অচেনা বিরাট। মারছেন রিভার্স সুইপও।
ব্যাটসম্যান বিরাট হিট
একজন ক্যাপ্টেন হিসেবে ওর আর কী করার আছে? দু’টো ম্যাচে ৭৫-এর উপর রান করে গেল বিরাট! অবিশ্বাস্য ফর্মে আছে শুধু নয়, রবিবার দেখলাম কপিবুক ব্যাটিং ছেড়ে ইম্প্রোভাইজেশনেও যাচ্ছে। রিভার্স সুইপ মারছে! বিরাট কোহালিকে কবে এ সব মারতে দেখা গিয়েছে? এ দিন মাত্র ৪৮ বলে ৭৯ করে গেল। সবচেয়ে বড় কথা, ক্রিস গেইল যে ম্যাচের পর ম্যাচে শূন্য রানে আউট হয়ে যাচ্ছে সেটা তো বুঝতেই দিচ্ছে না বিরাট আর ডে’ভিলিয়ার্স। ক্যাপ্টেন বিরাট আজ হেরে যেতে পারে। কিন্তু ব্যাটসম্যান বিরাট জিতেছে। যা ব্যাট করেছে, কোয়ালিটির দিক থেকে কুইন্টন ডি’ককের ইনিংসের চেয়েও ভাল।
টাইমিংয়ে গন্ডগোল
আউট ব্যাটসম্যান হতেই পারে। কিন্তু আরসিবি ওদের সেরা তিনটে ব্যাটসম্যানকে হারাল প্রবল প্রয়োজনের মুহূর্তে। ডে’ভিলিয়ার্স আউট হল যখন, আরসিবির সম্ভাব্য স্কোর দু’শো নয়, দু’শো পঁচিশ-তিরিশ দেখাচ্ছে। আবার শেন ওয়াটসন-বিরাট মিলে ৬৩ রানের পার্টরানশিপ টিমকে দেওয়ার পর আচমকা ওয়াটসন আউট। ছিল শুধু বিরাট। তা, দু’ওভার বাদে ও-ও চলে গেল। আমি বলতে চাইছি, তিন জনই ঠিক ওই সময় আউট হয়েছে যখন মনে হয়েছে আরসিবি দু’শো টপকে যাবে। যে আরসিবি ইনিংসের মাঝামাঝি পর্যন্ত দশ-এগারো করে রান রেট রেখে গিয়েছে, তারাই কি না শেষ চার ওভারে তুলল২৭! অন্তত তিরিশ রান কম হয়েছে, যা হওয়া উচিত ছিল। বিশেষ করে শুরুর ওই ব্যাটিংয়ের পর।
কেন মিলনে নয়
মিচেল স্টার্ক না থাকায় আরসিবি বোলিং এমনিতেই এ বার অনেক দুর্বল হয়ে গিয়েছে। তবু ওদের একটা অ্যাডাম মিলনে আছে যে কি না ঘণ্টায় দেড়শো কিলোমিটারের উপর তুলতে পারে। সেখানে ডেভিড উইজাকে খেলাল বিরাট। ও হয়তো ভেবেছিল, ডেভিডের হাতে বৈচিত্র আছে। চিন্নাস্বামী উইকেটে কাজে আসবে। কিন্তু ব্যাপারটা হয়ে গেল উল্টো। ওই ডেভিডের এক ওভার থেকে কুড়ি তুলে খেলা পাল্টে দিল ডি’কক। দিল্লি শেষ দিকে শামি-মরিসকে দিয়ে করিয়েছে। যারা কি না ঘণ্টায় অন্তত একশো পঁয়তাল্লিশ কিলোমিটারে ফেলতে পারে। আরসিবির সেই ইমপ্যাক্ট বোলার এ দিন ছিল না। তা ছাড়া খুব খারাপ বোলিংও হয়েছে। ফাইন লেগ না রেখে ডি’ককে লেগস্টাম্পের উপর বাউন্সার দিচ্ছে—ভাবা যায়!
ডি’ককের ওষুধ নেই
একজন স্লো বোলার থাকলে বোধহয় সুবিধে হত বিরাটদের। পারভেজ রসুল আর যদুবেন্দ্র চহ্বলের অফস্পিন-লেগস্পিন জুটি দিয়ে বিরাট চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ওরা সেই দরের স্পিনার নয় যারা ডি’ককের মতো ব্যাটসম্যানকে ভোগাতে পারবে। ৪৮ বলে সেঞ্চুরি করল ছেলেটা! গোটা ইনিংসে ওর মিসটাইমড শট দেখলাম মাত্র একটা, একদম শেষের দিকে। অভাবনীয় ব্যাটিং।
একটা ফাটকা নয় কেন
ব্যাটিংয়ের ইম্প্রোভাইজেশন বোধহয় একটু ক্যাপ্টেন্সিতেও দেখাতে পারত বিরাট। বিশেষ করে যখন ডি’কককে থামানো যাচ্ছে না তখন একটু ছকের বাইরে যাওয়া তো যেতেই পারত। যেমন ক্রিস গেইলকে একটা ওভার দেওয়া। অফস্পিনার গেইল কিন্তু বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দু’টো উইকেট আচমকা তুলে ম্যাচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছিল। গেইল এলে ডি’কককে তুলে নিত বলছি না। কিন্তু চেনা ছকের বাইরে গেলে মাঝেমধ্যে সাফল্য পাওয়া যায়, সেটাও তো ঠিক। বিরাট নিজেও তো একটা ওভার করে গেলে পারত! তবু বলব, ক্যাপ্টেন বিরাটের বিশেষ কিছু করার ছিল না। বোলিং এতটা খারাপ হলে কোনও ক্যাপ্টেনই কিছু করতে পারবে না।
মার্কশিটে বিরাট ৮/১০।
''এ রকম হার হজম করা কঠিন। আরও হাড্ডাহাড্ডি হতে পারত শেষটা। কুইন্টন দুর্দান্ত ব্যাট করল। ওয়াটসন আউট হওয়ার পর আট বল মতো আমি স্ট্রাইক পাইনি। শামি আর মরিস ওদের পরিকল্পনা দারুণ ভাবে কাজে লাগাল। ভেবেছিলাম পরের দিকে ব্যাটে বল ঠিক মতো আসবে না। কিন্তু সেটা হয়নি। বোলারদের মানসিকতাটাই আসল। আমাদের বিশ্বাস করতে হবে প্রত্যেক বলে ব্যাটসম্যানকে আউট করা সম্ভব। কিন্তু সেটা আমরা দেখাতে পারিনি।''
বিরাট কোহালি
আরও পড়ুন:
আইপিএলের সময়সূচি
আইপিএলের পয়েন্ট টেবল
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy