ইতালীয় ডিফেন্স বনাম লাতিন আক্রমণ। জুভেন্তাস বনাম বার্সেলোনা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল দেখতে শুধু আমিই মুখিয়ে নই। বন্ধুবান্ধবরাও দেখা হলে জিজ্ঞেস করছে কে জিতবে মেসি না পির্লো? প্রথমেই বলে রাখি ম্যাচটা দুটো জিনিসের উপরে নির্ভর করে আছে। এক, সুয়ারেজ-মেসি-নেইমারকে কোন চালে মাত দেবেন আলেগ্রি? দুই, জুভেন্তাস কি ইতালীয় দলগুলোর মতো শুরুতেই সবাইকে পিছনে নামিয়ে দেবে? নাকি গোল করার জন্য ঝাঁপাবে?
বার্সেলোনার শক্তি বলতে ফরোয়ার্ড লাইন। যত দেখছি তত অবাক হচ্ছি মেসি-নেইমার-সুয়ারেজের দাপট দেখে। তিন জনের মধ্যে যেন টেলিপ্যাথিক কম্বিনেশন। মেসি পাস দিলে নেইমার জানে কোথায় থাকতে হবে। নেইমার পাস দিলে সুয়ারেজ জানে কোথায় থাকতে হবে। আবার গোল ফিনিশার হিসাবে মেসিকে একশোয় একশো দিলে বাকি দু’জনকে লেটার মার্কস দেওয়াই যায়। এই তিন জনের জন্য বার্সার দুর্বল ডিফেন্স সারা মরসুম সমালোচনার মুখে পড়েনি। কথাই আছে, অ্যাটাক ইজ দ্য বেস্ট ফর্ম অব ডিফেন্স। অর্থাত্ তুমি যদি দু’গোল খেয়ে পাঁচ গোল করার ক্ষমতা রাখো, কেউ তোমার দু’গোল খাওয়ার কথা মনে রাখবে না। তার উপরে আবার ইভান রাকিটিচ খুব দক্ষ ভাবে মাঝমাঠ সামলাচ্ছে। মনে রাখতে হবে জাভির মতো এক বড় মাপের ফুটবলারের পরিবর্তে খেলা সহজ কথা নয়। তাতেও রাকিটিচের আত্মবিশ্বাস কেউ দমিয়ে রাখতে পারেনি। গোলের পাস যেমন দিতে পারে, তেমনই গোলও করতে পারে।
বার্সা শক্তিশালী হলেও জুভেন্তাসকে হেলাফেলা করলে মুশকিল হবে। মনে রাখতে হবে দলে জিয়ানলুইগি বুফোঁর মতো গোলকিপার আছে। যার দু’হাত আজও বিশ্বমানের সেভ করতে পারে। মাঝমাঠে একটা আন্দ্রে পির্লো আছে। যার কাজ ডিপ মিডফিল্ড থেকে স্ট্রাইকারদের অনবরত গোলের পাস বাড়িয়ে যাওয়া। ফরোয়ার্ডে একটা কার্লোস তেভেজ আছে। যে কখন নিঃশব্দে বিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে চলে যাবে টের পাওয়া মুশকিল। জুভেন্তাস আবার আন্ডারডগ হয়েই বার্লিনে খেলবে। তাতে খোলামেলা খেলতে পারবে ওরা।
বার্সার ফরোয়ার্ড লাইন ভাল হলেও ডিফেন্স অতটা ভাল নয়। পিকে এখন আর আগের পিকে নেই। মাসচেরানো আবার হোল্ডিং মিডিও হিসাবে বেশি ভাল। আমার মতে বার্সার তিন ফরোয়ার্ডকে আটকাতে ম্যান মার্কিং করতে গেলেই বিপদে পড়বে জুভেন্তাস। বরং জোনাল মার্কিংয়ে আটকানোর চেষ্টা করুক। ত্রিফলার মধ্যে সবথেকে ভাল কে নতুন করে বলতে হবে না। বার্সার সেই ছোট্টখাট্টো দশ নম্বরকে জায়গা দিলে চলবে না। ফরোয়ার্ড প্লেয়ারদের সঙ্গে মেসির সাপ্লাই লাইন কাটতে হবে। যে জায়গায় ও নড়াচড়া করে সেগুলোতে জমাট বাঁধতে হবে।
ফুটবল সমর্থক হিসাবে আশা করবে একটা মনোরঞ্জক ম্যাচ দেখি। সব সময় মনে করি ফুটবল মানেই সমর্থকদের আনন্দ দেওয়া। এই ফাইনালটাও যাতে সেটাই করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy