Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

যোগদানের পরেই ডাক্তারকে বদলি

হাসপাতালে প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক নেই। স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশে যদি বা একজন চিকিৎসক মিলল। কিন্তু তিনি যোগ দেওয়ার পরেই জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাঁকে অন্যত্র বদলির নির্দেশ দিলেন। মানবাজার গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক চিকিৎসককে বদলির ঘটনাকে ঘিরে ক্ষুদ্ধ এলাকার রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন তথা বিধায়ক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরাও। চিকিৎসকদের একাংশের মতে, কাজে যোগ দেওয়ার দু’দিন পরেই সেই চিকিৎসককে অন্যত্র বদলির নির্দেশ নিয়মবিরুদ্ধ এবং নজির বিহীন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মানবাজার শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৫৮
Share: Save:

হাসপাতালে প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক নেই। স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশে যদি বা একজন চিকিৎসক মিলল। কিন্তু তিনি যোগ দেওয়ার পরেই জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাঁকে অন্যত্র বদলির নির্দেশ দিলেন।

মানবাজার গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক চিকিৎসককে বদলির ঘটনাকে ঘিরে ক্ষুদ্ধ এলাকার রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন তথা বিধায়ক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরাও। চিকিৎসকদের একাংশের মতে, কাজে যোগ দেওয়ার দু’দিন পরেই সেই চিকিৎসককে অন্যত্র বদলির নির্দেশ নিয়মবিরুদ্ধ এবং নজির বিহীন।

মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালে বিএমওএইচ-সহ অনুমোদিত চিকিৎসকের সংখ্যা ৯ জন। কিন্তু বর্তমানে বিএমওএইচ-সহ মাত্র ৪ জন চিকিৎসক রয়েছেন। মানবাজারের বিধায়ক তথা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন সন্ধ্যারানি টুডু বলেন, “এই হাসপাতালে রোগীর চাপ দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু চিকিৎসক উল্টে কমছে। স্বাস্থ্যভবন থেকে সম্প্রতি দু’জন চিকিৎসককে এই হাসপাতালের জন্য পাঠাচ্ছে বলে জানতে পারি। তার মধ্যে এক স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ২৫ নভেম্বর মানবাজারে বর্হিবিভাগে রোগী দেখেন। ২৮ নভেম্বর ওই চিকিৎসককে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রঘুনাথপুর মহকুমা হাসপাতালে বদলির নির্দেশ দেন। এমন নজির আর নেই।” তিনি জানান, জেলা স্বাস্থ্যকর্তারা এই নির্দেশের কারণ স্পষ্ট করে তাঁকে জানাতে পারেন নি। ওই বদলির নির্দেশ বাতিল না করা হলে তিনি রাজ্য স্বাস্থ্যকর্তাকে ঘটনাটি জানাবেন।

বস্তুত পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলের একটি বড় অংশের মানুষ এই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। মানবাজার ছাড়াও বোরো, বান্দোয়ান, বরাবাজারের একাংশ এবং বাঁকুড়ার হিড়বাঁধ থানা এলাকা ও লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের গ্রাম থেকে রোগীরা এখানে আসেন। এত কম সংখ্যক চিকিৎসক থাকায় পরিষেবায় খামতি থেকে যায়। বিধায়কের ক্ষোভ, “আমরা বহুবার চিকিৎসক চেয়েও পাইনি।”

মানবাজারের বিএমওএইচ অরুণাভ ঘোষও স্বীকার করেছেন, “এই হাসপাতালে রোগীর চাপ বেশি। সে তুলনায় চিকিৎসক নেই। বর্হিবিভাগে গড়ে দৈনিক সংখ্যা ৭০০ জন। আমরা কোনওক্রমে সামাল দিই। সম্প্রতি একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পেয়েছিলাম। কিন্তু তাঁকে অন্যত্র বদলির নির্দেশ দেওয়ায় আমরা হতাশ।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মানবেন্দ্র ঘোষ বলেন, “মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালের চাপের কথা জানি। ওই চিকিৎসককে শল্য চিকিৎসায় আরও অভিজ্ঞতার জন্য মহকুমা হাসপাতালে পাঠাচ্ছিলাম। এখন মানবাজারের মানুষের আপত্তির কথা শুনে সিদ্ধান্ত বাতিল করা যায় কি না ভাবছি।”

স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ অবশ্য না আঁচিয়ে ভরসা করতে পারছেন না। তাঁরা জানাচ্ছেন, আগেও মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসক পাঠানো হলেও তাঁকে জেলার অন্যত্র যোগদান করানোর নজির রয়েছে। ওই চিকিৎসকদের পরে আর ফেরানো হয়নি। জেলার এক প্রবীণ চিকিৎসক বলেন, “কোন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রয়োজন বেশি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের চিকিৎসক বদলের আগে তা বিবেচনা করা উচিত।

যদিও ওই স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ শুভঙ্কর দাস বলেন, “মানবাজারে আমার সাথে কেউ খারাপ ব্যবহার করেন নি। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক চেয়েছেন বলেই আমি রঘুনাথপুরে যোগ দেব।” বিধায়ক অবশ্য ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করার দাবির গোঁ ছাড়বেন না বলে জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

doctor manbazar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE