বিএনপি-জামাতে ইসলামি জোটের ডাকা অনির্দিষ্ট কাল অবরোধে বিচ্ছিন্ন নাশকতার মধ্যেই রবিবার তিনটি টাইম বোমা পাওয়া গেল হাইকোর্টে এজলাসের মধ্যে। এ দিনই সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবীদের টয়লেটে মিলেছে গুলিভরা একটি পিস্তলও। পুলিশ বলছে আতঙ্ক ছড়াতে পরিকল্পনা মাফিক এই কাজ করা হয়েছে।
খালেদা জিয়ার পুত্র বিএনপি নেতা তারেক রহমান লন্ডন থেকে ঘোষণা করেছেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতন না-ঘটিয়ে এই অবরোধ প্রত্যাহার করা হবে না। এই ঘোষণার পরে নাশকতা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়ে গিয়েছে। কুমিল্লায় লাঙলকোট স্টেশনের কাছে দুষ্কৃতীরা রাতের অন্ধকারে প্রায় ছয় ফুট লাইন কেটে রাখায় শনিবার লাইনচ্যুত হয়েছিল চট্টগ্রামগামী গোধুলি এক্সপ্রেস। কুয়াশার জন্য গতি কম থাকায় বড় দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি এড়ানো গিয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা-সহ সর্বত্র চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে গাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনা চলছেই। রবিবার অন্তত ২৫টি বাস ও গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। আচমকা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে বেশ কিছু মোটরগাড়িও। গত সাত দিনে এই নিয়ে প্রায় ২০০ গাড়িতে আগুন দেওয়া ও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। রবিবারও চার জন মারা যাওয়ায় অবরোধের নাশকতায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫-এ দাঁড়িয়েছে। রাঙামাটি শহরে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় রবিবার রাত থেকে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
এর মধ্যেই ঢাকাকে বাকি দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার পরিকল্পনা নিয়ে ঢাকার আশপাশের ৮টি জেলা-সহ মোট ১৪টি জেলায় কাল হরতাল ডেকেছে বিএনপি-র ছাত্রশাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। জামাতে ইসলামি সেই হরতালে সমর্থন জানানোয় ব্যাপক ন্যশকতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করেছে সরকার। শাসক দল আওয়ামি লিগের মুখপাত্র মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, “পথে কর্মী নামাতে না পেরে বিএনপি চোরাগোপ্তা নাশকতায় মানুষ খুনের চক্রান্তে নেমেছে। বেআইনি পথে সরকার দখলের দিবাস্বপ্ন দেখছে তারা। মানুষই পথে নেমে তাদের প্রতিহত করবেন।” নাশকতা মোকাবিলায় ঢাকার ১৬টি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা করেছে আওয়ামি লিগও। সরকার ফেলার বড়সড় চক্রান্তের গোয়েন্দা রিপোর্ট পেয়ে ৩ তারিখ খালেদা জিয়াকে তাঁর দফতরে অবরুদ্ধ করে পুলিশ। তার পর থেকেই তাঁর ডাকে এই অবরোধ চলছে।
বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা গত কয়েক দিন ধরেই হাইকোর্টের মধ্যে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। এক বিচারককে মারধরও করা হয়েছে। ঢাকায় একই বাড়িতে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট অবস্থিত। এ দিন হাইকোর্টে তিনটি এজলাসের মধ্যে আইনজীবীদের বসার আসন থেকেই তিনটি মোটা বই পাওয়া যয়। তার মধ্যে সন্দেহজনক জিনিস দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশের বম্ব স্কোয়াড এসে সেগুলিকে উদ্ধার করে নিয়ে যান। বম্ব স্কোয়াডের দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার রহমতুল্লা চৌধুরী জানান, তিনটিই টাইম ডিভাইস লাগানো বোমা। তবে এগুলির মধ্যে কম মাত্রার বিস্ফোরক মিলেছে।
পুলিশের দাবি, আদালতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক ছড়ানোর উদ্দেশ্যেই এগুলি রাখা হয়েছিল। এ দিনই সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবীদের শৌচাগার থেকে পাঁচটি গুলিভরা একটি পিস্তল উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আট দিন আগে এই আদালত থেকেই সেটি খোয়া গিয়েছিল বলে পুলিশে জানিয়েছিলেন পিস্তলটির মালিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy