেপেছে অধ্যাপক নন এমন শিক্ষাকর্মীদের উপরও। বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের যৌন হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছিল ওবামা প্রশাসন। যার জেরে আগেই পরিচালন নীতিতে পরিবর্তন এনেছিল বেশ কিছু মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়। বৃহস্পতিবার সে পথে হাঁটল হার্ভার্ডও।

তবে এই সিদ্ধান্ত একতরফা নয় বলে দাবি হার্র্ভার্ডের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক অ্যালিসন জনসনের। কলা ও বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপকদের কমিটির প্রধান অ্যালিসন জানিয়েছেন, এক বছর ধরে পড়ুয়া, শিক্ষাকর্মী ও অধ্যাপক সকলের সঙ্গে কথা বলেই যৌন হেনস্থা সংক্রান্ত নীতিতে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর আগে যে নিয়ম ছিল, তাতে বলা হয়েছিল কোনও অধ্যাপকের অধীনে গবেষণা করছেন বা তাঁর সরাসরি ছাত্র, এমন কারও সঙ্গে প্রেম বা যৌন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে পারবেন না অধ্যাপকরা। কিন্তু এ নিয়মেও ফাঁক ছিল বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। তাঁদের মতে, এর ফলে অন্য বিভাগের পড়ুয়া বা অন্য কোনও অধ্যাপকের অধীনে গবেষণা করছেন এমন ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে অধ্যাপকদের প্রেম ও যৌন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে কোনও বাধা ছিল না। বৃহস্পতিবারের পর তাতেও নিষেধাজ্ঞা চাপাল হার্ভার্ড।

স্বাভাবিক ভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠছে এতে। একাংশের প্রশ্ন, দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ কোনও সম্পর্কে জড়াবেন কি না, সে বিষয়ে হুকুম দেওয়ার অধিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের আছে কি? কর্তৃপক্ষের যুক্তি, পড়ুয়াদের যৌন হেনস্থা ঠেকাতেই এই ব্যবস্থা। তাঁদের আরও দাবি, আপাতদৃষ্টিতে অধ্যাপক-পড়ুয়ার প্রেম বা যৌন সম্পর্ক সহমতে তৈরি হয়েছে বলে মনে

হলেও তার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন থাকেই। কারণ সে সহমতে অধ্যাপকের ‘পরোক্ষ’ চাপ কতটা থাকে, তা নিয়ে বহু ক্ষেত্রে সংশয় তৈরি হয়। তাঁর যুক্তি, অধ্যাপক-পড়ুয়ার মধ্যে সম্পর্কটা যাতে লেখাপড়া কেন্দ্রিক থাকে, তার ব্যবস্থা করতেই এই সিদ্ধান্ত।

অনেকের ধারণা, এই ব্যবস্থা বিতর্কিত হলেও অপ্রত্যাশিত নয়।

এর আগে একই পথে হেঁটেছে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া ও ইয়েল ইউনিভার্সিটি। এবং এমন পদক্ষেপের পিছনে সঙ্গত কারণও রয়েছে। আসলে ১৯৯০ সালে এক মার্কিন আদালত রায় দিয়েছিল, কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠলে অভিযোগকারীকে বেশ বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়কে। তার পরই নড়ে বসে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। সে চাপ বেড়ে যায় যখন গত মে-তে কিছু নির্বাচিত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশ করে মার্কিন শিক্ষা মন্ত্রক। যৌন হেনস্থার ঘটনায় উপযুক্ত পদক্ষেপ না করার অভিযোগ ওঠে এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে। সে তালিকায় ছিল হার্ভার্ডও।

তার পরই জোরদার আলোচনা শুরু করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। সেই আলোচনারই ফল এ বার জানল বিশ্ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

love affair sex harvard university
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE