হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগিণী অন্নপূর্ণা মাইতির মৃত্যু কার্যত চোখ খুলে দিল হাওড়া পুরসভার। হাওড়ার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ডেঙ্গির প্রকোপ যে ক্রমাগত বাড়ছে তা প্রথমে মানতে চাননি হাওড়ার পুরকর্তারা। সোমবার মধ্য হাওড়ার নেতাজি সুভাষ রোডের এক বেসরকারি হাসপাতালে ওই মহিলার মৃত্যুর পরে শহরে ডেঙ্গির প্রকোপ রুখতে তড়িঘড়ি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডাকলেন মেয়র। আজ বুধবার, ওই বৈঠক হওয়ার কথা। বৈঠকে ডাকা হয়েছে জেলা শাসক, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা, পুলিশ কমিশনার-সহ পুরসভার পদস্থ কর্তাদের।
হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক মাস ধরে পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে অজানা জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও পুরসভার পক্ষ থেকে প্রথম দিকে এ নিয়ে কোনও হেলদোল দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। এর মধ্যে ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের সর্বমঙ্গলা পল্লির দশ জন জ্বরে আক্রান্তের মধ্যে সাত জনের রক্তে ‘ম্যাক আ্যলাইজা’ পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এর পরেও ৮, ২৯, ৩৪ ও ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে অজানা জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এর মধ্যে ৩৪ ওয়ার্ডে কয়েক জনের রক্তে ডেঙ্গু ধরা পড়ে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। তাঁরা বর্তমানে হাওড়া ও কলকাতার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এরই মধ্যে ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে সোমবার অন্নপূর্ণাদেবীর মৃত্যু হয়।
এ দিন হাওড়া পুরসভার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, “ওই মহিলার কি রোগে মৃত্যু হয়েছে জানা যায়নি। তবে হাওড়ার বিভিন্ন জায়গা থেকে ডেঙ্গির খবর আসছে। এর মোকাবিলা করতে রোগের উৎস খুঁজে বের করে ধ্বংস করতে হবে। এ জন্য রাজ্য সরকার তথা জেলাপ্রশাসন এক সঙ্গে কাজ করতে সবাইকে নিয়ে বৈঠকে বসছি।”
মেয়র জানান, শহরে প্রচুর বেআইনী বাড়ি তৈরির কাজ মাঝ পথে থমকে গিয়েছে। বহু কারখানা দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ। সেই সব জায়গায় জমা জলে ডেঙ্গির মশা হচ্ছে কি না তা দেখা দরকার। কিন্তু পুরসভার সেই পরিকাঠামো নেই। যদিও পুরসভা এত দিন ডেঙ্গি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মশা তাড়ানোর ধোঁয়া ও ব্লিচিং ছাড়ানোর কাজ নিয়মিত করেছে। ডেঙ্গির জন্য রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজন পড়লে আক্রান্তদের হাওড়া জেলা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
হাওড়ায় যে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে তা মেনে নিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা দেবাশিস রায় বলেন, “ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়লেও তা খুব বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছয়নি। গত তিন মাসে শুধু হাওড়া হাসপাতালে এই ধরণের ৭০ জনের রক্ত পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১১ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবানু মিলেছে। তবে হাওড়া ও কলকাতার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে রোগী ভর্তি হচ্ছে বলে শোনা গেলেও তার সঠিক পরিসংখ্যান আমাদের হাতে আসেনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy