Advertisement
E-Paper

ফুরফুরে বাগানে ধাঁধার খেলা

‘ক্লোজ ডোর’ বলে কিছু নেই। অবাধে প্র্যাকটিস দেখার অনুমতি। কথা বলায় কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। যে কোনও ফুটবলারকে যা খুশি প্রশ্ন করা যাবে। ক্লাব লনের চেয়ারে বসে আড্ডার মেজাজে মোহন-টিডি সুভাষ ভৌমিক। ডার্বি ম্যাচের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে বাগানের অনেক গোপন রহস্যই খুঁড়ে বার করা যেতেই পারে।

প্রীতম সাহা

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৪ ০৩:২০
বোয়া-ফাতাই। বাগানের ব্রহ্মাস্ত্র। ছবি: উৎপল সরকার।

বোয়া-ফাতাই। বাগানের ব্রহ্মাস্ত্র। ছবি: উৎপল সরকার।

‘ক্লোজ ডোর’ বলে কিছু নেই। অবাধে প্র্যাকটিস দেখার অনুমতি।

কথা বলায় কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। যে কোনও ফুটবলারকে যা খুশি প্রশ্ন করা যাবে।

ক্লাব লনের চেয়ারে বসে আড্ডার মেজাজে মোহন-টিডি সুভাষ ভৌমিক। ডার্বি ম্যাচের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে বাগানের অনেক গোপন রহস্যই খুঁড়ে বার করা যেতেই পারে।

হাতের সামনে পড়ে থাকা লোভনীয় সুযোগগুলো তারার মতো জ্বলজ্বল করলেও আসলে হাত কামড়ানো ছাড়া কোনও উপায় নেই!

সৌজন্যে ময়দানের ‘ভোম্বলদা’।

তাঁর বাগানে ঢুঁ মারলে মনে হবে, এই বুঝি সবই হাতের মুঠোয়। কিন্তু কাছাকাছি গেলেই সব মরীচিকা!

‘ক্লোজ ডোর’ বাতিল, কিন্তু শুরু ধাঁধার খেলা। দু’দিনে দু’রকম কম্বিনেশন প্র্যাকটিস করালেন সুভাষ। একমাত্র ডিফেন্সের চার জনকে বাদ দিলে বাকি টিমটাই বদলে দিলেন তিনি। বোঝার উপায় নেই, ডার্বিতে কে খেলবেন কে খেলবেন না। বাগান টিডি বলছিলেন, “আর ক্লোজ ডোর লাগবে না। যে কারণে ওটা দরকার ছিল, সেটা বুধবারই সেরে ফেলেছি। আর্মি ম্যাচ বাতিল হওয়াটা এক দিক দিয়ে সাপে বর হয়েছে। নির্ঝঞ্ঝাটে প্র্যাকটিস করে নিতে পেরেছি।”

বাগান-ফুটবলারদের কথা বলার উপর নিষেধাজ্ঞা সরলেও, কাতসুমি-বোয়া থেকে কিংশুক-রাম— কেউই সেই সাহস পেলেন না যে, সংবাদমাধ্যমের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলবেন। আড্ডার মেজাজে থাকা সুভাষ স্বয়ং অনুরোধের ঝুলি নিয়ে তাঁর দলের ড্রেসিংরুমের সামনে কমপক্ষে বার দশেক ঘুরে এলেন। কিন্তু তাতেও যেন ‘ভয়ের দেওয়াল’ ভেঙে বেরোতে পারলেন না সবুজ-মেরুন ফুটবলাররা। সবার মুখেই এক কথা, “আমাকে ছেড়ে দিন।” ফুটবলারদের একটা অংশ চুপি-চুপি পালালেন ক্লাব তাঁবুর পিছনের গেট দিয়ে। আর ফাতাই-কাতসুমিরা তো সাফ বলে দিলেন, “নো কমেন্টস।” যদিও সুভাষের সাফাই, “বিশ্বাস করুন আমি কাউকে বারণ করিনি। ওরা কথা বলতে না চাইলে আমি কী করব বলুন?” বাগান টিডি যা-ই বলুন, কোচের অনুমতি সত্ত্বেও ফুটবলাররা যে আচরণ দেখালেন, তাতে রহস্য থেকেই যাচ্ছে!

আর মোহন টিডি নিজে? ঘণ্টাখানেক জমিয়ে আড্ডা মারলেন। কিন্তু ডার্বি বা তাঁর ফুটবলার নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠলেই সতর্ক সুভাষের ঠোঁটের কোণে সেই পরিচিত হাসিটা ফুটে উঠছে। আর কাটা রেকর্ডের মতো বাজছে একটাই কথা, “ফাঁদে পা দেব না। যা বলার শনিবার বলব।”

টিডি-র অদৃশ্য ছায়ায় ফুটবলাররা ঢাকা পড়ে গেলেও বাগানের আবহাওয়ায় অদ্ভুত একটা তরঙ্গ বইছে! যেখানে আত্মবিশ্বাস আছে। আছে জয় করার জেদ। ফুটবলারদের চোখেমুখেও সেটা স্পষ্ট। আর কাতসুমিদের সেই সংকল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে ব্যস্ত সুভাষ। মহমেডান ম্যাচে হারের প্রভাব যাতে ডার্বিতে এতটুকুও না পড়ে, তার জন্য টিমকে যতটা সম্ভব চনমনে রাখার চেষ্টা করছেন তিনি। হাসিঠাট্টা, হইহুল্লোড় কিছুই বাদ নেই। বাগান অধিনায়ক শিল্টন পাল বলছিলেন, “মহমেডান ম্যাচ এখন অতীত। আমরা এখন সামনের দিকে তাকাতে চাই। ভাবুন, মাত্র দু’দিন এসে ফাতাই-ও দিব্যি আমাদের নাম ধরে ডাকছে। তা হলেই বুঝুন, কী সুন্দর পরিবেশ আমাদের টিমে!” মাঠের বাইরের কোনও ঘটনার প্রভাবও যে মাঠের ভিতরে পড়বে না সেটাও বলে দিচ্ছেন শিল্টন। তাঁর যুক্তি, “মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের গুরুত্বই আলাদা। আমার ধারণা, ফুটবলাররা এই মুহূর্তে এই ম্যাচটা ছাড়া আর কিছু নিয়েই ভাবছে না।”

এগারোয় একসঙ্গে দু’জনের বেশি বিদেশি না খেলানোর চক্করে রবিবারের ডার্বিতে সম্ভবত বোয়া প্রথম দলে থাকছেন না। যদিও ডার্বি খেলতে দারুণ উৎসাহী বাগানের আইকন ফুটবলার। তাঁর কথায়, “মোহনবাগান শেষ যে ডার্বিটা জিতেছিল, সেই ম্যাচটা ইউ টিউবে দেখেছি। কাতসুমি অসাধারণ গোল করেছিল। ডার্বি খেলার সুযোগ পেলে চাইব যেন আমার গোলেই দল জেতে।” ক্লাব তাঁবুর ভিতরে কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও, পরে গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে বলবন্তও বলছিলেন, “এই ম্যাচের গুরুত্বই আলাদা। তবে কোচ বলেছেন, একদম চাপমুক্ত হয়ে খেলতে।”

subhash bhowmick derby mohun bagan football pritam saha match sports news online sports news puzzle game
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy