খেলতে যাওয়ার কয়েক দিন আগে দানিলো স্ত্রীর সঙ্গে এই ছবিটি পোস্ট করেছিলেন।
শেষ ফোনটা করেছিলেন স্ত্রীকে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে। হয়তো বুঝে গিয়েছিলেন আর ফিরতে পারবেন না প্রিয় মানুষগুলোর কাছে। তাই শেষবারের মতো আর একবার। আর তার পরই সব শেষ। সোমবার রাতে মেডেলিনের কাছে ভেঙে পড়া বিমানে চাপেকোয়েনস ফুটবল দলের অতিরিক্ত গোলকিপার ছিলেন তিনি। দানিলো পাদিলহা। ধ্বংস হয়ে যাওয়া প্লেন থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছিল দানিলোকে। হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই পাঁচ ভাগ্যবানের মধ্যে রাখা যায়নি তাঁর নাম। যাঁরা শেষ পর্যন্ত প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন।
৩১ বছরের দানিলো চিকিৎসা চলতে চলতেই স্ত্রীকে ফোন করে জানিয়েছিলেন তিনি বেঁচে রয়েছেন। কিন্তু কয়েক মিনিটের মধ্যেই ব্রাজিলে স্ত্রীর কাছে পৌঁছয় তাঁর মৃত্যুর খবর। সাময়িক স্বস্তি মুহূর্তেই উধাও হয়ে যায়। কয়েক দিন আগেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে স্ত্রীর সঙ্গে ছবি পোস্ট করে লিখেছিলেন ‘মাই লাভ’। প্লেন ছাড়ার আগেও সতীর্থ অ্যালান রাসেলের সঙ্গে প্লেনের ভিতরের ছবি পোস্ট করেছিলেন দানিলো। যেখানে লিখেছিলেন, ‘‘বেশি দেরি নেই, আমরা আসছি কলম্বিয়া।’’ কলম্বিয়া পৌঁছনো তো হলই না। ফেরা হল না নিজের বাড়িতেও। সারা জীবনের মতো হারিয়ে গেলেন দানিলোরা। রেখে গেলেন শুধু স্মৃতি।
বেঁচে গিয়েছেন দানিলোর পাশে বসা অ্যালান রাসেল (ডানদিকে)। প্লেনে উঠে এই ছবি পোস্ট করেছিলেন দানিলো।
অন্য দিকে, ফুটবল জীবনের ৩০০তম ম্যাচটি আর খেলা হল না নিভালদোর। চাপেকোয়েনসের আর এক গোলকিপার সতীর্থদের মৃত্যুর এই যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে অবসর নিয়ে নিলেন। ৪২ বছরের নিভালদোর দলের সঙ্গে যাওয়ার কথা থাকলেও তিনি যাননি। কারণ, ৩০০তম ম্যাচটি তিনি খেলতে চেয়েছিলেন ঘরের সমর্থকদের সামনে। যে কারণে বুধবার কোপা সুদামেরিকানার ফাইনালের প্রথম লেগে খেলতে যাননি তিনি। ফিরতি লেগে ঘরের মাঠে নামার কথা ছিল তাঁর। তিনি বলেন, ‘‘আমার যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তা বাতিল হয়। জীবনে সব ঘটনার পিছনেই কারণ থাকে। আমি যাইনি কারণ জীবনের ৩০০তম ম্যাচটি ঘরের মাঠে খেলে অবসর নেব ভেবেছিলাম।’’ বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিভালদো। তাঁর মতোই দলের সঙ্গে না গিয়ে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন, আলেজান্দ্রো মার্তিনুসিও, নেনেম ডেমারসন, মার্সেলো বোয়েক, আদ্রেই, হেওরান, মোয়েসেস ও রাফায়েল লিমা।
অবসর ঘোষণা করে কান্নায় ভেঙে পড়লেন নিভালদো।
আরও পড়ুন- খেলা-জগৎকে নাড়িয়ে দেওয়া ভয়াবহ কয়েকটি বিমান দুর্ঘটনা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy